প্রতিদিন বাইরে গেলে সানস্ক্রিন আর মেকআপ তো অ্যাপ্লাই করতেই হয়। বাসায় ফিরে এগুলো রিমুভ করার জন্য আমরা ফেইস ওয়াশ ইউজ করি। তবে শুধুমাত্র ফেইস ওয়াশ দিয়ে কিন্তু আমাদের স্কিনে থাকা সানস্ক্রিন কিংবা অন্যান্য মেকআপ কখনোই পুরোপুরি রিমুভ হয় না। ফলে পরবর্তীতে সেখান থেকেই ফেইসে বাম্পস কিংবা ব্রণের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই দিনশেষে মেকআপ ও সানস্ক্রিন রিমুভ করতে ক্লেনজিং অয়েল দিয়ে ডাবল ক্লেনজিং প্রসেস ফলো করা একদম মাস্ট।
এখন আপনারা নিশ্চয়ই ভাবছেন যে কোন ক্লেনজিং অয়েল আপনার জন্য পারফেক্ট হবে, তাই তো? চিন্তার কোনো কারণ নেই! আজকের লেখায় আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো এমন একটি মেকআপ ক্লেনজিং অয়েলের রিভিউ, যেটি আপনারা সব স্কিনটাইপে-ই নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারবেন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
আমার পছন্দের ক্লেনজিং অয়েল
Skin Cafe Makeup Cleansing Oil Advanced আমি বেশ কিছু মাস ধরেই ব্যবহার করছি। শুরুতেই স্কিন ক্যাফে ব্র্যান্ডটা নিয়ে একটু বলি। স্কিন ক্যাফে কিন্তু বাইরের দেশের কোনো ব্র্যান্ড নয়, এটি বাংলাদেশের প্রিমিয়াম বিউটি ব্র্যান্ড। তাই আমার মনে হয়েছে যে এদেশের মানুষের স্কিন ও হেয়ার টাইপ কনসিডার করে সেলফ কেয়ার প্রোডাক্টস মার্কেটে নিয়ে এসেছে এই ব্র্যান্ডটি। এই ব্র্যান্ডের যে বিষয়টি আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে সেটি হলো প্রোডাক্ট প্যাকেজিং, কোয়ালিটি সবকিছুতেই প্রিমিয়াম ব্যাপারটা আছে। প্রতিটি প্রোডাক্ট টপ নচ কোয়ালিটির, যারা ব্যবহার করেছেন, তারা তো জানেনই।
দিনশেষে মেকআপ ও সানস্ক্রিন রিমুভ করা কেন জরুরি?
স্কিন প্রোপারলি ক্লিন না করলে পোরস ক্লগ হয়ে ব্রণ, ব্রেকআউটস, বাম্পস এই ধরনের স্কিন প্রবলেম হওয়ার চান্স থাকে। দিনশেষে মেকআপ ও সানস্ক্রিন রিমুভ করতে ডাবল ক্লেনজিং মেথড ফলো করতে হবে। ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার না হলে যতই আপনি স্কিনকেয়ার করেন না কেন, ভালো ফলাফল পাবেন না! তাই রেগুলার ফেইস ওয়াশের সাথে সাথে স্কিনকেয়ারে ইনক্লুড করুন অয়েল ক্লেনজার।
এবার আসি প্রোডাক্ট রিভিউতে
এবার আসি স্কিন ক্যাফে মেকআপ ক্লেনজিং অয়েলের রিভিউতে। সত্যি বলতে আমি এ পর্যন্ত যতগুলো ক্লেনজিং অয়েল ব্যবহার করেছি, সেগুলোর মধ্যে স্কিন ক্যাফের অ্যাডভান্সড ফর্মুলার মেকআপ ক্লেনজিং অয়েলটি আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে। প্রাইস আর কোয়ালিটির দিক দিয়ে বিবেচনা করলে এটাকেই আমি পছন্দের তালিকায় প্রথমে রাখবো।
আমি সবসময় নতুন নতুন স্কিনকেয়ার আইটেম ট্রাই করতে পছন্দ করি। এক ফ্রেন্ডের সাজেশনে আমি স্কিন ক্যাফের মেকআপ ক্লেনজিং অয়েল পারচেজ করি। তারপরেই এই প্রোডাক্টটি জায়গা করে নেয় আমার রেগুলার স্কিনকেয়ার রুটিনে এবং আমার ফেবারিট প্রোডাক্ট লিস্টের একদম টপে।
প্যাকেজিং
১২০ মিলি পরিমাণের এই ক্লেনজিং অয়েলটি একটি শক্ত প্লাস্টিকের বোতলে থাকে। ছোট ছোট ড্রপ আকারে অয়েল বের করতে হয় বলে এটি ইউজ করার সময় অয়েল ছড়িয়ে যাওয়ার কোনো চান্সই নেই৷ এত ভালো ক্লেনজিং অয়েল আপনারা এই দামে অন্য কোনো ব্র্যান্ডে খুঁজে পাবেন না, আমি নিশ্চিত! কারণ আমিও অনেকগুলো ব্র্যান্ড চেঞ্জ করে দেখেছি। যারা রেগুলার বেসিসে মেকআপ করেন, সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করেন; তাদের জন্য এই অয়েল ক্লেনজার কিন্তু মাস্ট হ্যাভ!
কেন সাজেস্ট করছি?
স্কিন ক্যাফে মেকআপ ক্লেনজিং অয়েল আমি এত পছন্দ করি কেন, সেটা একটু জানিয়ে নেই। প্রথমত, এই প্রোডাক্টটি খুবই লাইট ওয়েট হওয়ায় স্কিনে একেবারেই গ্রিজি ফিল হয় না। অনেক ক্লেনজিং অয়েল রয়েছে যেগুলো পানির সাথে ইমালসিফাই হয় না, ফলে সেগুলো দিয়ে মেকআপ রিমুভ করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়। কিন্তু আপনারা যখন স্কিন ক্যাফে মেকআপ ক্লেনজিং অয়েল অ্যাপ্লাই করবেন, তখন দেখতে পাবেন এটি খুব ইজিলি ইমালসিফাই হয়ে যাচ্ছে। ওয়াটার প্রুফ মাশকারা, ম্যাট লিপস্টিক, ফাউন্ডেশন সবই ক্লিন করা যায় খুব অল্প সময়েই।
কীভাবে ব্যবহার করি?
আমি ডাবল ক্লেনজিং করার জন্য রেগুলারলি এই প্রোডাক্টটি ইউজ করি। আমার সুপার সেনসিটিভ স্কিনে এই অয়েলটি খুব ভালোভাবে স্যুট করেছে। বাসার বাইরে যেতে হয় বলে আমাকে প্রতিদিন সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করতে হয়। আবার মাঝেমধ্যে বিভিন্ন অকেশনে পার্টি মেকআপও করতে হয়। এই অয়েল ক্লেনজার ইউজ করলে খুব কম সময়েই স্কিন থেকে যেকোনো মেকআপ কিংবা সানস্ক্রিন রিমুভ হয়ে যায়।
১) স্কিন ক্যাফে মেকআপ ক্লেনজিং অয়েল দিয়ে ডাবল ক্লেনজিং করার জন্য শুরুতেই বোতলটি ভালোমতো ঝাঁকিয়ে নিতে হবে।
২) কটন প্যাডে কয়েক ড্রপ অয়েল নিয়ে আই এরিয়া, লিপস, ফেইস মেকআপ আস্তে আস্তে চেপে ক্লিন করে নেই। এক সোয়াপেই সব মেকআপ ক্লিন হয়ে যায়। কটন প্যাডের বদলে হাতের আঙুল দিয়েও ফেইসে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে হাত ও ফেইস দু’টোই ড্রাই রাখতে হবে।
৩) তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং রেগুলার ফেইস ওয়াশ ইউজ করুন। ব্যস, ডাবল ক্লেনজিং ডান!
একনে প্রন স্কিনে ব্যবহার করা যাবে কি?
যাদের একনে প্রন বা সেনসিটিভ স্কিন, তাদের ক্ষেত্রে ফেইসে অয়েল বেইজড প্রোডাক্ট ইউজ করলে বাজেভাবে অ্যালার্জিক রিয়্যাকশন হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে আবার একনে বেড়েও যেতে পারে। তাই এই স্কিন টাইপের বেশিরভাগ মানুষ ডাবল ক্লেনজিং করতে ভয় পান। তাদের জন্য বলছি-
১) স্কিন ক্যাফে মেকআপ ক্লেনজিং অয়েলে কোনো আর্টিফিশিয়াল কালার, হার্মফুল কেমিক্যাল কিংবা অ্যালকোহল নেই। তাই এটা কমপ্লিটলি সেইফ! আপনি নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন।
২) পাশাপাশি এই মেকআপ ক্লেনজিং অয়েল মাইল্ড হওয়ায় এটি আপনার স্কিন ড্রাই আউট না করেই স্কিনে থাকা মেকআপ বা সানস্ক্রিন রিমুভ করে দেয়। আবার এটির নন কমেডোজেনিক ফর্মুলার কারণে পোরস ক্লগ হয়ে যাওয়ারও কোনো চান্স নেই।
আমার সেনসিটিভ স্কিনের জন্যও এটা ব্লেসিং
আমার স্কিন বরাবরই সেনসিটিভ, তারপরও এটি ইউজ করার পর আমার স্কিনে কোনো সাইড ইফেক্ট হয়নি। এটি ইউজ করলে স্কিনে কোনো এক্সট্রা ড্রাইনেসও ফিল করিনি। বরং আমার স্কিন খুব সফট ও স্মুথ মনে হয়েছে। ওয়াটার প্রুফ মেকআপও প্রোপারলি ক্লিন হয়। তাই এটি আমার স্কিনকেয়ার রুটিনের একটি হলি গ্রেইল প্রোডাক্ট! আপনার স্কিন টাইপ যেটাই হোক, এই ক্লেনজিং অয়েলটি চোখ বন্ধ করে বেছে নিতে পারেন।
যদি আপনারা ভালো কোয়ালিটির একটি ক্লেনজিং অয়েল ট্রাই করতে চান, তাহলে এই প্রোডাক্টটি ইউজ করে দেখতে পারেন। স্কিন কেয়ার, হেয়ার কেয়ার কিংবা যেকোনো মেকআপ আইটেম পারচেজ করার জন্য আমার ভরসার জায়গা শপ.সাজগোজ.কম। আপনারাও চাইলে ভিজিট করতে পারেন সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ কিংবা সাজগোজের যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার আর উত্তরার পদ্মনগরের ফিজিক্যাল স্টোরে। আপনাদের পছন্দের ক্লেনজিং অয়েল কোনটি, কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।
ছবি- সাজগোজ