আজকাল আমরা সবাই হেয়ার রিবন্ডিং-এর সাথে কমবেশি পরিচিত। চুলকে একেবারে সুন্দর ও সোজা দেখানোর জন্য পার্লারে বা ঘরে বসে অনেকেই রিবন্ডিং করে থাকেন। এখানে কেমিক্যাল ব্যবহার করে চুলকে কৃত্রিম পদ্ধতিতে সোজা করা হয়। কিন্তু এসব ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহারের কারণে আপনার চুলের গঠনই পরিবর্তন হয়ে যায় বলে এর সাইড ইফেক্ট হিসেবে চুল পড়া, চুলের আগা ফাটা, চুল নিষ্প্রাণ হয়ে যাওয়া সহ এমন অসংখ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রাকৃতিক উপায়ে সোজা চুল পাওয়া তো দূরের কথা!
কোন দাওয়াত বা প্রোগ্রাম থাকলে আপনি চুলে হিট প্রোটেক্টিং স্প্রে লাগিয়ে চুল আয়রন করে নিতে পারেন। কিন্তু সেটা তো প্রতিদিন করা যাবে না। আয়রনের তাপও আপনার চুলের জন্য ক্ষতিকর।
‘তাহলে করবোটা কি? চুল নষ্ট হওয়ার ভয়ে কি সোজা সিল্কি চুল পাওয়ার আশা ছেড়েই দিবো?’, এটাই ভাবছেন তো? তা মোটেই না। প্রাকৃতিক উপাদান নিয়মিত ব্যবহার করে কিন্তু আপনি ধীরে ধীরে চুলের কোন ক্ষতি ছাড়াই চুলের পুষ্টি জুগিয়ে চুল সোজা করতে পারেন। যেহেতু এ পদ্ধতিতে কোন কেমিক্যাল ব্যবহার করা হচ্ছে না সেহেতু এটার বেস্ট রেজাল্ট পেতে আপনাকে ধৈর্য্য ধরে পদ্ধতিটি নিয়মিত প্রয়োগ করতে হবে। চলুন তাহলে প্রাকৃতিক উপায়ে সোজা চুল পাওয়ার পদ্ধতিটি দেখে নেওয়া যাক।
প্রাকৃতিক উপায়ে সোজা চুল পেতে প্রয়োজন যে উপাদানগুলো
(১) ২ কাপ কোড়ানো নারিকেল।
(২) ৬ টেবিল চামচ ফ্রেশ অ্যালোভেরা জেল ।
(৩) ৬০ এম.এল. পানি।
(৪) ২ টেবিল চামচ লেবুর রস।
(৫) ২ টেবিল চামচ কর্ণফ্লাওয়ার।
(৬) ১ টেবিল চামচ এক্সট্রা ভার্জিন ক্যাস্টর অয়েল।
কীভাবে ব্যবহার করবেন?
১. ব্লেন্ডারে ২ কাপ কোড়ানো নারিকেল, ৬ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল এবং ৬০ এম.এল. পানি দিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। বেশ ঘন একটা ক্রিমি স্ট্রাকচারের পেস্ট তৈরি হবে। একটি পাতলা কাপড়ে পেস্টটা নিয়ে কাপড়টা বেঁধে একটি পাত্রের উপর রেখে নিংড়ে নিন। নারিকেলের দুধ পেয়ে যাবেন।
২. একটি পাত্রে ২ টেবিল চামচ কর্ণফ্লাওয়ার, ২ টেবিল চামচ লেবুর রস আর ১ টেবিল চামচ ক্যাস্টর অয়েল ভালো করে মিক্স করে নিন। এবার চুলায় একটি ননস্টিক প্যান/হাড়ি দিয়ে চুলার আঁচ একদম কমিয়ে তাতে নারিকেলের দুধ আর পরে বানানো কর্ণফ্লাওয়ার, লেবুর রস আর ক্যাস্টর অয়েলের মিশ্রণটি ঢেলে নিয়ে দ্রুত হাতে নাড়তে থাকুন। বেশ ক্রিমি পেস্টের মতো হয়ে এলে চুলা বন্ধ করে মিশ্রণটি আধা ঘণ্টা ঠান্ডা হওয়ার জন্য রেখে দিন।
৩. পুরো মাথার চুলকে কয়েক ভাগে ভাগ করে আস্তে আস্তে পুরো মাথায় মিশ্রণটি লাগিয়ে নিন। চুলের গোঁড়া এবং আগা পর্যন্ত সব জায়গাতেই আস্তে আস্তে লাগিয়ে নিন। এবার এক-দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। (মিশ্রণটি যত দীর্ঘ সময় রাখতে পারবেন ফল তত ভালো পাবেন)। এ সময় গায়ে একটি টাওয়েল বা পুরানো টিশার্ট দিয়ে রাখুন, চুল বাঁধবেন না, চিরুনি দিয়ে সোজা অবস্থায় আঁচড়ে নিন এবং ঐ অবস্থায়ই রাখুন।
৪. শেষ ধাপে আপনার রেগ্যুলার ব্যবহারের শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন এবং ফ্যানের বাতাসে চুল শুকিয়ে আঁচড়ে নিন।
এবার দেখুন তো, আপনার কোঁকড়ানো বা ঢেউ খেলানো অবাধ্য চুলগুলো কতটা সুন্দর, সফট, মসৃণ, প্রাণবন্ত আর ন্যাচারালি সোজা দেখাচ্ছে। এই প্যাকটি মাথার স্ক্যাল্পে লাগানোর কারণে এটি আপনার চুলকে গোঁড়া থেকেও পুষ্টি জোগায় এবং সেই সাথে সোজা করে চুলের কোনরকম ক্ষতি করা ছাড়াই।
ভালো ফলাফল পেতে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার ব্যবহার করুন। এটি আপনার ডিপ কন্ডিশনিং এর কাজ ও করবে। Stay Beautiful, Stay Gorgeous.
ছবি – Shutterstock