আমরা জানি চিনি বা মিষ্টি দাঁতের ক্ষয় এ দায়ী। তবে এর পেছনের কারণ নিয়ে নতুন মতবাদ সৃষ্টি হয়েছে। চিনি বা মিষ্টি খেলে দাঁতে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে, অ্যাসিড উৎপন্ন করে যা দাঁত ক্ষয়ের কারণ; কিন্তু এর আরো কারণ আছে। চলুন জেনে নেই দাঁতের ক্ষয় হওয়ার কারণ ও এর সুরক্ষায় কী খাবেন তা বিস্তারিত।
দাঁতের ক্ষয় হওয়ার কারণ
ড. ওয়েস্টন প্রাইস-এর গবেষণা অনুযায়ী, এবং আরও অনেক বিশেষজ্ঞদের মতে দাঁত ক্ষয়ের কারণ প্রধানত তিনটি –
১. খাবারে যথেষ্ট মিনারেল না থাকা।
২. খাবারে যথেষ্ট ফ্যাট সল্যুবল ভিটামিন (ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে) না থাকা।
৩. আপনার পরিপাকতন্ত্রের শোষণ করার মতো যথেষ্ট পুষ্টি না থাকা। ফাইটিক অ্যাসিড এক্ষেত্রে একটা বড় ভূমিকা রাখে।
একটা দীর্ঘ সময় ধরে আপনার খাবারে যদি ভিটামিন ও মিনারেল খুব কম থাকে বা একেবারেই না থাকে, কিংবা আপনার খাবারে যদি উচ্চমাত্রার ফাইটিক অ্যাসিডের পরিমাণ থাকে (শস্য, বীজ, বাদাম ইত্যাদি ধরনের খাবারে এই অ্যাসিড থাকে), তাহলে আপনার রক্তের ক্রিয়া-বিক্রিয়া ও ক্যালসিয়াম-ফসফরাসের অনুপাত ভারসাম্য হারাবে। যার ফলে আপনার শরীর আপনার হাড়, দাঁত ইত্যাদি থেকে মিনারেল গ্রহণ করতে শুরু করবে, ফলে আপনার দাঁত ও হাড় ক্ষয় হতে থাকবে।
চিনি বা মিষ্টি শরীরের পুষ্টি উপাদান নিঃশেষ করে। কিন্তু দাঁত বাঁচাতে শুধু মিষ্টি খাওয়া কমিয়ে দিলেই চলবে না, বরং আমাদের ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ প্রচুর খাবার খেতে হবে যা আমাদের দাঁতকে সুরক্ষা করবে। আসুন জেনে নিই দাঁতের সুরক্ষায় আমরা কী করতে পারি।
দাঁতের সুরক্ষায় খাবার
যেসব খাবারের ওপর প্রাধান্য দিতে হবে –
১. নারিকেল, দুগ্ধজাত খাবার (যেমন, মাখন ও পনির)।
২. তৃণভোজী প্রাণীর মাংস (আমাদের দেশে আমরা এটাই খাই), হাড়যুক্ত মাংস, কলিজা।
৩. সামুদ্রিক খাবার।
৪. শাকসবজি।
খেয়াল রাখতে হবে, আপনার খাদ্যে শিম, বাদাম, ডাল ইত্যাদি কী পরিমাণে আছে। এসব খাবারে ফাইটিক অ্যাসিড থাকে। এসব খাবেন না, তা নয়, পরিমিত ও প্রয়োজন অনুযায়ী খাবেন। প্রসেসড খাবার যেগুলোতে প্রচুর চিনি ও ময়দা আছে, সেসব খাবার যত কম খাওয়া যায়, তত দাঁতের জন্য ভালো।
সাপ্লিমেন্ট হিসেবে যা খেতে পারেন –
১. কড লিভার অয়েল। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ডি এবং কে আছে।
২. ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার। ম্যাগনেসিয়াম ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের কার্যক্ষমতা বাড়ায়।
৩. জিলাটিন- যদি হাড়সমৃদ্ধ খাবার খেতে না পারেন, জিলাটিন খেতে পারেন অল্টারনেটিভ হিসেবে। এটি মাড়ি ও পরিপাকের জন্য উপকারী।
সবার আগে একবার আপনার ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে নিন। আপনি ফিরে পান মুক্তোঝরা হাসি।
সুত্রঃ লিভিংট্র্যাডিশনালিডটকম।
ছবিঃ সাটারস্টক