মাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ | লক্ষণ, কারণ, রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা জানেন তো?

মাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ | লক্ষণ, কারণ, রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা জানেন তো?

pad

মেয়েদের সাধারণত ২১ থেকে ৩৫ দিন পর পর পিরিয়ড হয়ে থাকে। প্রতিটি পিরিয়ডেই একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে। ব্যক্তিভেদে পিরিয়ডের ব্যাপ্তিকাল ৩ দিন থেকে ৭ দিন পর্যন্ত হতে পারে। এগুলোর যে কোনটাতেই সমস্যা হতে পারে। পিরিয়ড নিয়ে তাই রোগ বালাই এর শেষ নেই। এই আর্টিকেলে আমি মূলত মাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বা রক্তপাত নিয়ে লেখার চেষ্টা করবো। আপনার সমস্যাগুলো চিনে নিয়ে সঠিক সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করাই এই লেখাটির উদ্দেশ্য।

২১ দিনের কম সময়ে অথবা ৩৫ দিনের বেশি সময়ে রক্তক্ষরণ হওয়া অথবা ৭ দিনের বেশি সময় ধরে রক্তক্ষরণ হলে আপনার কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়া উচিত। এর সাথে বয়স অনেক বড় একটা ব্যাপার হিসেবে কাজ করে। পিরিয়ড বা মাসিক শুরুর এবং শেষের সময়টাতে এই সমস্যাগুলো বেশি হয়। আমাদের দেশে ১২/১৩ বছর বয়সেই প্রথম পিরিয়ড শুরু হয় আর শেষ বা মেনোপজ এর বয়স সাধারণত ৪৫ থেকে ৫০ বছর।

Sale • Bath Time, Acne Treatment, Dull Skin Treatment

    মাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ার লক্ষণসমূহ

    আসুন লক্ষণগুলো জেনে নেই-

    ১) মাসে ২/৩ বার মাসিক বা ঋতুস্রাব হতে পারে

    ২) এক নাগাড়ে অনেকদিন ধরে চলতে পারে

    ৩) শুরু হওয়ার ১/২ দিন পরই শেষ হয়ে যায় এবং কয়েকদিন পর আবার শুরু হয়

    ৪) প্রতি ১ অথবা ২ ঘন্টায় কাপড় বা স্যানিটারি ন্যাপকিন একাধিক বার বদলালে

    ৫) আগে নিয়মিত হলেও এখন লক্ষ্যনীয়ভাবে অনিয়মিত হলে

    ৬) রাতের বেলা স্যানিটারি প্যাড বা কাপড় পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ে

    ৭) মাসিকের রক্তের সাথে রক্তের বড় চাকা গেলে

    ৮) অতিরিক্ত রক্তপাতের কারণে দৈনন্দিন জীবন যাত্রায় ব্যাঘাত ঘটা

    ৯) ক্লান্ত, অবসাদ অনুভব অথবা শ্বাসকষ্ট হয়

    এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

    মাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ার কারণসমূহ

    অনেক কারণেই এমন অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে পারে। যেমন-

    ১) হরমোনের অসামঞ্জস্যতা বা ভারসাম্যহীনতা

    ২) গর্ভধারণজনিত অনিয়মিত পিরিয়ড

    ৩) গর্ভনিরোধ বড়ি খাওয়ার ফলে অনিয়মিত পিরিয়ড

    ৪) শারীরিক ওজন বাড়লে বা কমলে অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে। অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি থাইরয়েড রোগ এবং পলিস্টিক ওভারিয়ান রোগের সম্ভাবনা বাড়ায়। আবার শারীরিক ওজন কমে গেলে তা ক্যান্সার, যক্ষারোগ বাড়াতে পারে।

    ৫) মানসিক চাপের কারণেও হতে পারে।

    ৬) জরায়ুর টিউমার এর ফলে হতে পারে।

    ৭) জরায়ুতে পলিপ হলে হতে পারে।

    ৮) এডেনোমায়োসিস (Adenomyosis)

    ৯) জরায়ুতে কপার টি (IUCD) ধারণ করলে (জন্ম নিয়ন্ত্রণকারী ডিভাইস)।

    জরায়ু মুখে ক্যান্সার মাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ার কারণ - shajgoj.com

    ১০) জরায়ু, ডিম্বাশয় অথবা জরায়ু মুখে ক্যান্সার হলে।

    ১১) বংশগতভাবে রক্তের রোগের ইতিহাস থাকলে।

    ১২) এন্ডোমেট্রিওসিস (Endometriosis)  রোগের কারণেও হতে পারে।

    ১৩) ওষুধের সাইড ইফেক্ট থেকেও হতে পারে।

    মাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা

    ১) রোগের ইতিহাস এবং মাসিক চক্র জানা

    ২) রক্ত গ্রুপিং ও অন্যান্য পরীক্ষা করা

    ৩) আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যান

    ৪) এন্ডোমেটরিয়াল বায়োপসি

    ৫) প্যাপ টেস্ট

    ৬) ডি এন্ড সি

    মাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে চিকিৎসা কি?

    রোগ নির্ণয়ের উপর ভিত্তি করে সাধারণত চিকিৎসা দেয়া হয়। এটা সার্জিক্যাল বা নন সার্জিক্যাল হতে পারে।

    আপনার করণীয়

     

    ১) নিয়মিত আপনার পিরিয়ড শুরুর দিনটির হিসাব রাখুন। ক্যালেন্ডারে দাগ দিয়ে রাখতে পারেন।

    ২) কতদিন পর্যন্ত থাকে, তার হিসাব রাখুন।

    ৩) কতগুলো প্যাড পরিবর্তন করতে হয়, তার হিসাব রাখুন।

    ৪) কোন শারীরিক দুর্বলতা বা অন্য কোন সমস্যা হলে তা চিকিৎসককে জানান।

    ৫) অতিরিক্ত রক্তপাত হলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম করতে হবে।

    ৬) অ্যাসপিরিন ঔষধ সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে।

    ৭) সঠিক সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।

    এভাবে লক্ষণগুলো চিনে রোগ নির্ণয়ের মাধ্যমে তার প্রতিকার করুন এবং সুস্থ ও রোগহীন জীবন যাপন করুন।

    ছবিঃ সংগৃহীতঃ সাটারস্টক

    324 I like it
    47 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort