ত্বকের কালচে দাগ, ব্রণের দাগ বা রোদের কারণে হওয়া পিগমেন্টেশন দূর করতে দামী স্কিনকেয়ারের পিছনে টাকা খরচ করার আগে জেনে নিন—সঠিক একটি উপাদান ব্যবহার করলেই ত্বকের দাগছোপ হবে অনেকটাই কম! আজ জানাবো এমন কিছু শক্তিশালী উপাদানের কথা, যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ও দাগ দূর করতে কার্যকর এবং বৈজ্ঞানিকভাবেও কিন্তু এগুলো এখন প্রমাণিত।
ত্বকের দাগছোপ কমিয়ে আনবো কীভাবে?
স্কিনকেয়ারে অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস ব্যবহার এখন নতুন কিছু নয়! অনেকেই এখন সিরাম বা অ্যাম্পুল ব্যবহার করছেন। কিন্তু ত্বকের প্রয়োজন অনুসারে সঠিক উপাদান বেছে নেওয়া খুবই জরুরি। ত্বকের দাগছোপ দূর করতে কোন কোন উপাদান ম্যাজিকের মতো কাজ করে, চলুন দেখে নেই এখনই।
১. ভিটামিন সি (Ascorbic Acid)
ভিটামিন সি হলো ত্বকের জন্য অন্যতম শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এটি কোলাজেন উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে, যার ফলে আপনি পাবেন ইয়াংগার লুকিং স্কিন। ভিটামিন সি মেলানিন উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে। নিয়মিত ভিটামিন সি সিরাম বা ক্রিম ব্যবহার করলে দাগছোপ দ্রুত হালকা হয়ে যাবে। সকালে সানস্ক্রিন ব্যবহারের আগে ভিটামিন সি সিরাম অ্যাপ্লাই করতে পারেন, এতে ভালো ফলাফল পাবেন।
২. গ্লাইকোলিক অ্যাসিড
বয়স ২০ এর বেশি হলে সাপ্তাহিক স্কিনকেয়ার রুটিনে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড যোগ করতে পারেন। গ্লাইকোলিক অ্যাসিড হল AHA (Alpha Hydroxy Acid), যা ত্বকের মৃত কোষ দূর করে নতুন কোষ গঠনে সাহায্য করে। এটি হাইপার পিগমেন্টেশন আর সানবার্ন কমিয়ে স্কিন ইভেন টোনড করতে হেল্প করে। এই উপাদানটি দাগছোপ হালকা করে এবং সেই সাথে ত্বককে মসৃণ করে। বডির বিভিন্ন এরিয়া যেমন- হাঁটু, আন্ডারআর্ম, কনুই- এগুলো দাগমুক্ত রাখতে এই উপাদানটি ম্যাজিকের মতো কাজ করে।
৩. নিয়াসিনামাইড
নিয়াসিনামাইড বা ভিটামিন বি৩ ত্বকের দাগছোপ কমাতে খুবই কার্যকর। এটি ত্বকের মেলানিন উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে, হাইপারপিগমেন্টেশন কমায় ও ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে। এছাড়া এটি ত্বকের অতিরিক্ত সেবাম সিক্রেশন কমিয়ে আনে, ব্রণ আর ব্রণের দাগ দূর করতেও সাহায্য করে।
৪. কোজিক অ্যাসিড
কোজিক অ্যাসিড এক ধরনের ন্যাচারাল স্কিন লাইটেনিং ইনগ্রেডিয়েন্ট, যা ত্বকের মেলানিন উৎপাদন কমিয়ে হাইপারপিগমেন্টেশন ও ব্রণের দাগ হালকা করে। এটি অনেক স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টে এখন ব্যবহার করা হয়, বিশেষ করে স্পট ট্রিটমেন্ট হিসেবে।
৫. আলফা আরবুটিন
জেন্টল কিন্তু পাওয়ারফুল ব্রাইটেনিং এজেন্ট হিসেবে এর কদর আছে। যারা সেনসিটিভ স্কিন নিয়ে চিন্তিত, তাদের জন্য আলফা আরবুটিন সবচেয়ে সেইফ। এটি ত্বকের মেলানিন উৎপাদন কমিয়ে দাগছোপ হালকা করে এবং উজ্জ্বলতা বাড়ায়। এটি নিয়াসিনামাইডের সাথে ব্যবহার করা হলে আরও ভালো ফল পাওয়া যায়। ধৈর্য সহকারে টানা কয়েক মাস ব্যবহার করলে নিজেই ত্বকের উজ্জ্বলতা দেখে চমকে যাবেন!
তাহলে বুঝতেই পারছেন, স্কিনকেয়ার রুটিনে এই উপাদানগুলোর একটি যোগ করলেই ত্বকের দাগছোপ কমতে শুরু করবে! তবে দ্রুত ফল পেতে হলে নিয়মিত ব্যবহার করতে হবে এবং সানস্ক্রিন ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক, কারণ এসব উপাদান ত্বককে সূর্যরশ্মির প্রতি সংবেদনশীল করে তোলে। তাহলে আজ এই পর্যন্তই!
ছবি- সাজগোজ
লেখা- তানিজা ইসলাম