ঈদের আগে এক মাস ধরে সিয়াম সাধনা শুরু হবে আজ সেহরি খেয়ে। ঘরে ঘরে ঈদ আনন্দের আমেজের সাথে রোজার পুরো মাসেরও টুকিটাকি প্রস্তুতি চলে। বাজার-সদাই করে রাখা চাই আগে ভাগে। এবারের ইফতারে আগেকার বছরগুলির ধারাই চলবে নাকি খানিক ভিন্ন কিছু হবে, সেহেরির ভাতের সাথে তরকারিটা কেমন হলে ভালো হয়? গিন্নিরা সেই চিন্তায় আছেন এখন থেকেই। চিন্তা যে একটুখানি বেশি এবার। গরমটা দেখেছেন তো? গরমে রোজা রাখতে দীর্ঘ একটা সময় না খেয়ে থাকবেন যারা, তাদের খাবার-দাবারের একটু বিশেষ খেয়াল যে রাখতেই হবে!
এই প্রাণ ছটফট করা গরমে যে রোজকার দুইবেলার খাবারেই রুচি নেই অনেকের। দিনের দীর্ঘ একটা সময় রোজা রেখে তবে কেমন খাবার মুখে রোচবে? শরীর ঠিক থাকবেতো এই কদিনে? ভাবতে হবে সবকিছুই। কাজেই রমজান শুরু হতে হতেই ভেবে রাখুন আপনার করণীয় কী কী। কেমন ধারা চলবে এবার, কোনটা চলবে না একেবারেই। আপনার পক্ষে কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ হতে পারে।
গরমে রোজায় যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে
১) বেশী করে ফল ও সবজি খান
গরমের দিনে রোজা তাই ইফতার বলুন কিংবা সেহেরি, গরমকালের ফলের ঝুড়ি থাকা চাই খাবার টেবিলে। বাজারে টাটকা ফল মিলবে সেটা বলছি না। তবুও, যতোটা সম্ভব হয় তাজা ফল সংগ্রহ করবেন এই মাসের জন্য। ইফতারির আয়োজনে ভাজা খাবার যতো কম থাকবে আপনার টেবিলে, ততো বেশি থাকবে ফল। ফলের রস, শরবত, সালাদ সবকিছু খাবেন যতো বেশি পারবেন। শরীর অনেকটাই ফুরফুরে লাগবে। ক্লান্তি কমবে, গরমে প্রাণ জুড়োবেতো বটেই। পেটের খিদের সাথে মিটবে মনেরও।
২) হালকা আহার করুন
হালকা খাবারেই আহার সারুন। বিরিয়ানি, খিচুড়ি বা পোলাও এমন ভারী খাবারগুলি ঈদের দিনের জন্যেই তোলা থাকুক না হয়! মাংস দিয়ে অল্প তেলে বরং ফ্রায়েড রাইস করে নিতে পারেন চাইলে। সাথে থাকবে প্রচুর সবজি আর ডিমের স্বাদ। মূল কথা, সহজপাচ্য হতে হবে খাবারের উপাদান। তেলে-মশলায় কব্জি ডুবিয়ে খেয়ে মাথা ঘুরে পড়বেন না যেনো! এই ভুলখানা যেনো অনেকের না করলেই নয়।
৩) ইফতার ও সেহরিতে মিষ্টান্ন রাখুন
মিষ্টি জাতীয় খাবার কিছু না কিছু অবশ্যই রাখবেন ইফতারের টেবিলে। সম্ভব হলে সাথে সেহেরিতেও রাখুন মিষ্টান্ন। খেজুরতো রমজানে শরীরের ভীষণ বন্ধু এক খাবার। কাজেই ফল এবং মিষ্টি উপাদান হিসেবেও খেজুর বেছে নিন খাদ্য তালিকায়। দুধ-চাল আর বাদামের মিশ্রণে সাধারণ পায়েসও বেশ কাজের খাবার হবে আপনার ইফতারির আয়োজনে।
৪) কড়া পানীয় এড়িয়ে চলুন
কড়া পানীয়ের বদলে হালকা পানীয় চলুক না একটা মাস! চা ছাড়া দিন চলে না যাদের, লাল চায়ের অভ্যাস করুন না হয়। খুব ইচ্ছে হলে তবে এক কাপ দুধ চা, না হয় বাদই রাখুন কয়েকটা দিন। কোমল পানীয় মানে বাজারজাত পানীয় কিন্তু নয়, ঘরে তৈরি শরবত, ফলের রসের কথা বলছি।
সবশেষে যে কথাটি খুবই জরুরী, অবশ্যই সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতার করার বেলায় বেহিসেবি হবেন না। তাতে পেটের খিদে সাময়িক মিটলেও শরীরের কিন্তু বারোটাই বাজবে! স্বল্পাহারে সন্তুষ্ট থাকুন ইফতারে। রাতের খাবার এবং সেহেরিতে এটুকু পুষিয়ে নেয়া যাবেতো, তাই না? তাহলে আজ এই পর্যন্তই, সবাইকে মাহে রমজানের শুভেচ্ছা!
ছবি- সংগৃহীত: shutterstock