মেকাপ করতে গেলে যে প্রোডাক্টটির কথা সবার আগে মনে পড়ে তা হলো ফাউন্ডেশন । ফাউন্ডেশন নিয়ে তো আমাদের কনফিউশনের শেষ নেই । বিশেষ করে যখন ফাউন্ডেশন কিনতে যাই । শেড নিয়ে সবাই-ই কমবেশী কনফিউশনে থাকে । তবে শেড ম্যাচ করার পাশাপাশি আর একটি বিষয় জানাও কিন্তু খুবই জরুরী । তা হলো স্কিনের আন্ডারটোন ।
তাহলে প্রথমেই জেনে নিই, স্কিন আন্ডারটোন জিনিসটা আসলে কী? আন্ডারটোন হলো আমাদের স্কিন শেডের ভেতরে থাকা অন্য আর একটি রঙ যা, আমাদের আসল স্কিনের রংয়ের উপরে একটা হালকা ছায়ার মতো ফেলে ।
আন্ডারটোন ৩ ধরণের হয় –
(১) ওয়ার্ম আন্ডারটোন
(২) কুল আন্ডারটোন
(৩) নিউট্রাল আন্ডারটোন
ফাউন্ডেশন নির্বাচনে আন্ডারটোন কেন জরুরী ?
আমরা যখন ফাউন্ডেশন ব্যবহার করি তখন প্রায়ই দেখা যায়, ফাউন্ডেশনটি লাগানোর পরই দেখতে কেমন গ্রে কালার লাগছে । আবার অনেক সময় অতিরিক্ত ইয়োলো / অরেঞ্জ কালারের মতো লাগে । এর কারণ হচ্ছে ভুল আন্ডারটোনের ফাউন্ডেশন । আপনার স্কিন ওয়ার্ম আন্ডারটোন হলে কুল টোনের ফাউন্ডেশন ব্যবহারে আপনাকে গ্রে দেখতে লাগবে । তাই সঠিক ফাউন্ডেশন নির্বাচনে আন্ডারটোন জানা খুবই জরুরী ।
কীভাবে নিজের আন্ডারটোন নির্ধারণ করবেন ?
- আপনার হাতের কব্জির উল্টোদিকে খেয়াল করুন । সেই দিকটাতে সবারই শিরা/ধমনী খুব ভালোভাবে বোঝা যায় ।
- আপনার শিরার রঙ এর দিকে খেয়াল করুন ।
- আপনার শিরার রঙ যদি সবুজ হয়, তাহলে আপনার আন্ডারটোন ওয়ার্ম।
- আপনার শিরার রঙ যদি হয় নীল/বেগুনী, তাহলে আপনার আন্ডারটোন কুল।
- আর যদি আপনার শিরার রঙ এই কালারগুলোর মধ্যে বোঝা না যায়, তবে আপনার আন্ডারটোন নিউট্রাল ।
এছাড়াও আপনার স্কিনে যদি সহজেই সানট্যান হয় তবে আপনি ওয়ার্ম অথবা নিউট্রাল আন্ডারটোনের । আর না হলে আপনি কুল আন্ডারটোনের । তাছাড়া আপনি আরো একটি পরীক্ষা করতে পারেন । এজন্যে সূর্যের আলোতে গিয়ে দেখতে হবে আপনাকে গোল্ডের গয়নায় বেশী মানায়, নাকি সিলভারের গয়নায় । যদি আপনাকে গোল্ডে বেশী মানায়, তবে আপনার ওয়ার্ম আন্ডারটোন । আর যেদিন সিলভারে বেশী মানায়, তবে আপনি কুল আন্ডারটোন ।
কীভাবে সিলেক্ট করবেন সঠিক আন্ডারটোনের ফাউন্ডেশন ?
– আপনি ওয়ার্ম আন্ডারটোন হলে, ফাউন্ডেশন কেনার সময় ফাউন্ডেশনের কালারে খেয়াল করে দেখুন, তাতে যদি যদি হালকা ইয়োলো/ গোল্ডেন/ অরেঞ্জ আভা দেখতে পান, তবে সেটিই ওয়ার্ম টোনের ফাউন্ডেশন, যা আপনার জন্যে সঠিক ।
– আপনি যদি কুল আন্ডারটোনের হন, তবে ফাউন্ডেশনের কালার খেয়াল করুন । যদিন তাতে হালকা পিংক/ ব্লু আভা দেখতে পান। তবে সেটি কুল টোনের ফাউন্ডেশন । যা আপনার জন্যে সঠিক।
– আর আপনি নিউট্রাল আন্ডারটোনের হলে, ফাউন্ডেশনের টোন আপনার জন্যে কিছুই ম্যাটার করবে না । আপনি যেটা ইচ্ছা সেটাই ব্যবহার করতে পারেন । সবই আপনাকে মোটামুটি স্যুট করবে । তবে, অনেক ব্রান্ডেরই নিউট্রাল আন্ডারটোনের ফাউন্ডেশন আছে । সেগুলোও কিনতে পারেন।
তবে একটা কথা বলে রাখি, ফাউন্ডেশন এর শেড এবং আন্ডারটোন কিন্তু এক জিনিস নয় । এই দুটি বিষয় অনেকেই গুলিয়ে ফেলেন । তাই আগেই ক্লিয়ার করে দেই। শেড হলো আপনার স্কিনের আসল রঙ, আর আন্ডারটোন হলো আপনার আসল রঙের নিচে লুকিয়ে থাকা হালকা শ্যাডো/আভা । আর এই দুটো বিষয় খেয়াল রেখেই আসলে ফাউন্ডেশন কিনতে হয়।
এবার ফাউন্ডেশন কেনার পালা! সেক্ষেত্রে আপনি যদি আপনাকে কোন শেডের ফাউন্ডেশন মানায় তা আগে থেকে জেনে থাকেন তবে স্যাফায়ার থেকে ঘরে বসেই অর্ডার করতে পারেন অন্যদিকে যারা জানতেন না তারা আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ার পর স্কিন আন্ডারটোন এবং শেড সম্পর্কে আইডিয়া পেয়ে গেছেন। সাশ্রয়ী মূল্যে তিনটি আন্ডারটোনেই এল এ গার্লের দারুণ কিছু ফাউন্ডেশন পেয়ে যাবেন এখানে।
ছবি – বিউটিলিশ ডট কম , স্টাইলক্রেজ ডট কম
লিখেছেন – জান্নাতুল মৌ