গ্লোয়িং ও হেলদি লুকিং স্কিন পেতে তো আমরা প্রত্যেকেই চাই। কিন্তু অনেক সময় বিভিন্ন কারণে স্কিন কন্ডিশন এত খারাপ হয়ে যায় যে তখন আয়নায় নিজেকে দেখলেই মনটা খারাপ হয়ে যায়! এমন অবস্থায় আপনার স্কিনের জন্য বেস্ট সল্যুশন দিতে পারে ভিটামিন ই। কেননা এই ভিটামিন স্কিনের বিভিন্ন সমস্যা ফিক্স করে দিতে পারে একদম ম্যাজিকের মতো! স্কিনকেয়ার রুটিনে ভিটামিন ই ইনক্লুড করলে আপনারা কীভাবে বেনিফিটেড হতে পারেন সে বিষয়ে বিস্তারিত জানবো আজকের আর্টিকেলে।
কেমন ধরনের ভিটামিন এটি?
ভিটামিন মূলত দুই ধরনের হয়। এক ধরনের ভিটামিন সরাসরি পানিতে মিশে যায়, যেমন ভিটামিন সি। আরেক ধরনের ভিটামিন রয়েছে যেটি চর্বিতে বা ফ্যাটে দ্রবীভূত হয়। সহজ কথায় ভিটামিন ই হলো ফ্যাট বা চর্বিতে দ্রবণীয় একটি ভিটামিন গ্রুপ। পাশাপাশি এতে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। ভিটামিন ই আট রকম হলেও স্কিনকেয়ারের জন্য মেইনলি দুই ধরনের ভিটামিন ই ইউজ করা হয়। যেগুলো হলো টকোফেরিল অ্যাসিটেট ও টকোফেরোল। স্কিনকেয়ারের ক্ষেত্রে ভিটামিন ই এর সবচেয়ে কমন কিছু সোর্স হলো ভিটামিন ই ক্যাপসুল, ভিটামিন ই যুক্ত বিভিন্ন প্রোডাক্ট যেমন ময়েশ্চারাইজার, সিরাম, ক্লেনজার, শিট মাস্ক ইত্যাদি।
অ্যান্টি অক্সিডেন্টের কথা প্রায়ই শোনা যায়। এখন প্রশ্ন হলো অ্যান্টি অক্সিডেন্টের কাজ কী? অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ফ্রি-রেডিক্যালস নিউট্রিলাইজ করে অর্থাৎ কেমিক্যাল, ধুলাবালি, সূর্যের আলো থেকে আসা বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান থেকে আমাদের স্কিন ও চুলকে রক্ষা করে। ভিটামিন ই অ্যান্টি অক্সিডেন্টের খুব ভালো একটি সোর্স।
স্কিনকেয়ার রুটিনে ভিটামিন ই
ভিটামিন ই স্কিনকে হেলদি রাখে, সেই সাথে স্কিনের সুরক্ষাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিগেইনার লেভেল থেকে শুরু করে অ্যাডভান্স স্কিনকেয়ারে এই এলিমেন্টটি ইনক্লুড করতে পারেন। স্কিনকেয়ার রুটিনে ভিটামিন ই নিয়মিত ইউজ করলে যে বেনিফিটগুলো পাবেন, সেগুলো দেখে নিন তাহলে।
১) স্কিনে সহজে পড়বে না বয়সের ছাপ
আমরা মেয়েরা প্রায়ই ভাবি, “ইশ! যদি স্কিনে এজিংয়ের ছাপ না পড়তো, তাহলে কতই না ভালো হতো!” স্কিনে যখন এজিং সাইনস চলে আসে অথবা বয়স হওয়ার আগেই রিংকেলস ও ফাইন লাইনস পড়তে শুরু করে, তখন স্কিন দেখতে কেমন যেন নিষ্প্রাণ লাগে, তাই না? ভিটামিন ই ফেইসের ভিজিবল এজিং সাইনস কমিয়ে স্কিনের ইয়াংগার লুক ধরে রাখতে হেল্প করে। তাই স্কিনকেয়ার রুটিনে ভিটামিন ই ইনক্লুড করলে ইয়ুথফুল লুক মেনটেইন করতে পারবেন।
২) স্কিন সবসময় থাকবে ময়েশ্চারাইজড ও বেবি সফট
আপনার স্কিন টাইপ ড্রাই, অয়েলি বা কম্বিনেশন – যেটাই হোক না কেন, যদি স্কিন প্রোপারলি ময়েশ্চারাইজড না থাকে, তাহলে যতই স্কিনকেয়ার করুন না কেন কোনো ইম্প্রুভমেন্ট হবে না। আবার স্কিন যদি ময়েশ্চারাইজড না হয়, তাহলে দেখবেন মেকআপ করার সময় প্রোডাক্টস ঠিকমতো সেট হচ্ছে না! ভিটামিন ই ফ্যাটে দ্রবণীয় হওয়ায় এটি আমাদের স্কিনের ডিপ লেয়ারে যেয়ে স্কিনকে ডিপলি ময়েশ্চারাইজড রাখতে হেল্প করে। তাই স্কিনকেয়ার রুটিনে এই ভিটামিন ইনক্লুড করলে সবসময় স্কিন থাকবে বেবি সফট। পাশাপাশি স্কিনে ন্যাচারাল গ্লোও দেখতে পাবেন।
একইসাথে স্কিন অতিরিক্ত ড্রাই হওয়ার কারণে ফ্লেকিনেস ও ইচিনেসের প্রবলেম যাদেরকে ফেইস করতে হয়, তারা যদি নিয়মিতভাবে ভিটামিন ই যুক্ত প্রোডাক্ট ইউজ করেন, তাহলে এই সমস্যা থেকে রিলিফ পাবেন। কারণ ভিটামিন ই ড্রাইনেস কমাতেও হেল্প করে।
৩) সানট্যান ও ডার্ক স্পট রিডিউস হয়ে স্কিন হবে ইভেন টোনড
আমাদের দেশে গরম ও পল্যুশন একটু বেশিই। দিনের বেলায় বাইরে প্রখর রোদ থাকায় কম বেশি সবারই স্কিনে সানট্যান দেখা যায়। তখন স্কিন স্বাভাবিকভাবেই উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফেলে। আবার যাদের একনে প্রন স্কিন, তাদের ফেইসে একনে বা ব্রণ হওয়ার পর অনেক সময় ডার্ক স্পট দেখা যায়, যা সহজে দূর হয় না। ভিটামিন ই-এর হিলিং প্রোপারটিজ থাকায় এটি স্কিনের সানট্যান, ডার্ক স্পট বা পিগমেন্টেশন কমায় এবং স্কিনটোন ইভেন করে তোলে। তাহলে বুঝতেই পারছেন স্কিনকেয়ার রুটিনে ভিটামিন ই ইনক্লুড করা কতটা জরুরী।
৪) ইরিটেশন ও রেডনেস কমিয়ে ইম্প্রুভ করবে স্কিন টেক্সচার
ভিটামিন ই ড্যামেজড স্কিন ব্যারিয়ারকে রিপেয়ার করতে দারুণ হেল্পফুল। একইসাথে অ্যান্টি ইমফ্ল্যামেটরি প্রোপারটিজ থাকায় এই ভিটামিন স্কিনের সেনসিটিভিটি কমাতেও ক্যাপাবল৷ এ কারণে রেগুলার স্কিনকেয়ারে ভিটামিন ই যুক্ত প্রোডাক্ট থাকলে স্কিনের ইরিটেশন ও রেডনেস কমবে। পাশাপাশি স্কিন টেক্সচারেও ভিজিবল ইম্প্রুভমেন্ট দেখতে পাবেন।
আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন স্কিনকেয়ার রুটিনে ভিটামিন ই ইনক্লুড করা হলে কতভাবে বেনিফিটেড হওয়া পসিবল! তবে এই বেনিফিটগুলো কখনোই রাতারাতি পাওয়া যাবে না, বরং ধৈর্য ধরে রেগুলা স্কিনকেয়ার রুটিন ফলো করতে হবে। তাহলেই স্কিনে পজিটিভ চেঞ্জ দেখতে পাবেন! অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
ছবি- সাজগোজ