করোনাভাইরাসের কালো থাবা ছড়িয়ে পরছে সর্বত্রই। বিশ্বজুড়ে চলছে কোয়ারাইন্টাইন। গৃহবন্দি অবস্থায় আছে কোটিকোটি মানুষ। এই অবস্থায় শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙ্গে পরছেন অনেকেই। অনেকের মাঝেই সৃষ্টি হচ্ছে মনোমালিন্যের। এই অবস্থাতে মানসিকভাবে নিজেকে শক্ত রাখার পাশাপাশি তরতাজা ও ফিট থাকাটা অনেক জরুরি। কিন্তু ঘরবন্দি অবস্থাতে নিজেকে কিভাবে তরতাজা, ফিট ও হাসিখুশি রাখবেন সেটা নিয়েই ভাবছেন তো? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। গৃহবন্দি অবস্থাতেই মাত্র সাতটি অভ্যাসের মাধ্যমেই তরতাজা রাখতে পারবেন নিজেকে। তো জেনে নিন ৭টি অভ্যাস সম্পর্কে যার সাহায্যে ফিট থাকুন গৃহবন্দি অবস্থাতেই।
ফিট থাকুন গৃহবন্দি অবস্থাতেই
১) ব্যায়াম করা
দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য শরীর চর্চা বা ব্যায়াম করার কোনো বিকল্প নেই। প্রতিদিনের রুটিনে ১৫-২০ মিনিট শরীর চর্চার জন্য আলাদা করে রাখলে আপনার দেহ বেশ ঝরঝরে ও মেদহীন থাকবে এবং আপনি বেশ উৎফুল্ল অনুভব করবেন। শরীর চর্চার মাধ্যমে দেহের ক্লান্তিও দূর হয়। তাই গৃহবন্দি থাকাকালিন সময়ে ফিট থাকতে হলে শরীর চর্চার অভ্যাস গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি।
২) ঘর গোছানো
ঘরের টুকটাক কাজ করলে আপনার দেহ বেশ ঝরঝরে থাকে। ঘরের ছোটছোট কাজের মধ্যে বিছানা গুছানো ও ঘর ঝাঁট দেয়া অন্যতম। আপনার দিনটি যদি বিছানা গুছানোর মাধ্যমে শুরু হয় তাহলে আপনি মানসিকভাবে বেশ শান্তি বোধ করবেন। এতে আপনার দেহ অনেক তরতাজা হয়ে যাবে।
৩) মুঠোফোন ব্যবহার না করা
মুঠোফোন আমাদের দেহের জন্য সবচাইতে ক্ষতিকর একটি বস্তু। বিজ্ঞানী ও ডাক্তারদের মতে অতিমাত্রায় মোবাইল ফোন ব্যবহারে মানুষের মস্তিষ্ক ক্লান্ত হয়ে পরে ও মানুষ দুর্বলবোধ করে। তাই গৃহবন্দি থাকাকালিন সময়ে মুঠোফোনের ব্যবহার কমিয়ে দিলে আপনার সারাটা দিন বেশ প্রাণোচ্ছল কাটবে। কেননা ঘুম থেকে জেগে সবার আগে যদি আমরা মোবাইল ব্যবহার করি এতে নানান খারাপ খবর আমাদের চোখে পরে তখন সারাটা দিনই আমাদের খারাপ যায়। তাই ফিট থাকার জন্য ফোনের ব্যবহার কমিয়ে দেয়া অত্যন্ত জরুরি।
৪) সকালের নাস্তা
প্রাতঃরাশ কিংবা সকালের নাস্তা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। দিনের শুরুতেই যদি আপনি ভালোভাবে নাস্তা গ্রহণ করে নেন তাহলে সারাটা দিন আপনার দেহ বেশ কর্মচঞ্চল থাকবে। সারারাত ঘুমানোর পর আমরা যখন জাগি তখন আমাদের পেট একদমই খালি থাকে। তাই ঘুম থেকে জেগে সবার আগে সকালের নাস্তা গ্রহণ করাটা খুব জরুরি। কিন্তু এখন যেহেতু রমজান তাই সেহরিতে ভালো এবং হেলদি খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে আপনি থাকবেন ফিট এবং হেলদি।
৫) দৈনিক গোসল করা
দৈনিক গোসল করা সুস্থ থাকার একটি অন্যতম হাতিয়ার। ঘুম থেকে জেগে দৈনন্দিন কাজকর্ম শেষ করার পর গোসল করে নিলে আপনার সকল ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। আপনি বেশ পরিচ্ছন্ন ও ঝরঝরে বোধ করবেন। আর রোজ গোসল করার কারণে আপনার দেহ মন বেশ তরতাজা থাকবে ও আপনি খুব সহজেই জীবাণুমুক্ত থাকবেন।
৬) গাছ লাগানো
ঘরে বসে বসে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছেন? তাহলে শুরু করে দিন গাছ লাগানো। গাছ লাগানোর মাধ্যমে আপনার মন বেশ প্রফুল্ল ও কর্মচঞ্চল থাকবে। তাছাড়া গাছ পালার সবুজ রঙ আপনার মন ভালো রাখতে বেশ কার্যকরী একটা উপাদান। তাই প্রকৃতির কাছাকাছি চলে যাওয়ার জন্য ঘরের কোণেই বানিয়ে ফেলুন এক টুকরো বাগান। এতে আপনার মন বেশ তরতাজা হয়ে যাবে।
৭) বই পড়া
গৃহবন্দি থাকাকালীন সময়ে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। ঘরে বসে জ্ঞান অর্জন করার অন্যতম একটি মাধ্যম হচ্ছে বই পড়া। নিজের মনকে প্রশস্ত করার জন্য বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। তাই কোয়ারাইন্টানের এই দিনগুলোকে বিরক্তিকর ও বোরিং না বানিয়ে বই পড়ুন এবং মনকে প্রফুল্ল রাখুন।
করোনাভাইরাস বর্তমানে একটি আতঙ্কের নাম। এই আতঙ্ক থেকে বাঁচতে হলে ও সুরক্ষিত থাকতে হলে ঘরে থাকুন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন এবং দেহ ও মনকে প্রফুল্ল রাখুন। ঘর থেকে বের হওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন। নিজে সুস্থ থাকুন ও নিজের আপনজনদের সুস্থ রাখুন।
ছবি- সংগৃহীত: gulfnews