ওপেন পোরস এবং ব্ল্যাকহেডস নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন? ওপেন পোরস প্রবলেম, হোয়াইটহেডস কিংবা ব্ল্যাকহেডসের সমস্যা নেই এমন হয়ত খুব কমই পাওয়া যাবে। পোরস গভীরভাবে ক্লিন রাখার জন্য কত ধরনের মাস্ক এবং ফেইস ওয়াশ আমরা ব্যবহার করি। তবে সব সময়ই একটা চেষ্টা থাকে যেন ন্যাচারাল উপাদান দিয়েই ওপেন পোরসের সমস্যা সমাধান করা যায়। কিন্তু সেই কার্যকরী উপাদান কোনটি? ভেবে কুল কিনারা পাচ্ছেন না, তাই না? কিছু প্রাকৃতিক উপাদান আছে যা ব্যবহারে স্কিনের ডিপ লেয়ার থেকে পোরস ক্লিন হয়ে স্কিনের ইম্পিউরিটিস দূর করে। জানা আছে কী সেই প্রাকৃতিক উপাদানগুলো ?
সেই প্রাকৃতিক উপাদানগুলো হচ্ছে; কাওলিন ক্লে, অ্যাক্টিভেটেড চারকোল এবং মুলতানি মাটি। এই তিনটি প্রাকৃতিক উপাদানের গুণাগুণ একসাথে পাওয়া যাবে একটি মাত্র ক্লে মাস্কে! চলুন জেনে নেই কোন সেই মাস্কটি যা আপনার স্কিনকে করবে ডিটক্সিফাইং এবং পল্যুশন ফ্রী!
তিনটি উপাদানের গুণাগুণ
স্কিন কেয়ারে ক্লে বা মাটির ব্যবহার যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। কী ধরনের উপকারিতা দেয় এই ক্লে মাস্ক আমাদের স্কিনে? ক্লে মাস্কটি সম্পর্কে জানার আগে আমরা প্রথমেই জেনে নেই কাওলিন ক্লে, অ্যাক্টিভেটেড চারকোল এবং মুলতানি মাটি গুণাগুণ সম্পর্কে!
কাওলিন ক্লে
হরেক রকমের ক্লের মধ্যে একটি জনপ্রিয় ক্লে হল কাওলিন ক্লে। এই ক্লে-
- স্কিনের ভিতর থেকে ডার্ট, পল্যুশন, ইম্পিউরিটিকে টেনে বের করে নিয়ে আসে।
- কাওলিন ক্লে স্কিনের অতিরিক্ত তেল স্কিন থেকে বের করে নিয়ে আসে। এতে পোরস ক্লিন থাকে।
- ক্লগড পোরস থেকেই কিন্তু একনে, হোয়াইটহেডস, ব্ল্যাকহেডস এর প্রবলেম দেখা দেয়। তাই পোরস ডিপলি ক্লিন রাখা খুবই দরকার। আর স্কিনের এই ডিপ ক্লিনে সাহায্য করে কাওলিন ক্লে।
- কাওলিন ক্লে স্কিনের ইম্পিউরিটি ত্বকের গভীর থেকে পরিষ্কার করে একনে দূর করতে খুবই কার্যকরী।
- অন্যান্য সব ধরনের স্কিনের মত সেনসেটিভ স্কিনকেও কাওলিন ক্লে বেশ ভালোভাবে কাজ করে। কারণ, কাওলিন ক্লে জেন্টলি স্কিনে কাজ করে থাকে, তাই সেনসেটিভ স্কিনে কাওলিন ক্লে ব্যবহারে কোন ইরিটেশন হয় না।
অ্যাক্টিভেটেড চারকোল
প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে আমাদের ঘরের বাহিরে বের হতে হয়। ফলে আমাদের স্কিন বিভিন্ন ধরনের টক্সিন, পল্যুশনের মধ্যে দিয়ে যায়। তাছাড়া বিভিন্ন ক্যামিকেলস, মেকআপ পার্টিকেলস পোরের ভিতরে গিয়ে পোরস ক্লগ করে ফেলে।
যদি বলি স্কিনে কয়লা ব্যবহারে পেয়ে যাবেন পিউর এবং ক্লিন স্কিন; তাহলে আশ্চর্য হবেন নাতো? আশ্চর্য হবার কিন্তু কিছুই নেই! কারণ, স্কিনে কয়লা ব্যবহারের কথা না শুনলেও নিশ্চয়ই চারকোলের নাম শুনেছেন? কয়লা এবং চারকোল কিন্তু একই উপাদান। আমরা স্কিনে বিভিন্ন ধরনের চারকোল মাস্কের ব্যবহার সম্পর্কে জানি। কিন্তু চারকোল সম্পর্কে আমরা কতটুক জানি?
চারকোলের গুণাগুণগুলো কী কী?
- অ্যাক্টিভেটেড চারকোল পোরসের ভিতরে জমে থাকে টক্সিন, পল্যুশন, এক্সেস সিবাম, মেকআপ পার্টিকেলস এবং কেমিক্যালস বের করে নিয়ে এসে পোরসকে ক্লিন রাখে।
- একনে ব্রেকআউট প্রতিরোধ করে।
- মলিন ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে।
মুলতানি মাটি
রূপচর্চায় মুলতানি মাটির গুণাগুণ বলে শেষ করা যাবে না। প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে এর ব্যবহার খুবই প্রচলিত। মুলতানি মাটির প্রধান কিছু গুণাগুণ হল-
- স্কিনের অতিরিক্ত অয়েল এবং ইম্পিউরিটিস শোষণ করে স্কিন থেকে বের করে নিয়ে আসে
- স্কিন টোন ইম্প্রুভ করে
- পোরস ডিপলি ক্লিন করে ও টাইট করে
- জেন্টলি স্কিন এক্সফোলিয়েট করে
- একনে প্রতিরোধ করে
- হোয়াইটহেডস, ব্ল্যাকহেডস দূর করে
- সানবার্ন রিমুভ করে
- স্কিনকে স্যুদ এবং সফট করে
- স্কিনে ন্যাচরালি গ্লো আনে
আমার পছন্দের ক্লে মাস্ক কোনটি?
আমার ওপেন পোরস এবং ব্ল্যাকহেডস সমস্যা সমাধানে যে ক্লে মাস্কটি ব্যবহার করি সেটি হল স্কিন ক্যাফে ডিটক্স হিলিং ক্লে মাস্ক। এতে আছে কাওলিন ক্লে, অ্যাক্টিভেটেড চারকোল এবং মুলতানি মাটি। ফলে, এই তিনটি প্রাকৃতিক উপাদানের বেনিফিটসগুলো একসাথে স্কিনে কাজ করবে। পোরস ডিপলি ক্লিন করার সাথে সাথে ব্ল্যাকহেডসও দূর করবে। এছাড়াও সিবাম কন্ট্রোলের পাশাপাশি স্কিন ক্যাফে ডিটক্স হিলিং ক্লে মাস্ক স্কিনের হাইড্রেশন ব্যালেন্স করে।
একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে মাস্কটির নামে ডিটক্স লিখা আছে। কেন লেখা তা বুঝতে পেরেছেন কি? এই ডিটক্স শব্দটি সাধারণত খাবারের ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই। যেমন- ডিটক্স টি। তাহলে স্কিনে কেয়ারে ডিটক্স মানে কী? ফেসিয়াল ডিটক্স মানে; স্কিন থেকে টক্সিন, ইম্পিউরিটি, এক্সেস সিবাম, ক্যামিকেলস এবং ডেড সেল সব কিছুই ভিতর থেকে পরিষ্কার করে আনা। এই মাস্কে ডিটক্স লেখার মানে হচ্ছে এই মাস্কটি স্কিনকে ডিটক্সিফাইং করে। টক্সিন জমে থাকা মলিন ত্বককে ভিতর থেকে পরিষ্কার করে স্কিনকে দেখায় রিফ্রেশিং, ক্লিন, স্মুথ এবং ব্রাইট।
স্কিন ক্যাফে ডিটক্স হিলিং ক্লে মাস্কের বেনেফিট
এই ক্লে মাস্কের বেনেফিটগুলো হল-
- স্কিনের ইম্পিউরিটিস দূর করে
- পোরস ডিপলি ক্লিন করে
- হোয়াইটহেডস, ব্ল্যাকহেডস দূর করে
- স্কিনের অতিরিক্ত অয়েল কন্ট্রোল করে
- একনে প্রতিরোধে সাহায্য করে
- স্কিন হাইড্রেটেড রাখে
- জেন্টলি স্কিনকে এক্সফলিয়েট করে
- পোরস টাইট করতে হেল্প করে
- স্কিনকে প্রাকৃতিক ভাবে উজ্জ্বল করে
- স্কিন টোন ইম্প্রুভ করতে সাহায্য করে
কীভাবে মাস্কটি অ্যাপ্লাই করতে হবে?
নরমাল টু অয়েলি স্কিনের জন্য
নরমাল টু অয়েলি স্কিনের জন্য ফেইসপ্যাক তৈরি করতে লাগবে-
১। স্কিন ক্যাফে ডিটক্স হিলিং ক্লে মাস্ক- ১ চামচ
২। পানি বা অ্যালোভেরা জেল- পরিমাণমত
ব্যবহারবিধি-
১। স্কিন ক্যাফে ডিটক্স হিলিং ক্লে মাস্কটি ১ চামচ নিয়ে এর সাথে পরিমাণ মত পানি বা অ্যালোভেরা জেল নিয়ে ভালো করে পেস্ট করে নিতে হবে।
২। এরপর ক্লিন ফেইসে; মাস্কটি ফেইসে ও গলায় অ্যাপ্লাই করে নিতে হবে।
৩। খেয়াল রাখতে হবে যেন চোখে এবং ঠোঁটে না লাগে মাস্কটি।
৪। ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে।
৫। মাস্কটি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
৬। এরপর স্কিন টাইপ অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে হবে।
ড্রাই স্কিনের জন্য
ড্রাই স্কিনের জন্য ফেইসপ্যাক তৈরি করতে লাগবে-
১। স্কিন ক্যাফে ডিটক্স হিলিং ক্লে মাস্ক- ১ চামচ
২। টক দই- পরিমাণমত
ব্যবহারবিধি-
১। স্কিন ক্যাফে ডিটক্স হিলিং ক্লে মাস্ক টি ১ চামচ নিয়ে এর সাথে পরিমাণ মত টকদই নিয়ে ভালো করে পেস্ট করে নিতে হবে।
২। বাকি স্টেপগুলো নরমাল টু অয়েলি স্কিনের জন্য যে স্টেপগুলো আছে সেগুলোই ফলো করতে হবে।
সপ্তাহে কতদিন ব্যবহার করব?
কার্যকরী রেজাল্টের জন্য সপ্তাহে ২-৩ দিন এই মাস্কটি ব্যবহার করতে হবে।
ওপেন পোরস এবং ব্ল্যাকহেডস নিয়ে আর কোন সমস্যায় পড়লে দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই! স্কিন ক্যাফে ডিটক্স হিলিং ক্লে মাস্কটি নিশ্চিন্তে ব্যবহার করবেন। রেগুলার বেসিক স্কিন রুটিন ফলো করার সাথে সাথে এক্সট্রা একটু স্কিন কেয়ার করলে স্কিনে খুব ভালো বেনেফিট দেয়। স্কিন ক্যাফে ডিটক্স হিলিং ক্লে মাস্ক ব্যবহারে আপনি যে উপকারিতা পাবেন তাতে এটা খুব দ্রুত আপনার স্কিনকেয়ারের একটি ইম্পরট্যান্ট পার্ট হয়ে যাবে। সাজগোজের চারটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার এবং উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) এ অবস্থিত। আর অনলাইনে আপনার স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে। সুন্দর থাকুন, সুন্দর রাখুন।
ছবি- সাজগোজ