হঠাৎ খেয়াল করলেন, আন্ডারআর্মস বেশ ডার্ক দেখাচ্ছে! ঠিকমত যত্ন না নেয়ার কারণে এই জেদি কালচেভাব চলে আসে, যেটা রিমুভ করা একটু কঠিন। আবার হেলথ ইস্যুর জন্যও কিন্তু আন্ডারআর্মস ডার্ক হতে পারে। আমাদের স্কিন ও হেয়ারের প্রতি আমরা যতটা কেয়ারিং, আন্ডারআর্মসের জন্য কিন্তু একইভাবে কেয়ার করা উচিত। বিভিন্ন কারণেই আন্ডারআর্ম এরিয়াতে পিগমেন্টেশনের প্রবলেম দেখা দিতে পারে। মেলানিন বেড়ে গেলে, কোনো হেলথ ইস্যুর কারণে যেমন ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত ওজন, হরমোনাল ইমব্যালেন্সের কারণে হতে পারে। আবার ব্যাকটেরিয়াঘটিত ইনফেকশনের কারণেও হতে পারে। চলুন তাহলে এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেই। আজকের আর্টিকেলে আমরা জেনে নিবো কেন আন্ডারআর্মস ডার্ক হয়ে যায় এবং কীভাবে এই ডার্কনেস প্রিভেন্ট করা যায়। সাথে জেনে নিবো কোন ইনগ্রেডিয়েন্টগুলো ব্যবহার করলে আন্ডারআর্মস ব্রাইট হবে।
কেন আন্ডারআর্মস কালো হয়ে যায়?
১) হাইপার পিগমেন্টেশন
এশিয়ানদের মধ্যে স্কিন মেলানোসাইট সেলগুলো সাইজে অনেক বড় হয়ে থাকে, ফলে তা খুব সহজেই এক্সপ্যান্ড হয়ে যায়, আর এজন্যই আমাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাইপার পিগমেন্টেশনের সমস্যাটা একটু বেশিই দেখা যায়। আন্ডারআর্ম বা বগলেও পিগমেন্টেশনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
২) অ্যাকানথোসিস নিগ্রিকানস
এই টার্মটি আমাদের অনেকের কাছে অপরিচিত। ডায়াবেটিস এবং অতিরিক্ত ওজনের জন্য শরীরের কিছু অংশে কালচে ছোপ পরে যায়। ডায়াবেটিস হলে ইনসুলিন লেভেল কন্ট্রোলে না থাকার কারণে আন্ডারআর্মে ও শরীরের ভাঁজগুলোতে কালচে দাগ হয়ে যায়। আরেকটি কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত ওজন। বডিতে বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষ করে গলা, ঘাড় ও বগলে কালো কালো প্যাচ দেখা যায়। এই স্কিন কন্ডিশনকেই বলা হয় অ্যাকানথোসিস নিগ্রিকানস।
৩) ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ
ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির পেলেও আন্ডারআর্মস কালো হয়ে যেতে পারে। ঘাম, ময়লা ঠিকমত পরিস্কার না হওয়ার ফলে ব্যাকটেরিয়ার গ্রোথ বৃদ্ধি পায়। এছাড়া ঐ স্থানে হেয়ার গ্রোথ বেড়ে গেলে এবং প্রোপারলি রিমুভ না করলে সেখানে জীবাণুর সংক্রমণ হয়, এতেও আন্ডারআর্ম কালো হয়ে যায়।
ডার্ক আন্ডারআর্মস ব্রাইট করার উপায়
এক্সফোলিয়েট করা
ডেড সেলস ঠিকমত পরিষ্কার না হলে হাইপার পিগমেন্টেশনের সমস্যা দেখা দেয়। তাই সপ্তাহে এক থেকে দুইবার আন্ডারআর্মস এক্সফোলিয়েট করতে হবে। এতে ডেড সেলস পরিষ্কার হবে, ব্যাকটেরিয়ার গ্রোথও কমে যাবে। আর স্কিনের কালচেভাব কমে আসবে ধীরে ধীরে। চিনি এবং মধু এক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ, আন্ডারআর্মের জন্য ন্যাচারাল এক্সফোলিয়েটর হিসেবে এটি ব্যবহার করতে পারেন। অথবা যেকোনো ফিজিক্যাল এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করলেও হবে।
ডার্ক আন্ডারআর্মসের সল্যুশনে ময়েশ্চারাইজেশন
আন্ডারআর্মেও ময়েশ্চারাইজার আপ্লাই করা উচিত। এতে স্কিন ময়েশ্চারাইজড এবং সফট থাকবে। অ্যালোভেরা জেলও ব্যবহার করতে পারেন। ৩০ মিনিট লাগিয়ে রেখে ভালো করে ধুয়ে ফেলবেন। ধীরে ধীরে কালচেভাব অনেকটাই কমে যাবে। এছাড়াও নারিশিং বডি লোশন অ্যাপ্লাই করতে পারেন।
ঘরোয়া প্যাক লাগানো
সপ্তাহে ১/২ দিন ফেইসের পাশাপাশি আন্ডারআর্মেও প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। এতে পিগমেন্টেশন কমে আন্ডারআর্মস এরিয়া উজ্জ্বল ও দাগমুক্ত হবে। প্যাক হিসাবে রোজ পেটাল পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এটি ন্যাচারালভাবে স্কিনকে এক্সফোলিয়েট করে, এছাড়া এতে ভিটামিন সি রয়েছে যা হাইপার পিগমেন্টেশন ও ড্রাইনেস কমিয়ে স্কিনকে ব্রাইট করে। রোজ পেটাল পাউডারের সাথে টকদই মিক্সড করে বগলে লাগিয়ে নিন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন।
লাইলাক স্পট লাইটনার
অনেকেরই আন্ডারআর্মের পিগমেন্টেশন বা দাগ এমনভাবে বসে যায় যে এক্সফোলিয়েট বা প্যাক ব্যবহার করলেও কিন্তু এই কালচেভাব কমতেই চায় না। বেশ কিছু ইনগ্রেডিয়েন্ট রয়েছে যেগুলো এই জেদি দাগ বা পিগমেন্টেশন কমাতে সাহায্য করে। যেমন-
- কজিক অ্যাসিড
- আলফা আরবুটিন
- ভিটামিন সি
- রেটিনল
- নিয়াসিমাইড
আন্ডারআর্মসের পিগমেন্টেশন কমাতে ব্যবহার করতে পারেন Lilac 3X spot lightener। কারণ এতে রয়েছে-
১) আলফা আরবুটিন- হাইপারপিগমেন্টশনের কারণে আমাদের স্কিনে যে অতিরিক্ত মেলানিন তৈরী হয়, আলফা আরবুটিন সেই অতিরিক্ত মেলানিন কমিয়ে আনে আর স্কিনকে করে ব্রাইট।
২) নিয়াসিনামাইড- নিয়াসিনামাইড পিগমেন্টেশন কমানোর একটি প্রুভেন ইনগ্রেডিয়েন্ট যা ডার্ক স্পটকে টার্গেট করে কাজ করে।
৩) পামকিন সিড অয়েল- হাইপারপিগমেন্টেশন কমাতে আরো একটি ম্যাজিকাল ইনগ্রেডিয়েন্ট আছে, সেটা হচ্ছে পামকিন সিড অয়েল। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিনস, মিনারেলস, ওমেগা ৩ ও ৬ ফ্যাটি এসিড থাকে, যা স্কিন সেলস ব্রাইট করে। এতে আরও আছে জিংক, জিংকে আছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রোপারটিজ যা টিস্যু রিপেয়ারে সাহায্য করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন?
ilac 3x spot lightner আন্ডারআর্মের কালচে এরিয়াতে দিনে ২ বার আপ্লাই করে ম্যাসাজ করুন। কিছুদিনের মধ্যে সুফল পাবেন আশা করি।
বোনাস টিপস
বাতাস চলাচল করতে পারে এমন ম্যাটেরিয়ালের পোশাক পরিধান করুন। এতে আপনার ফ্রেশ লাগবে। হেয়ার রিমুভাল প্রসেস হিসেবে ওয়াক্স করতে পারেন, এতে রুট থেকে হেয়ার উঠে আসবে এবং আন্ডারআর্মস থাকবে পরিষ্কার।
আন্ডারআর্মের স্থানটি খুবই সেনসেটিভ। যত্ন না নিলে হাইপারপিগমেন্টেশন বা কালচেভাব আসতে পারে। তাই ফেইসের সাথে সাথে আন্ডারআর্মসের যত্ন নেয়াও শুরু করে দিন। অথেনটিক স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট কিনতে আমার সবসময়ই ভরসা শপ.সাজগোজ.কম। অনলাইনে অর্ডার করে ঘরে বসেই প্রোডাক্ট হাতে পেয়ে যায়। সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর ( জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
তাহলে আজ এই পর্যন্তই। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
ছবি- সাজগোজ, সাটারস্টক