আরগান অয়েল, এই নামটি এখন বিউটি ট্রেন্ডে খুবই জনপ্রিয়। আমরা যারা সেলফ কেয়ার করতে পছন্দ করি, তাদের জন্য এই অয়েলটি কিন্তু মাস্ট হ্যাভ! বিশেষ করে যাদের ত্বক ও চুল একটু বেশি ড্রাই, ড্যামেজড আর রাফ; তাদের জন্য এই ছোট্ট প্রোডাক্টটি কিন্তু ব্লেসিং। অনেকেই একটু কনফিউজড থাকেন যে কোথায় পাওয়া যাবে পিওর আরগান অয়েল। আজ আমি শেয়ার করবো ১০০% পিওর ও ন্যাচারাল মরোক্কান আরগান অয়েল এর রিভিউ, যেটা আমার খুবই পছন্দের একটি প্রোডাক্ট। চলুন জেনে নেই তাহলে।
আরগান অয়েল কেন এত জনপ্রিয়?
যারা অলরেডি ব্যবহার করেছেন, তারা তো জানেনই এই ছোট্ট বোতলে থাকা তেলের কত গুণাগুণ। আর যারা এখনও ব্যবহার করেননি, তাদের জন্য জানিয়ে দিচ্ছি এই তেলের উপকারিতাগুলো।
ত্বকের যত্নে-
- স্কিনকে ডিপলি ময়েশ্চারাইজ করে
- অ্যান্টি এজিংয়ে ভূমিকা রাখে
- অয়েলি স্কিনের এক্সেস সেবাম প্রোডাকশন কন্ট্রোল করে
- একনে দূর করে
চুলের যত্নে-
- চুল ও স্ক্যাল্পকে ময়েশ্চারাইজড রাখে
- হেয়ার ব্রেকেজ বা চুলের আগা ফাটা প্রিভেন্ট করে
- চুল পড়া কমায়
- হেয়ার গ্রোথ বাড়িয়ে চুলকে করে ঘন ও মজবুত
পিওর ও ন্যাচারাল মরোক্কান আরগান অয়েল
আরগান অয়েলের এত এত উপকারিতা, তাই তো একে বলে ‘লিকুইড গোল্ড’। আমি বরাবরই স্কিন ও হেয়ার কেয়ারে অর্গানিক প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে পছন্দ করি। আমি বেশ কয়েক মাস ধরে ব্যবহার করছি Skin Cafe Argan Oil (100% Pure and Natural)। আর সেটারই রিভিউ শেয়ার করবো। চলুন জেনে নেই বিস্তারিত।
প্রথমেই ব্র্যান্ড নিয়ে কিছু কথা
স্কিন ক্যাফে বাংলাদেশি প্রিমিয়াম বিউটি ব্র্যান্ড। ১০০% ন্যাচারাল ও পিওর ইনগ্রেডিয়েন্ট ব্যবহৃত হয় বলে বেস্ট কোয়ালিটি ইনশিওর করে ব্র্যান্ডটি। আসলে বাংলাদেশের এই ধরনের ব্র্যান্ড নিয়ে আমার তো রীতিমতো গর্ব হয়। দেশের বাইরেও কিন্তু এই ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট পাওয়া যায়। আমি এর আগে এই ব্র্যান্ডের অন্যান্য অয়েল ও ফেইস মিস্ট ট্রাই করেছি। আমার বেশ ভালো লেগেছে। তাই আমার এক কলিগের কাছে পজেটিভ রিভিউ শুনে এই ব্র্যান্ডের আরগান অয়েল ট্রাই করলাম।
প্যাকেজিং ও টেক্সচার
এখন Skin Cafe Argan Oil ৩০ মি.লি. ও ৫০ মি.লি. এর প্যাকেজিংয়ে পাওয়া যাচ্ছে। কালচে খয়েরি রঙের বোতলে ড্রপারওয়ালা ঢাকনার প্যাকেজিংয়ে আসে তেলটি। ড্রপারের সাহায্যে ফোঁটায় ফোঁটায় খুব সহজে তেল বের করা যায় এবং ড্রপার থাকে বলে প্রোডাক্ট নষ্ট বা অপচয় হয় না। তেলটা বেশ ঘন, যেকোনো ক্যারিয়ার অয়েল বা প্রোডাক্টের সাথে মিক্স করে অ্যাপ্লাই করা যায়। কালার দেখেই বোঝা যায় যে এই অয়েল একদম খাঁটি।
কেন সাজেস্ট করছি?
এত ব্র্যান্ড থাকতে এই ব্র্যান্ডের আরগান অয়েল কেন সাজেস্ট করলাম, সেটা জানতে চান নিশ্চয়ই। চলুন জেনে নেই-
১) কোনো প্রিজারভেটিভ দেওয়া নেই। অন্য কোনো অয়েলের মিক্সচারও নেই, একদম খাঁটি।
২) মরোক্কান আরগান নাটস থেকে সরাসরি তেল নিষ্কাশন করা হয়, তাই গুণাগুণ থাকে অক্ষুণ্ণ।
৩) ত্বক ও চুলের ধরন যেমনই হোক না কেন, সেলফ কেয়ারে আপনি এই তেল ব্যবহার করতে পারেন নিশ্চিন্তে।
৪) দু’টি ডিফারেন্ট সাইজে অ্যাভেইলেবল, ট্রায়াল দিতে চাইলে ৩০ মি.লি. প্যাকেজিংয়েরটা কিনে দেখতে পারেন।
দরদাম
যারা মনে করছেন যে আরগান অয়েল বেশ এক্সপেনসিভ, তাদের জন্য কিছু কথা বলছি। ডেইলি ইউজের জন্য আপনার কিন্তু ৪-৫ ফোঁটা আরগান অয়েলই যথেষ্ট! এতেই আপনার স্কিন ও হেয়ার কেয়ার কমপ্লিট হয়ে যাবে। এর ইনগ্রেডিয়েন্ট হচ্ছে ১০০% মরোক্কান আরগান অয়েল। আমরা তো স্কিন ও হেয়ার কেয়ারের জন্য বেস্ট জিনিসটাই বেছে নিতে চাই, তাই তো? কার্যকারিতা অনুযায়ী দামটা আমার কাছে ঠিকই মনে হয়েছে।
কীভাবে ব্যবহার করি?
চলুন জেনে নেই এই মাল্টি পারপাস অয়েলটি কতভাবে আপনি ইউজ করতে পারবেন-
ডিপ ময়েশ্চারাইজার হিসেবে
নাইট ক্রিম বা রেগুলার ময়েশ্চারাইজারের সাথে দু’ফোঁটা আরগান অয়েল মিক্স করে ফেইসে অ্যাপ্লাই করুন। সারারাত এটি আপনার স্কিনকে নারিশড রাখবে। বিশেষ করে যাদের স্কিন ড্রাই বা নরমাল, তাদের জন্য এই ছোট্ট হ্যাকসটি দারুণ কাজ করবে।
হেয়ার সিরাম হিসেবে
হাতের কাছে হেয়ার সিরাম নেই? চিন্তা নেই, হাতের তালুতে ২/৩ ফোঁটা আরগান অয়েল নিয়ে পুরো চুলে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে নিন। আর দেখুন ম্যাজিক! দিনভর চুল থাকবে সিল্কি ও শাইনি। যাদের চুল ফ্রিজি ও রাফ, তারা রেগুলার ইউজ করতে পারেন এই তেল।
হাইড্রেটিং টোনার হিসেবে
শসার রসের সাথে ২ ফোঁটা আরগান অয়েল ভালোভাবে মিশিয়ে কটন বলের সাহায্যে পুরো ফেইসে অ্যাপ্লাই করে নিন। ডাল ও ডিহাইড্রেটেড স্কিনের জন্য এই টোটকাটি দারুণ কার্যকরী। এমনকি এটি স্কিনের এক্সেস অয়েলিনেস কমাতেও বেশ হেল্প করবে।
স্ট্রেচ মার্কস দূর করতে
প্রেগনেন্সিতে আমার পেটে আর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় স্ট্রেচ মার্কস পড়েছিলো। অলিভ অয়েলের সাথে ২/৩ ফোঁটা আরগান অয়েল মিক্স করে আমি ম্যাসাজ করে নিতাম। এটা একদম ম্যাজিকের মতো কাজ করেছে। স্কিন অনেক সফট হয়েছে আর স্ট্রেচ মার্কসের ভিজিবিলিটি কমে এসেছে।
হেয়ার ফল ট্রিটমেন্ট হিসেবে
চুলের লেন্থ অনুযায়ী নারকেল তেল নিন। এতে যোগ করুন কয়েক ফোঁটা আরগান অয়েল। এবার স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন এবং ২০ মিনিট রেখে মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ২ বার অয়েল ট্রিটমেন্ট করুন। এতে চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বাড়বে, প্রাকৃতিকভাবে চুল মজবুত ও ঘন হবে। তাই যাদের অতিরিক্ত পরিমাণে চুল পড়ছে, তারা হেয়ার কেয়ার রুটিনে অ্যাড করুন আরগান অয়েল।
Skin Cafe Argan Oil কেন আমার ফেবারিট প্রোডাক্ট নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন! তাহলে পিওর ও ন্যাচারাল মরোক্কান আরগান অয়েল দিয়ে হোক সেলফ কেয়ার। অথেনটিক প্রোডাক্ট কেনার জন্য আমার ভরসার জায়গা সাজগোজ। সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি। অথবা অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকেও কিনতে পারেন আপনার দরকারি প্রোডাক্ট।
ছবি- সাজগোজ