আজকে এমন একটি ফাউন্ডেশন এর কথা বলব যেটা আমাদের দেশের আবহাওয়ার সাথে ভালোভাবে মানিয়ে যায় এবং সব ত্বকের জন্য উপযুক্ত। রেভলন কালার স্টে Whipped ফাউন্ডেশন টি হচ্ছে ফাউন্ডেশন এবং মউস ক্রিম দুটোরই মিশ্রণে তৈরি। কেননা এটি দেখতে লিকুইড ফাউন্ডেশন এর মত হলেও কিন্তু এটার ব্যবহার মউস এর মত। বলতে গেলে এটি ফাউন্ডেশন এবং মউস মিশ্রণে একটি হাইব্রিড প্রোডাক্ট। আমাদের দেশে মেকাপ খুব চট জলদি ৪-৫ ঘণ্টার মধ্যেই কালো (অক্সিডাইয) হয়ে যায়, এতে করে মেয়েদের ফাউন্ডেশন বাছাই এর ভোগান্তির শেষ থাকে না। তাদের জন্যই বিশেষ করে এই ফাউন্ডেসন টি নিয়ে লিখা। এই ফাউন্ডেসন টি অক্সিডাইয একদম হয় না বললেই চলে। খুবই হালকা এবং প্রতিদিন ব্যবহারের জন্য খুব ই উপযোগী একটি ফাউন্ডেশন বিশেষ করে যারা অনেকসময় ধরে বাইরে থাকেন, যেমন স্টুডেন্ট দের জন্য।
Whipped ক্রিম জিনিসটি একদমই নতুন কসমেটিকস জগতে। পরিমাণে সাধারণ যেকোনো ফাউন্ডেশন অথবা মউস থেকে অনেক কম লাগে। সব চেয়ে মজার ব্যাপার হল এটি হালকা করে নিয়ে হাতের আঙ্গুল দিয়ে খুব সুন্দর করে মুখে ব্লেন্ড করা যায়, কোনো ব্রাশের প্রয়োজন পড়ে না রেগুলার ব্যবহারের জন্য। আর পার্টি মেকাপ অথবা ভালো কভারেজ এর জন্য যেকোনো বাফিং ব্রাশ, স্টিপেল ব্রাশ অথবা বিউটি ব্লেন্ডার অনেক কার্যকারী।
[picture]
ফাউন্ডেশন দেবার নিয়মঃ
যেহেতু আগেই বলেছি এটি খুব হালকা করে দিতে হয়, তাই বেশি লাগালে ঠিক মত ব্লেন্ডিং হবে না এবং কেকি লাগবে। একদম হালকা করে নিয়ে পুরো মুখে লাগাতে হবে , আর মুখের যেসব জায়গায় দাগ থাকবে সেসব জায়গায় শুধু আরেকবার ফাউন্ডেশন টি লাগিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করতে হবে দাগ গুলো সুন্দর করে ঢাকার জন্য। এটি মিডিয়াম থেকে ফুল কভারেজ দেয় তাই এই ফাউন্ডেশন এর সব থেকে বড় উপকারিতা হল প্রতিদিন এর ব্যবহার অথবা পার্টি লুক যেকোনো কিছুই এক ফাউন্ডেশন দিয়েই কাজ সেরে নিতে পারবেন। আর এটি আকারে ছোট তাই রেগুলার ব্যাগে নিয়েও ঘোরা যায়। এই ফাউন্ডেশনটি দেবার আধা ঘণ্টা পর মুখে খুব সুন্দর করে বসে যায় এবং দেখতে ফ্লওলেস লাগে। তাই বাইরে যাবার আধা ঘণ্টা আগে এটি লাগানো বেশি ভালো। Whipped ক্রিম ফাউন্ডেশনটি তে কোনও প্রকার কন্সিলার অথবা ফেস পাউডার ছাড়াই একটি সুন্দর ন্যাচারাল লুক আসে এবং এই ন্যাচারাল ভাবটি সারাদিন ধরে বজায় থাকে কোনও ধরনের অক্সিডাইয, ব্রেক আউট ছাড়া। চাইলে সেটিং পাওডার দিয়ে মেকাপটি সেট করে নিতে পারেন।
উপাদান সমুহঃ
প্রোডাক্ট এর গায়ে প্রথম উপাদান টি হচ্ছে Dimethicone, যেটা কিনা প্রাইমার এর অন্যতম প্রধান উপাদান। তাই বুঝাই যাচ্ছে এই ফাউন্ডেশন লাগালে আলাদা করে প্রাইমার লাগাতে হবে না। তাছাড়া এই উপাদানটির জন্য মুখের বড় লোমগ্রন্থিও সুন্দর ভাবে ঢেকে যাবে।যেহেতু এটার তিন নাম্বার উপদান টি হচ্ছে পানি, তো এই ফাউন্ডেশনটার টেক্সচার লিকুইড (যেটা কিনা আমি আগেই বলেছি)। এই প্রোডাক্ট এর মধ্যে কোনও শিমার অথবা গ্লিটার উপাদান নেই যাতে করে রোদে গেলে ত্বকটা একটু শাইনি লাগবে। যারা ত্বকের মধ্যে একটা ন্যাচারাল লুক চান তাদের জন্য বেস্ট ফাউন্ডেসন বটে।
কোন ত্বকে কতক্ষণ স্থায়ী থাকবে ফাউন্ডেশনটি ?
যদি আপনার ত্বক শুষ্ক অথবা সাধারণ ত্বক হয় তাহলে এই ফাউন্ডেশন দিয়ে আপনি ২৪ ঘণ্টা মেকাপ বজায় রাখতে পারবেন। আর যদি আপনার স্কিন অনেক বেশি তৈলাক্ত হয় তাহলে এই ফাউন্ডেশন দিয়ে নির্দ্বিধায় ৬-৮ ঘণ্টা কাটিয়ে দিতে পারবেন।
অরিজিনাল রেভলন কালারস্টে লিকুইড ফাউন্ডেশন এর সাথে রেভলন কালারস্টে Whipped ক্রিম এর পার্থক্যঃ
আমাদের দেশে অরিজিনাল রেভলন কালারস্টে লিকুইড ফাউন্ডেশনটি অনেক বেশি জনপ্রিয় মেয়েদের কাছে। কারণ অনেকটা বাজেটের মধ্যে খুব ভালো মানের এবং ভালো কভারেজ এর ফাউন্ডেশন পাচ্ছি। প্রশ্ন আসতেই পারে কেন আমরা Whipped ভার্সনটা কিনব? রেভলন কালারস্টে Whipped ক্রিম এর কভারেজ নরমাল লিকুইড এর থেকে অনেক বেশি ভালো। তাছাড়া এটি মুখে দিলে কেকি অথবা ভারী লাগে না। নরমাল ভার্সনটা কিছুটা ভারী রেভলন কালারস্টে Whipped ক্রিম এর থেকে। যাদের কাছে লিকুইড ফাউন্ডেশন মুখে ভারী লাগে, তাদের জন্য বেস্ট প্রোডাক্ট হল রেভলন কালারস্টে whipped ভার্সনটা। তাছাড়া নরমাল ভার্সন এর মত এটার মধ্যে কোনও কড়া গন্ধ নেই।
এই ফাউন্ডেশন তাদের জন্য যারা বাজেটের মধ্যে ভালো বিল্ডেবেল কভারেজ এর ফাউন্ডেশন চাচ্ছেন। এই ফাউন্ডেশনটি এখন আমাদের দেশেই পাওয়া যায়। যমুনা ফিউচার পার্কে খোলা নতুন কস্মেটিক্স স্টোর Sapphire এ পাচ্ছেন এই ফাউন্ডেশনটি । তাছাড়া আরও পাবেন বিভিন্ন ব্র্যান্ড এর ইউ এস এ থেকে আমদানি করা কস্মেটিক্স।
লিখেছেনঃ তাপসী মুন
ছবিঃ হেলদিলিভহেলদিওয়ার্ল্ড