উরুর ভেতরের অংশে র্যাশ, সেটা থেকে চুলকানি এ যেন বিব্রতকর এক অবস্থা! আমাদের মধ্যে যারা এই সমস্যা ফেইস করেছে, তারা বুঝতে পারবে যে পাবলিক প্লেসে এটা কতটা ইরিটেটিং। আপনি কাউকে বলতেও পারছেন না আবার প্রবলেমটার সল্যুশনও হচ্ছে না। অ্যালার্জির সমস্যা, দীর্ঘ সময় ভেজা কাপড় পরে থাকা, স্কিনে ভুলভাল প্রোডাক্ট অ্যাপ্লাই করা কিংবা অতিরিক্ত ঘামের জন্য উরুর ভেতরের অংশের র্যাশ হতে পারে। এই ডিসকমফোর্ট থেকে মুক্তির উপায় জানতে ইচ্ছা করছে কি? বাসায় বসে অল্প কিছু উপাদান দিয়ে আপনি এই প্রবলেম থেকে রিলিফ পেতে পারেন। চলুন, জেনে নিই উরুর ভেতরের অংশের র্যাশ দূর করার কিছু ঘরোয়া উপায়।
ঘরোয়া উপায়ে উরুর ভেতরের অংশের র্যাশের সমাধান
আপনার হাতের কাছে এমন কিছু উপকরণ আছে যা দিয়ে সহজেই এই সমস্যা থেকে আপনি মুক্তি পেতে পারেন। কোন উপাদান কীভাবে ব্যবহার করলে দ্রুত সমাধান হয়, শুধু সেটাই জেনে নিতে হবে।
১) মধু ও গোলাপ জল
মধুতে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট কনটেন্ট (content) র্যাশ জাতীয় স্কিন প্রবলেম থেকে আপনার ত্বককে সুরক্ষা দেয়। মধু অ্যান্টিসেপটিক (Antiseptic) যেটা উরুর ভেতরের অংশের র্যাশ দূর করার ক্ষেত্রে চমৎকার কাজ করবে। দুই টেবিল গোলাপ জলে মধু মিশিয়ে নিয়ে উরুর ভেতরের অংশে লাগিয়ে রাখুন। এটা শুকিয়ে গেলে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলবেন। প্রতিদিন এভাবে লাগিয়ে নিলে এর ফলাফল আপনি কিছুদিন পরেই দেখতে পারবেন।
২) ওটমিল
সুদিং আর ময়েশ্চারাইজিং প্রোপারটিজ থাকার জন্য ওটমিল আপনার ত্বকের জন্য উপকারী। এক কাপ ওটমিল ভালোভাবে ব্লেন্ড করে পানির সাথে গুলিয়ে উরুতে মালিশ করবেন। ১০-১৫ মিনিট পর মুছে ফেলবেন। সপ্তাহে ২ দিন করে অ্যাপ্লাই করুন। চাইলে একটু টকদই মিলিয়েও প্যাক বানাতে পারেন। এটা ন্যাচারাল এক্সফোলিয়েট হিসাবে কাজ করবে আর ডেড সেল রিমুভ করে স্কিন পরিষ্কার রাখবে। অনেক সময় ঘাম এবং স্কিনে জমে থাকা ময়লা থেকে র্যাশ হয়, তাই সব সময় স্কিন ক্লিন রাখবেন। তাই উরুর ভেতরের র্যাশ কমানোর জন্য এই উপাদানটি বেছে নিতে পারেন।
৩) অ্যালোভেরা ও টি ট্রি অয়েল
স্কিন প্রবলেমের কার্যকরী হারবাল রেমেডি হিসাবে অ্যালোভেরা যুগ যুগ ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে। ফ্রেশ অ্যালোভেরা থেকে জেল বের করে টি ট্রি অয়েল মিক্স করে অ্যাপ্লাই করে নিতে পারেন। এখন বাজারে অ্যালোভেরা জেল কনটেইনারে পাওয়া যায়, সেটাও সরাসরি লাগাতে পারেন। এটা লাগিয়ে কিন্তু আপনি বাইরেও যেতে পারেন কারন এটা স্কিনে সুন্দর করে মিশে যায় এবং কোনো চিটচিটে ভাব থাকে না। উরুর র্যাশ কমিয়ে আনতে দিনে অন্তত দুইবার করে অ্যাপ্লাই করুন, এতে ভালো ফলাফল পাবেন।
৪) তুলসি পাতা পেস্ট
অবাক হচ্ছেন কি তুলসি পাতা এই লিস্টে দেখে? জি হ্যাঁ, এতে এমন কিছু উপাদান আছে যেটা স্কিনের ইচি (itchy) আর ফ্লেকি (flaky) অবস্থা থেকে আপনাকে রিলিফ দেবে। যখন র্যাশ শুকিয়ে আসে, স্কিন ভীষণ ড্রাই ফিল হয় সাথে ডেড সেলের আস্তরণ পরতে থাকে। তুলসি পাতার পেস্টে দু তিন ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে উরুতে অ্যাপ্লাই করুন, হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন কিছুক্ষণ। উরুতে আক্রান্ত স্থানে রসটা শোষিত হওয়ার জন্য সময় দিন। এতে ডিসইনফেকটেন্ট (disinfectant) প্রোপারটিজ আছে, দ্রুত সমাধান পাবেন।
৫) তেলের থেরাপি
অলিভ অয়েল ও আমন্ড অয়েল উরুর র্যাশ থেকে হওয়া জ্বলুনি কমাতে ম্যাজিকের মত কাজ করে। কারণ এগুলোতে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় ব্রণ, র্যাশের প্রকোপ কমাতে হেল্প করে আর স্কিনকে হেলদি রাখে। অনেকের উরুর চামড়া খসখসে হয়, বেশিক্ষণ হাঁটলে দুই উরুতে ঘষা খেয়ে সেখানকার চামড়া একটু ছুঁলে যায় বা র্যাশ ওঠে। যারা একটু হেলদি, এই সমস্যাটা তাদের বেশি হয়। পরিষ্কার কাপড় দিয়ে জায়গাটা মুছে নিয়ে তেল দিয়ে ম্যাসাজ করে নিলে উরুর ইচিনেস থেকে রিলিফ পাবেন।
ব্যস, জানা হয়ে গেল উরুতে র্যাশ কমানোর জন্য কোন উপাদানগুলো আপনাকে হেল্প করবে। সেই সাথে পারসোনাল হাইজিন মেনটেইন করবেন, পরিষ্কার কাপড় পরিধান করবেন আর অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা থাকলে বেবি পাউডার লাগিয়ে বাইরে যাবেন। তারপরও যদি এই র্যাশ না কমে বা বার বার ফিরে আসে তাহলে স্কিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।
ছবি- সংগৃহীত: ডাসবাস.কম