জুসি ফলগুলোর উপকারিতা সব সময় শুধু খাওয়ার মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকেনা ত্বকে এর বাহ্যিক আপ্লিকেশনেরও অনেক গুরুত্ব আছে। আজ তাই এমনি এক রসালো ফল দিয়ে ফেসিয়াল করার উপায় বলে দেবো। যার নাম অরেঞ্জ ফেসিয়াল। চলুন এক নজরে দেখে নিই কমলায় কী কী পুষ্টি উপাদান আছে এবং এগুলোর উপকারিতা।
পুষ্টি উপাদান Sale • Face Wash, Masks & Peels, Sheet Mask |
উপকারিতা |
ভিটামিন সি |
ফ্রি রেডিকেলের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বক রক্ষা করে,ব্রণ দূরে রাখে,ত্বক উজ্জ্বল হয়। |
ক্যালসিয়াম |
নতুন কোষ গঠনে সাহায্য করে,ইচি স্কিন সারিয়ে তোলে। |
পটাশিয়াম |
ডিহাইড্রেট ত্বককে হাইড্রেট করে। |
ম্যানেসিয়াম |
ত্বকের কোষে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস প্রতিরোধ করে, উজ্জ্বল ত্বক গড়ে তোলে। |
অরেঞ্জ ফেসিয়ালের উপকারিতাঃ
– এর ফলে আপনার ত্বকের মরা কোষ দূর করে ত্বকে আনে উজ্জ্বলতা।
– ত্বককে হেলদি এবং নমনীয় করে তোলে।
– এই ট্রিটমেন্ট ব্লাড এবং লসিকানালীর সার্কুলেশন বাড়িয়ে দেয়।
– ত্বকের টেক্সচার, রঙের অনেকখানি পরিবর্তন ঘটে।
ক্লিনজ এবং এক্সফলিয়েসনঃ
প্রথমে ১ স্লাইস খোসাসহ গ্রেটেড আপেলের সাথে ২ টেবিল চামচ দই, ১ চা চামচ অলিভ অয়েল আর ১ চা চামচ কমলার রস একসাথে মিশিয়ে মুখে এবং গলায় হালকা হাতে সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করুন। তারপর কিছুটা সময় মুখে ঐভাবে রেখে দিন। এতে ক্লিনজার আপনার ত্বকের উপর কাজ করবে আর রক্ত সারকুলেশনের গতিকে আরও ত্বরান্বিত করবে। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এরপর এক্সফলিয়েসন করা জরুরী। এতে আপনার ত্বকের সব মরা কোষ দূর হবে আর যে মাস্ক দেয়া হবে তার উপকারিতা সম্পূর্ণ রূপে পাওয়া যাবে। কমলার খোসা রোদে শুকিয়ে নিন। তারপর মিহি করে গুঁড়ো করে নিন। তারপর ১ টেবিল চামচ গুঁড়োর সাথে ১ টেবিল চামচ টক দইয়ের পেস্ট মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন অথবা কমলার শুকনো খোসা চূর্ণের সাথে দুধের সর এবং গোলাপ জল মিশিয়ে স্ক্রাবিং এর কাজটি সেরে ফেলুন। তারপর উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
লোমকূপ ওপেন করার জন্য স্টিম করুনঃ
আপনার ত্বককে গভীর থেকে পরিষ্কার করার জন্য স্টিম নেয়া জরুরী। ১০-১৫ মিনিট ধরে গরম পানির ভাপ নিন মুখে।
ফেসিয়াল মাস্কের ব্যবহারঃ
এবার পালা ফেসিয়াল মাস্ক লাগানোর। আমি কয়েকটি মাস্কের কথা বলবো আপনারা আপনাদের আপনার ত্বকের ধরনের ভিত্তিতে মাস্ক বেঁছে নিবেন।
হলুদ গুঁড়া ও কমলার রসের মাস্কঃ
এই সহজ ট্রিটমেণ্টের মাধ্যমে আপনার ত্বকের রন্ধ্রের গভীর থেকে মৃত ত্বক কোষ পরিষ্কার করতে পারবেন। একটি বাটিতে ২ টেবিল চামচ হলুদ গুঁড়া এবং ১ টেবিল চামচ কমলার রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। তারপর ৪-৫ মিনিট মিশ্রণটি দিয়ে ত্বক ম্যাসেজ করুন। ১০ মিনিট মুখে উপর লাগিয়ে রাখুন তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই মাস্কটি সব ধরনের ত্বকেই ব্যবহার করা যাবে।
স্বাভাবিক ত্বকের অধিকারীরা এই মাস্কটি ব্যবহার করতে পারেন। এই মাস্ক রক্তসংবহন উদ্দীপক। ৩/৪ টেবিল চামচ কমলার রস এবং ২ টেবিল চামচ মধু একসাথে মিশিয়ে ৩০ মিনিটের জন্য মুখে লাগিয়ে রাখুন। তারপর প্রথমে উষ্ণ গরম পানি তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। মধু আমাদের ত্বকে আর্দ্রতা যোগায় সেই সঙ্গে কমলার রসের সংমিশ্রণ ত্বকের ভারসাম্য রক্ষা করে।
আপনার যদি তৈলাক্ত অথবা কম্বিনেশন ত্বক হয়ে থাকে তবে আপনি ক্লিনজিং এবং এক্সফলিয়েসনের পর এই মাস্কটি ব্যবহার করতে পারেন। ১ চামচ কমলার খোসা চূর্ণের সাথে ১ চামচ বেসন, এক চিমটি হলুদ, এক চামচ গুঁড়ো দুধ, এক চামচ গোলাপ জল সব একসাথে মিশিয়ে স্মুদ পেস্ট তৈরী করুন। তারপর এটি মুখে গলায় লাগিয়ে রাখুন ২০-৩০ মিনিট। তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই মাস্কটি আপনার ত্বককে টাইট করবে, ফেস হোয়াইটিং এর কাজও করবে।
সবার জন্য নিয়ম মাফিক ত্বকের গভীর থেকে পরিষ্কার করা জরুরী। ত্বকের পুরনো লাবণ্য, উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে নিয়মিত ফেসিয়ালের কোন বিকল্প নেই। যারা সবে মাত্র ২০ এ পা রেখেছেন বা ২০ + হয়েছে তারা হয়ত ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলা করছেন কিন্তু বুঝতে পারছেন না কীভাবে ত্বকের যত্ন নিবেন। তাদের জন্যও এই রেসিপিগুলো প্রযোজ্য। এই ফেসিয়ালের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই, যদি না কোন নির্দিষ্ট উপাদানের প্রতি আপনি সংবেদনশীল হয়ে থাকেন।
লিখেছেনঃ রোজেন
Picture Source: হোমমেইডমাস্কস.নেট