১ মাসেই লম্বা চুল কথাটি শুনে ভাবছেন হয়ত কোন প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন! তা নয় মোটেও। এ লেখায় আপনাদের জানাবো কি করে হোম মেইড মাস্ক দিয়ে এক মাসেই পাবেন লম্বা চুল। তার পূর্বে আমার নিজের কিছু সমস্যা ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি। আমার মামনি সবসময় বলেন নারীর সৌন্দর্য চুলে। লম্বা চুল সর্বদাই সকলের প্রিয়। সবার কথা অত জানি না তবে আমার নিজের লম্বা চুল ভীষন পছন্দ। আমার চুল বেশ লম্বাই ছিল। সবার কাছেই চুলের জন্যে আমার জনপ্রিয়তাটা একটু বেশিই ছিল। সবাই আমার চুল অনেক পছন্দ করত। গত বছর আমার টাইফয়েড হয়। আর এ কারণে আমার চুল এত বেশি পড়ে যে কেটে ফেলা ছাড়া কোন উপায় ছিল না। কষ্ট হওয়া সত্ত্বেও বাধ্য হয়েই চুলগুলো কেটে ফেলি। রোগ তো ভালো হয়ে গেল ঠিকই কিন্তু আমার চুল একদমই বড় হচ্ছিল না।
নিজের চুল না বাড়ার কষ্টটা আরও বেশি বেড়ে যেত যখন আশেপাশের সবাই চুলের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করত। অনেক কিছু ব্যবহার করেছি কিন্তু এই সমস্যার সমাধান পাচ্ছিলাম না। পরে আমার মামনি আমাকে একটি হেয়ার মাস্ক বানিয়ে দেন। যেটা ব্যবহার করে আমার চুল এক মাসের মধ্যেই অনেকটুকু বেড়ে উঠে। আজ আমি আপনাদের সাথে হেয়ার মাস্কটি কীভাবে বানাবেন এবং ব্যবহার করবেন তা শেয়ার করব। আসুন তাহলে জেনে নিই, হেয়ার মাস্কটি কীভাবে এবং কী কী দিয়ে তৈরি করবেন।
১ মাসেই লম্বা হবে চুল পেতে ঘরে তৈরি হেয়ার মাস্ক
হেয়ার মাস্কটি বানাতে যা যা লাগবে-
- ডিম- ১ টি
- অলিভ অয়েল – ১ টেবিল চামচ
- নারিকেল তেল – ১ টেবিল চামচ
- মধু – ১ টেবিল চামচ
মাস্কটি যেভাবে বানাবেন
প্রথমেই একটি পরিষ্কার পাত্র নিন। পাত্রে অলিভ অয়েল, নারিকেল তেল এবং মধু ভালো করে মিশিয়ে নিন। সবশেষে সেটায় ডিম দিয়ে আবারও ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার আপনার হেয়ার মাস্ক রেডি।
মাস্কটি যেভাবে ব্যবহার করবেন
অল্প অল্প করে মাস্কটি স্ক্যাল্পে লাগিয়ে নিন। এরপর চুলেও লাগিয়ে নিন। কমপক্ষে এক ঘন্টা লাগিয়ে রাখুন মাস্কটি। এক ঘন্টা পরে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চুল ভালো করে ধুয়ে নিন। মনে রাখবেন, কখনই এই মাস্ক লাগানোর পর চুল গরম পানি দিয়ে ধুবেন না। যাই হোক, চুল ধুয়ে নেয়ার পর আপনি শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন। ভালো ফলাফল পেতে মাস্কটি সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করুন। এক মাসের মধ্যে আপনি তাহলে আপনার চুলের পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবেন।
এই মাস্কে যে যে উপাদানগুলো ব্যবহার করা হয়েছে প্রতিটি উপাদানের রয়েছে অনেক বেশি গুনাগুন। আসুন তাহলে মাস্কে ব্যবহৃত উপাদানগুলোর গুণাগুণ সম্পর্কে জেনে নিই-
মাস্কে ব্যবহৃত উপাদানগুলোর গুণাগুণ
১. ডিম
চুলের অনেক ধরনের সমস্যার সমাধান হয় এই ডিম ব্যবহার করার ফলে। ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন, ফ্যাটি এসিড যা চুলকে নারিশ করে। এছাড়াও ডিম আপনার চুলকে করবে স্ট্রং। মাঝে মাঝে দেখা যায় চুল ফেটে যায় কিংবা ভেঙে যায়। ডিম ব্যবহার করলে এই ধরনের সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
২. নারিকেল তেল
নারিকেল তেল চুলের জন্যে সবসময়ই অনেক বেশি উপকারী। নারিকেল তেল ব্যবহারের ফলে চুল পড়া কমে চুলকে ময়েশ্চারাইজ করে এবং চুলকে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে।
৩. অলিভ অয়েল
অলিভ অয়েল চুলের শুষ্কতা দূর করে। চুলকে ড্যামেজ হওয়া থেকে রক্ষা করে। স্ক্যাল্প থেকে বিভিন্ন ময়লা দূর করতে সাহায্য করে। চুলকে হেলদি হতে সাহায্য করে এবং চুল বেড়ে উঠতে অলিভ অয়েল ও অনেক বেশি উপকারী।
৪. মধু
মধু এমন একটি উপাদান যা চুলের কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে এবং চুলকে অনেক বেশি মসৃণ করে। মধু একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা চুলের অনেক ধরনের সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকে।
১ মাসেই লম্বা চুল পেতে মাস্কটি ব্যবহার করে আমার চুলের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আর এক মাসের মধ্যেই সেই পরিবর্তনটা পেয়েছি আমি। আপনিও যদি কম সময়ে বাড়ন্ত চুল চান তবে এই মাস্কটি ব্যবহার করুন। আর হয়ে উঠুন লম্বা চুলের অধিকারী। মনে রাখবেন আপনি চাইলেই কিন্তু আপনার চুলকে করে তুলতে পারবেন পারফেক্ট।
আপনি চাইলে আপনার পছন্দমতো প্রোডাক্ট কিনতে পারেন অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে। আবার যমুনা ফিউচার পার্ক ও সীমান্ত স্কয়ার এ অবস্থিত সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপ থেকেও কিনতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি!
ছবিঃ সংগৃহীত – সাটারস্টক