প্রতিদিন নানা কাজে বাইরে গেলেও দিন শেষে ঘরে ফিরে আমরা চাই আমাদের স্কিন হেলদি লাগুক। কিন্তু শুধু চাইলেই কি আর হেলদি স্কিন পাওয়া যায়? মোটেও না। বরং প্রোপার স্কিন কেয়ারের অভাবে স্কিন হয়ে ওঠে আনহেলদি। সেজন্য সবার আগে বলা হয় স্কিন কেয়ার রুটিন মেনে চলার জন্য। আর এই রুটিন কীভাবে মেনটেইন করা যায়? ক্লেনজিং, টোনিং, ময়েশ্চারাইজিং – এই তিনটি স্টেপ ফলো করে। স্টেপ মাত্র তিনটি হলেও সবগুলো স্টেপ আমরা অনেকেই পারফেক্টলি ফলো করি না। যার কারণে স্কিন হয়ে ওঠে আনহেলদি। আজকে জানাবো স্কিন কেয়ার রুটিনে টোনার অ্যাড করার বেনিফিটস এবং ফ্লাওয়ার এক্সট্র্যাক্ট দিয়ে তৈরি একটি বাজেট ফ্রেন্ডলি টোনার সম্পর্কে।
স্কিনের জন্য টোনার কেন জরুরি?
টোনার হচ্ছে ওয়াটার বেইজড একটি স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট। ক্লেনজিং এর পর নেক্সট স্টেপ হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয়। ফেইস ওয়াশ বা ক্লেনজার ব্যবহার করার পর স্কিনে বেশ হার্শ ফিল হতো বলে আমাদের স্কিনের ন্যাচারাল pH লেভেল ইমব্যালেন্স হয়ে যেতো। টোনারের কাজ ছিল এই pH লেভেল ব্যালেন্স করা। তবে সময়ের সাথে সাথে স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট বেশ ডেভেলপ হয়েছে। এখন টোনার শুধু স্কিনের pH লেভেল ব্যালেন্স করাই নয়, সেই সাথে স্কিন ডিপলি ক্লিন করতে, এক্সফোলিয়েট করতে, হাইড্রেটেড রাখতে, স্কিনের পোরস মিনিমাইজ করতে, এজিং প্রসেস ডিলে করতে এবং পরবর্তী স্টেপগুলোর জন্য স্কিনকে প্রিপেয়ার করতেও হেল্প করে। তাহলে বুঝতেই পারছেন স্কিনের জন্য টোনার কেন জরুরি!
Skin Cafe Floral Hydrating Toner
প্রাচীন সময় থেকেই ত্বকের যত্নে নানা ধরনের ফুল ব্যবহার করা হতো। এখনও অনেক দেশে ফুলকে ন্যাচারাল রেমেডি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন ধরনের ফ্লাওয়ার এক্সট্র্যাক্ট দিয়ে তৈরি অরগানিক প্রোডাক্টগুলো ইনক্লুড করা হয় স্কিন কেয়ারে। ঠিক সেরকমই একটি স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট Skin Cafe Floral Hydrating Toner। এই টোনারটি তৈরি করা হয়েছে গোলাপ, রজনীগন্ধা ও জবা ফুলের নির্যাস দিয়ে। এই তিনটি ফুলই স্কিনে দেয় অ্যামেজিং বেনিফিটস। এই টোনারে আরও আছে নিয়াসিনামাইড। চলুন জেনে নেই স্কিন কেয়ারে এই তিনটি ফুল ও নিয়াসিনামাইডের বেনিফিটস সম্পর্কে-
গোলাপ
গোলাপে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ ও সি। যার কারণে স্কিনে এজিং সাইনস প্রিভেন্ট হয়, কোলাজেন প্রোডাকশন বুস্ট আপ হয়। এই ফুলে আরও আছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি প্রোপার্টিজ যা স্কিনের রেডনেস, ইনফ্ল্যামেশন কমিয়ে আনে। গোলাপে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রোপার্টিজ থাকার কারণে স্কিনের pH লেভেল ব্যালেন্স করতেও এটি বেশ হেল্পফুল। স্কিনকে ময়েশ্চারাইজড রাখার জন্য, স্কিনের হাইড্রেশন লেভেল ব্যালেন্স করার জন্য এতে আছে ময়েশ্চার প্রোপার্টিজ।
জবা
জবা ফুলে আছে Mucilage Content যা ওয়াটার স্টোর করে রাখতে পারে। এটি স্কিনের ময়েশ্চার ধরে রাখার অ্যাবিলিটি বাড়ায়। যার কারণে লং টাইম পর্যন্ত স্কিন থাকে হাইড্রেটেড ও সফট। এতে থাকা ন্যাচারাল অ্যাসিড স্কিন এক্সফোলিয়েট করে এবং স্কিনের সেল টার্নওভার বাড়ায়। জবা ফুলে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এর কারণে বাইরের ধুলাবালি, সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে সুরক্ষিত থাকে ত্বক। যার কারণে এজিং প্রসেস ডিলে হয়, লার্জ পোরসের ভিজিবিলিটি কমে আসে এবং স্কিন থাকে ইয়াংগার লুকিং। এই ফুলে আরও আছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি প্রোপার্টিজ, যার কারণে স্কিনের ইনফ্ল্যামেশন কমে।
রজনীগন্ধা
রজনীগন্ধা ফুল আমাদের সবার পরিচিত। অল্প সময়েই ঘরে এই ফুলের সুঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে। এই ফুল যে স্কিন কেয়ারেও বেনিফিটস দেয় সেটা কি জানেন? এই ফুলে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি প্রোপার্টিজ ব্রেকআউটস কমায়, স্কিনে সুদিং ফিল দেয় এবং স্কিনকে করে তোলে ইয়াংগার লুকিং।
গোলাপ, জবা ও রজনীগন্ধা খুব কমন তিনটি ফুল। ত্বকের যত্নে সবগুলো ফুলেরই বেনিফিটস আছে। স্কিনক্যাফে ফ্লোরাল হাইড্রেটিং টোনারে এই তিনটি ফুলের নির্যাস যোগ করার কারণে এটি স্কিনকে হাইড্রেটেড ও ময়েশ্চারাইজড রাখার পাশাপাশি অনেক স্কিন প্রবলেমের সল্যুশন দেয়।
নিয়াসিনামাইড
ফ্লোরাল এই টোনারে থাকা আরও একটি ইনগ্রেডিয়েন্ট হচ্ছে নিয়াসিনামাইড। ইলাস্টিন প্রোডাকশন বাড়াতে হেল্প করে এই উপাদানটি। যার কারণে স্কিন হয়ে ওঠে হেলদি। স্কিনের জন্য নিয়াসিনামাইডের আরও কয়েকটি বেনিফিটস হচ্ছে-
- ইনফ্ল্যামেশন কমায়
- স্কিন স্মুথ ও ময়েশ্চারাইজড রাখে
- এনলার্জড পোরস মিনিমাইজ করে
- হাইপারপিগমেন্টেশন কমায়
- এজিং সাইনস প্রিভেন্ট করে
- ত্বকের অতিরিক্ত অয়েলিনেস কমিয়ে আনে
ফ্লাওয়ার এক্সট্র্যাক্ট দিয়ে তৈরি এই টোনারটি কেন ইউজ করবেন?
এই টোনারে থাকা উপাদানগুলো কী কী বেনিফিটস দিবে সেটা তো জানা হলো। এবার টোনারটি কেন স্কিন কেয়ার রুটিনে অ্যাড করবেন এক নজরে দেখে নেই চলুন-
- pH ব্যালেন্স করবে
- পোরস টাইট করবে
- স্কিনকে হাইড্রেটেড রাখবে
- মেকআপ পার্টিকেলস ডিপলি ক্লিন করবে
- স্কিনকে হেলদি করে তুলবে
- পরবর্তী স্কিন কেয়ার স্টেপের জন্য স্কিনকে প্রিপেয়ার করবে
ব্যবহারের নিয়ম
১) ব্যবহারের আগে টোনারের বোতলটি ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিন।
২) ক্লেনজার দিয়ে ফেইস ভালোভাবে ক্লিন করে নিন।
৩) পরিষ্কার হাতে অথবা কটন প্যাডে কয়েক ড্রপ টোনার নিয়ে ফেইস, নেক ও আন্ডার আই এরিয়াতে জেন্টলি অ্যাপ্লাই করুন।
৪) স্কিনে অ্যাবজর্ব হয়ে যাওয়ার পর নেক্সট স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ইউজ করুন। কারণ ড্যাম স্কিনে প্রোডাক্ট ভালোভাবে অ্যাবজর্ব হয়।
৫) সকালে ও রাতে দুইবার ব্যবহার করতে পারেন।
১৮ বছর বয়সের উপরে যে কোনো নারী ও পুরুষ এটি ব্যবহার করতে পারবেন। অল টাইপ স্কিনের জন্য এটি স্যুইটেবল।
প্যাকেজিং
টোনারটি পাওয়া যাচ্ছে ১১০ মি. লি. এর বোতলে। নীল রঙের এই বোতলটি দেখতে বেশ আই ক্যাচি। ইজিলি ব্যাগে ক্যারি করা যায়। ফ্লাওয়ার এক্সট্র্যাক্ট দিয়ে তৈরি এই টোনারের স্মেলটাও বেশ মিষ্টি।
সতর্কতা
- শুষ্ক ও ঠান্ডা স্থানে সরাসরি সূর্যালোক থেকে দূরে রাখুন
- বেশিদিন সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজে রেখে ব্যবহার করুন
- ফেইসে ব্যবহারের সময় চোখের সংস্পর্শে এলে তাৎক্ষণিকভাবে পর্যাপ্ত পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন
- ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই প্যাচ টেস্ট করে নিন
- যদি রঙ বা গন্ধে কোনো পরিবর্তন হয়, তাহলে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন
টোনারটি আমার কেমন লেগেছে?
আমার স্কিন নরমাল হলেও কিছুদিন ধরে স্কিনে বেশ টান টান ফিল হচ্ছিল, সেই সাথে স্কিন হয়ে যাচ্ছিল নিষ্প্রাণ ও মলিন। বুঝতে পারছিলাম স্কিন দিন দিন ডিহাইড্রেটেড হয়ে যাচ্ছে। বাসায় এসে স্কিন কেয়ার রুটিন ফলো করলেও তেমন বেনিফিট পাচ্ছিলাম না। সল্যুশন খুঁজতে গিয়ে ভিজিট করেছিলাম সাজগোজের ওয়েবসাইটে। সেখানে ফ্লোরাল এই হাইড্রেটিং টোনারটির খোঁজ পাই। স্কিনক্যাফে ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট আগেও ইউজ করে উপকার পেয়েছিলাম। যার কারণে এই টোনারটি বেছে নিতে দ্বিধা হয়নি। সত্যি বলতে আমি একদমই নিরাশ হইনি! ক্লেনজিং করার পর স্কিন কিছুটা ড্রাই লাগতো। এখন এই টোনার ইউজ করায় ড্রাইনেসটাও আর ফিল হচ্ছে না। স্কিন বেশ হেলদিও দেখাচ্ছে। আমি ইউজ করে বেনিফিট পেয়েছি বলে আপনাদেরও জানালাম। স্কিন কেয়ার রুটিনে ইম্পরট্যান্ট স্টেপটি বাদ না দিয়ে বরং অ্যাড করুন অল স্কিন টাইপে স্যুইটেবল পারফেক্ট এই টোনারটি!
এই তো ছিল আমার এক্সপেরিয়েন্স। স্কিন হেয়ার, হেয়ার কেয়ার ও মেকআপের অথেনটিক বিভিন্ন প্রোডাক্টস পেয়ে যাবেন সাজগোজে। অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম অথবা সাজগোজের চারটি ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার এবং উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) থেকেও কিনতে পারেন আপনার দরকারি যে কোনো প্রোডাক্ট।
ছবিঃ সাজগোজ