অনেকদিন পর ফ্যামিলির সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। অনেকগুলো দাওয়াত, পুকুরে ঝাঁপাঝাঁপি, গাছের ফল পেড়ে খাওয়া, কাজিনদের সাথে পিকনিক- সবকিছু মিলিয়ে খুবই এনজয় করেছি। এত হইচইয়ের মধ্যে সেভাবে স্কিন কেয়ার করার সময়ই পাইনি। তাই পুরো ফেইসে সান ট্যান পড়ে এমন অবস্থা হয়েছিলো, যে আমার পছন্দের ফাউন্ডেশনের শেইড পর্যন্ত আর স্কিনের সাথে ম্যাচ করছিলো না! এই ট্যান কমাতে আমি এমন একটা প্রোডাক্ট খুঁজছিলাম যেটা আমি আমার বেসিক স্কিন কেয়ার রুটিনের সাথেই ইনক্লুড করতে পারবো। তারপর এক ফ্রেন্ডের সাজেশনে ট্রাই করলাম স্কিন ক্যাফে ব্রাইটেনিং মাস্ক। আজকে শেয়ার করছি এই মাস্ক ব্যবহার করার পর আমার পারসোনাল এক্সপেরিয়েন্স।
Skin Cafe Brightening Mask এর রিভিউ
ত্বকের যত্নে ন্যাচারাল ইনগ্রেডিয়েন্টের কদর বরাবরই অনেক বেশি। কারণ এই ইনগ্রেডিয়েন্টগুলো ত্বকের কোনো ক্ষতি না করেই বিভিন্ন কনসার্ন দূর করতে সাহায্য করে। স্কিন ক্যাফে ব্রাইটেনিং মাস্ক সম্পূর্ণ ন্যাচারাল ইনগ্রেডিয়েন্টের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এতে আছে মুলতানি মাটি, সাদা চন্দন, কেওলিন ক্লে, অরেঞ্জ পিল পাউডার ও শঙ্খ পাউডার। চলুন এক নজরে এই ইনগ্রেডিয়েন্টগুলোর বেনিফিট দেখে নেই-
মুলতানি মাটি
- ত্বকের হাইপার পিগমেন্টেশন কমায়।
- এক্সট্রা অয়েল অ্যাবজর্ব করে।
- ত্বকের ডেডসেল দূর করে।
সাদা চন্দন
- স্কিন টোন ইভেন আউট করতে হেল্প করে।
- ত্বকে বয়সের ছাপ পড়া প্রতিরোধ করে।
- এর অ্যান্টিসেপটিক প্রোপার্টিজ একনে প্রিভেন্ট করে।
কেওলিন ক্লে
- ত্বক জেন্টলি এক্সফোলিয়েট করার মাধ্যমে আগের চেয়ে ব্রাইট করে তোলে।
- ত্বকের ইরিটেশন হিল করে।
- এক্সেস অয়েল অ্যাবজর্ব করে।
অরেঞ্জ পিল পাউডার
- এটিতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড স্কিন ব্রাইট করতে হেল্প করে।
- পোর টাইটেনিংয়ে ভূমিকা রাখে।
- অ্যান্টি অক্সিডেন্ট প্রোপার্টিজ ত্বককে প্রিম্যাচিউর এজিং সাইনস ও ফ্রি রেডিক্যাল ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে।
শঙ্খ পাউডার
- সান ট্যান, ডার্ক স্পট বা যেকোনো হাইপার পিগমেন্টেশন কমায়।
- একনে স্কার কমায়।
- এজিং সাইনস নিয়ন্ত্রণ করে।
আশা করি এখন বুঝতে পারছেন, এই ব্রাইটেনিং মাস্কে থাকা প্রতিটি ইনগ্রেডিয়েন্টের আছে মাল্টিপল স্কিন বেনিফিটস। অল স্কিন টাইপে স্যুইটেবল এই মাস্কটি রেগুলার ব্যবহার করলে সান ট্যান তো দূর হয়ই, সেই সাথে ত্বক হয়ে ওঠে আগের চেয়ে হেলদি ও গ্লোয়িং। এই মাস্কের আরেকটি বিষয় না বললেই নয়। মাস্কটি জিপলক প্যাকেজিংয়ে আসে বলে মাস্কটি আলাদা কোনো কন্টেইনারে স্টোর করতে হয় না, আবার বাতাস ঢুকে কোয়ালিটি নষ্ট হওয়ারও ভয় থাকেনা।
কীভাবে ব্যবহার করেছি?
স্কিন ক্যাফে ব্রাইটেনিং মাস্ক ব্যবহার করা খুবই সহজ। সবগুলো ইনগ্রেডিয়েন্ট পারফেক্ট রেশিওতে মিক্স করা থাকে বলে এটি চাইলে শুধুমাত্র পানির সাথে মিশিয়েও ইউজ করা যায়। সান ট্যান কমাতে আমি আমার নরমাল টু কম্বিনেশন স্কিনের জন্য এই মাস্কের সাথে পরিমাণমতো ইয়োগার্ট ও মধু মিশিয়ে ঘন পেস্ট বানিয়ে আমার ফেইস ও নেক এরিয়াতে ব্যবহার করি। মাস্ক অ্যাপ্লাই করার পর আমি ১০ মিনিট অপেক্ষা করে রুম টেম্পারেচারের পানিতে ধুয়ে ফেলি। তারপর জেল বেইজড ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করি। আমি এটি সপ্তাহে ১-২ দিন ব্যবহার করি।
আমার পারসোনাল এক্সপেরিয়েন্স
- এই মাস্কটি ফাইন ডাস্ট ফর্মে আসে বলে মিক্স করতে কোনো প্রবলেম ফেইস করিনি। খুব সহজেই স্মুথ পেস্ট তৈরি করতে পেরেছি।
- মাইল্ড ফ্রেগ্রেন্সের মাস্কটি আমার স্কিন একদমই ইরিটেট করেনি।
- অনেক ফেইস মাস্ক অ্যাপ্লাই করলে স্কিন ড্রাই হয়ে যায়। কিন্তু এই মাস্কটি আমার স্কিন একদমই ড্রাই আউট করে দেয়নি।
- মাস্কটি আমার ফেইস ডিপলি ক্লিন করেছে।
- মুখ ধোয়ার পর ফেইসে একটা গ্লো এসেছে।
- দুই সপ্তাহ ব্যবহার করার পর আমার ফেইসের সান ট্যান অনেকটাই কমে গিয়েছে।
এটাই ছিলো Skin Café Brightening Mask ব্যবহার করার পর আমার এক্সপেরিয়েন্স। আমার কাছে পারসোনালি এই মাস্কটি খুবই ভালো লেগেছে। যারা আমার মতো কোথাও বেড়াতে গিয়ে ট্যানড হয়ে গিয়েছেন কিংবা ফেইসে হাইপার পিগমেন্টেশনের কারণে স্ট্রাগল করছেন, তারা স্কিন টোন ইভেন আউট করার কুইক ফিক্স হিসেবে এই মাস্কটি ট্রাই করে দেখতে পারেন। তবে আপনার স্কিন টাইপ যেটাই হোক, মাস্কটি ইউজ করার আগে প্যাচ টেস্ট করে নেওয়ার পরামর্শ থাকবে। যেকোনো প্রোডাক্ট ইউজ করার ক্ষেত্রে চেষ্টা করুন অথেনটিক প্রোডাক্ট চুজ করার। অথেনটিক মেকআপ, স্কিনকেয়ার ও হেয়ারকেয়ার প্রোডাক্টসের জন্য আমি সবসময়ই সাজগোজ এর উপর ভরসা রাখি। আপনারাও ভিজিট করুন সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা ফিজিক্যাল স্টোরে। সাজগোজের বেশ কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। এ শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে ও চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টারে অবস্থিত। এই শপগুলোর পাশাপাশি চাইলে অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকেও কিনতে পারেন আপনার দরকারি বা পছন্দের সব প্রোডাক্টস।
লিখেছেনঃ সুমাইয়া রহমান দোলা
ছবিঃ সাজগোজ