“অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ স্কিন ক্যাফে অ্যাভোকাডো অয়েল আপনার স্কিনকে রাখবে তারুণ্যে দীপ্তিময়! এর ন্যাচারাল অ্যান্টি অক্সিডেন্ট চুলকে গোঁড়া থেকে আগা পর্যন্ত পর্যাপ্ত পুষ্টি জুগিয়ে করে তুলবে ঘন, ঝলমলে ও উজ্জ্বল।” কি? খুব পরিচিত লাইন তাই না? চলুন জেনে নিই বিস্তারিত
অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ স্কিন ক্যাফে অ্যাভোকাডো অয়েল
আমরা এখন অনেক বিউটি প্রোডাক্টেই অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শব্দটার উল্লেখ পাই। জানি ও না এ শব্দের মানে কি, শুধু এটুকু জানি যে এটা নিশ্চয়ই ত্বক আর চুলের জন্য খুব ভালো। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হলো এমন এক ধরনের অণু যা অন্য কোনো অণুর অক্সিডেশন (oxidation) কে নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকরী। ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে, ফ্রি র্যাডিক্যালস থেকে রক্ষা করতে, ক্লান্তি দূর করতে, স্মৃতি-শক্তি বৃদ্ধিতে, টাইপ-২ ডায়াবেটিক আক্রান্ত রোগীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এর ভূমিকা রয়েছে। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ চমৎকার একটি অরগানিক প্রোডাক্ট নিয়ে আজকের রিভিউটা লিখছি। এতে কোন কেমিক্যাল নেই, কাজেই কোন সাইড ইফেক্টের ভয় ও নেই। আমি বরাবরই ত্বক আর চুলের জন্য তেল ইউজ করাটা প্রেফার করি। আর আমার তেলের ভাণ্ডারে আরেকটা তেল যেটা যোগ হয়েছে, সেটা হলো স্কিন ক্যাফে অরগানিক কোল্ড প্রেসড ১০০% ন্যাচারাল অ্যাভোকাডো অয়েল। অ্যাভোকাডো ফলটার মতই এর তেলও কিন্তু ভীষণ কার্যকরী।
প্যাকেজিং
ট্রান্সপারেন্ট ১২০ মিলির বোতলে সবুজ রঙের লেবেলে আসে তেলটি, বোতলের ঢাকনার রঙ কালো, ভেতরে সিল দেয়া আছে, ঢাকনা খুললে ফোঁটায় ফোঁটায় তেল পড়ে। অরিজিন ইউনাইটেড মেক্সিকো। লেখা আছে, এটা কোল্ড প্রেসড, আনরিফাইন্ড, এক্সট্রা ভার্জিন ও ১০০% ন্যাচারাল। কোল্ড প্রেসড পদ্ধতিতে প্রস্তুত বলে এবং আনরিফাইন্ড প্রোডাক্ট বলে এর নিউট্রিশনাল কোয়ালিটি নষ্ট হয় না। উৎপাদনের তারিখ থেকে ৩ বছর পর্যন্ত এক্সপায়ারি ডেট দেওয়া আছে।
কনসিসটেন্সি, কালার এবং স্মেল
এর কনসিসটেন্সি বেশ ঘন, কিন্তু কম গ্রীজি এবং তেলটা দেখতে স্বচ্ছ হালকা সবুজাভ রঙের, একটু বাদামের মত (Nutty) হালকা গন্ধযুক্ত। স্কিন ক্যাফের তেলটা কোল্ড প্রেসড বলে এর বর্ণ আর গন্ধ এমন, যদি তাপে প্রসেসড তেল হয়, সেটা গন্ধহীন আর হালকা স্বচ্ছ হালকা হলুদ রঙের হতো। কোল্ড প্রেসড তেলটা অ্যাভোকাডো ফলের মতই পুষ্টিগুণে ভরপুর। অ্যাভোকাডো ফলটাকেই তো আসলে ভেজিটেবল বাটার বলা হয়ে থাকে এর তেলের জন্য।
এবার অ্যাভোক্যাডো অয়েলের নিউট্রিশনাল প্রোপার্টি নিয়ে একটু কথা বলা যাক তাহলে। অনেকেই হয়তো মনে করেন, অলিভ অয়েল আর অ্যাভোকাডো অয়েলের মধ্যে কিইবা আর তফাৎ হতে পারে, একটা ইউজ করলেই হলো। কিন্তু এখন আমি এক্সপ্লেইন করার চেষ্টা করবো যে, কেন আপনি আলাদা করে একটা অ্যাভোকাডো অয়েল কিনে ব্যবহার করতে পারেন। অ্যাভোকাডো অয়েলে আছে –
(১) মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড, যেমন – ওলেইক এসিড (Oleic Acid), লেসিথিন (Lecithin)
(২) পলিহাইড্রোক্সিলেইটেড ফ্যাটি অ্যালকোহলস (Polyhydroxylated fatty alcohols or PFA)
(৩) ভিটামিন ই, বিশেষত আলফা টোকোফেরোল (alpha-tocopherol)
(৪) ক্লোরোফিল (Chlorophylls)
(৫) ক্যারোটিনয়েড, যা ভিটামিন এ এর উৎস (Carotenoids)
(৬) ফাইটোস্টেরলস (Phytosterols)
(৭) ভিটামিন ডি
স্কিন ক্যাফে অ্যাভোকাডো অয়েল ব্যবহারের ৭টি উপকারিতা
(১) ডিপ ময়েশ্চারাইজার হিসেবে
অ্যাভোকাডো অয়েল স্কিনের সেকেন্ড লেয়ার, অর্থাৎ ডার্মিসে সহজে যেতে পারে, এর ওলেইক এসিড আর ফাইটোস্টেরলস শুষ্ক এবং সংবেদনশীল ত্বকের জন্য খুবই উপযোগী। এতে থাকা লেসিথিন কোলাজেন বুস্ট করে। প্রো ভিটামিন এ, ক্যারোটিনয়েডস লুটেইন আর জিয়াজেন্থিং স্কিনের ন্যাচারাল অ্যান্টি অক্সিডেন্ট স্টোরকে আরো সমৃদ্ধ করে তোলে। কাজেই অনায়াসেই এটাকে ড্রাই স্কিনের নাইট ক্রিম হিসেবে ব্যবহার করা যায়। আমি তাই করছি।
(২) সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করতে
ভিটামিন ই স্কিনকে নারিশ করে এবং সান ড্যামেজ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। যাদের স্কিন ড্রাই, তারা অ্যাভোকাডো অয়েল সানস্ক্রিনের সাথে মিক্স করে ব্যবহার করতে পারেন। আর বাইরে থেকে ফেরার পর টমেটোর রসের সাথে সামান্য অ্যাভোকাডো অয়েল মিক্স করে একটা কটন বলে লাগিয়ে পুরো মুখে ব্যবহার করে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। অ্যাভোকাডো অয়েলে থাকা পলিহাইড্রোক্সিলেইটেড ফ্যাটি অ্যালকোহলস (Polyhydroxylated fatty alcohols or PFA) স্কিনের ড্যামেজ হয়ে যাওয়া সেলগুলোকে রিপেয়ার করে।
(৩) অ্যান্টি এইজিং
কোলাজেন বুস্ট হলে স্কিনের টাইটনেস বাড়ে। ভিটামিন ই, লেসিথিন, ক্যারোটিনয়েডস এবং ফ্যাটি এসিডস স্কিনের এইজিং প্রোসেসকে ধীরগতির করতে সহায়তা করে।
(৪) একজিমা আর সোরিয়াসিস সারাতে সাহায্য করে
অ্যাভোকাডো অয়েল একজিমা আর সোরিয়াসিস সারাতে সাহায্য করে। যাদের অতিরিক্ত ড্রাই স্কিন তারা এটা ইউজ করে দেখতে পারেন। চিটচিটে ভাব না দিয়ে স্কিনকে ডিপলি ময়েশ্চারাইজ করে এটা।
(৫) আই ক্রিমের বিকল্প হিসেবে
আলাদাভাবে যারা আই ক্রিম ইউজ করতে চান না, তারা অনায়াসেই আই ক্রিমের বিকল্প হিসেবে কয়েক ফোঁটা অ্যাভোকাডো অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। এতে থাকা ভিটামিন এ এবং ই চোখের চারপাশের সেনসিটিভ স্কিনকে ডিপলি নারিশ করে, কোলাজেন বুস্ট করে এবং এইজিংকে স্লো করতে সাহায্য করে।
(৬) চুলের সার্বিক বৃদ্ধিতে
এতে থাকা ভিটামিন ডি স্ক্যাল্পকে ময়েশ্চারাইজ করে এবং সেই সাথে ওলেইক এসিড খুশকি দূর করতে সাহায্য করে।
(৭) নখের কিউটিকল সুন্দর রাখতে
আমাদের নখের কিউটিকল নিয়ে আমরা অনেকেই টেনশনে থাকি, আলাদা করে কিউটিকল অয়েল না কিনে অ্যাভোকাডো অয়েল কিউটিকলসহ পুরো নখে অনায়াসেই ইউজ করা যায়।
স্কিন ক্যাফে অ্যাভোকাডো অয়েল : রেটিং ও প্রাপ্তিস্থান
রেটিং
আমার জন্য এই তেলের রেটিং ৯/১০। আমার খুবই ভালো লেগেছে। আশা করছি আপনাদেরও ভালো লাগবে।
প্রাপ্তিস্থান
দেশের বেশ কিছু বড় বড় কসমেটিক্সের দোকানে, ফার্মেসিতে, অনলাইন শপসহ যমুনা ফিউচার পার্ক এবং সীমান্ত স্কয়ারে অবস্থিত শপ.সাজগোজ.কম –এ পেয়ে যাবেন অরিজিনাল প্রোডাক্টটি। চাইলে ঘরে বসে সাজগোজের অনলাইন-এ অর্ডার করে নিতে পারেন।
ছবি – সাজগোজ