এই সময়টা সত্যি সবার জন্য একটু অস্বস্তিকর। একে অসহনীয় গরম তার উপরে আবার ত্বকে দেখা দেয় নানা সমস্যা। কিছু সহজ সমাধান মেনটেইন করলেই তা আপনাকে এই অসহ্য গরমে সতেজ রাখতে সাহায্য করবে। গরমে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে ঘাম হয়ে পানি বের হয়ে যায়। তাই ত্বক ও আর্দ্রতা হারায়। গ্রীষ্মে ত্বক সতেজ রাখতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে পানিজাতীয় খাবার বা ফলমূল খেতে হবে। আর সবার একটি কমন সমস্যা হল গরমের সময় ত্বক অয়েলি হয়ে যায় এবং তা থাকে ব্রণ , হোয়াইট হেডস , রোদে পোড়া ভাব হয়। এমন কি শুষ্ক ত্বকের অধিকারীরা তেলের ঝামেলায় না পড়লেও অতিরিক্ত ঘাম, র্যাশ দেখা দেয়।
ক্লিঞ্জারঃ
এ সময় ঘাম হয় খুব বেশি, তাই ত্বক রাখতে হবে পরিষ্কার। শশা খুব ভালো কাজ করে ডিপ ক্লিনিংয়ের জন্য। ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা শশা কুচি করে ত্বকের ওপর কিছুক্ষণ রেখে দিতে পারেন। এতে ত্বকে উজ্জ্বলতা বাড়বে। সারাদিন ঘরে বসে থাকলেও দিনে অন্তত দু’বার ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। ঘুমাতে যাওয়ার আগে এবং ঘুম থেকে উঠে ত্বক পরিষ্কার করে পর্যাপ্ত পরিমাণে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। মুখে মেকাপ থাকলে তুলায় ক্লিনজিং মিল্ক লাগিয়ে মেকআপ খুব ভালোভাবে তুলে নিন। এরপর ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে পছন্দসই কোনো প্যাক লাগাতে পারেন।
টোনারঃ
গরমে ত্বকের লোমকূপ বন্ধ রাখার জন্য টোনার ব্যবহার খুবই জরুরী। টোনার লোমকূপ সংকোচিত করার পাশাপাশি ত্বক ঠাণ্ডা রাখতেও সাহায্য করে। ত্বকের সঙ্গে মানিয়ে টোনার ব্যবহার করলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। তাই টোনারের বদলে চাইলে গোলাপ জলও ব্যবহার করা যেতে পারে। ফ্রিজে বা ঠান্ডা জায়গায় টোনার সংরক্ষণ করে টোনার ব্যবহারের ভালো ফল পাওয়া যায়। এ ছাড়া এই সময়ের মৌসুমী ফল গুলো একপ্রকার আশির্বাদ স্বরূপ, মৌসুমী ফলের রস টোনার হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ঠান্ডা তরমুজের রস লাগালে ত্বকে সতেজতা ফিরে আসবে। টোনার হিসাবে গোলাপ জলও ব্যবহার করা যেতে পারে।
ময়েশ্চারাইজারঃ
অনেকে মনে করেন গরমে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করলেও চলবে। তবে গরমে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে ময়েশ্চারাইজার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই গ্রীষ্মে ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যাওয়ার সমস্যা এড়াতে ‘ওয়াটার-বেইস’ ময়েশ্চারাইজার বেছে নিতে হবে।
সানস্ক্রিন ক্রিমঃ
সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখুন আপনার সানস্ক্রিন ক্রিমের এসপিএফ যেন ৩০-৪০ হয়। আপনার পছন্দ আনুযায়ী বেছে নিন সানস্ক্রিন ক্রিম ,লোশন বা পাউডার। শরীরের যে অংশ রোদে লাগে সেই সব অংশে সানস্ক্রিন ক্রিম লাগাতে হবে। অনেকে মনে করে শুধু মাত্র রোদ থাকলেই সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার করতে হয়, কিন্তু না মেঘলা আবহাওয়াতেও সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করা উচিত। সানস্ক্রিন ক্রিম বিকাল ৫টা পর্যন্ত লাগালেই চলবে , তবে এর মাঝে মাঝে ৩-৪ ঘণ্টা পর পর সানস্ক্রিন ক্রিম ধুয়ে আবার লাগাতে হবে এবং ব্যবহার করুন এসপিএফ যুক্ত লিপবামও।
রোদে পোড়া ত্বকের যত্ন এবং উজ্জ্বলতা বাড়াতে বাড়তি যত্নঃ
একটি পাকা কলার সাথে মধু, লেবুর রস ও দুধের সর মিশিয়ে মুখে, হাতে ও পায়ে লাগালে ত্বকের রুক্ষতা দূর হয়। তৈলাক্ত ত্বক হলে দুধের সরের পরিবর্তে ডিমের সাদা অংশ লাগাবেন। কাঁচা হলুদ, শশার রস, টমেটোর রস ও লেবুর সঙ্গে শুষ্ক ত্বক হলে দুধের সর মিশিয়ে লাগাতে হবে।
ময়দা, দই ও কয়েক ফোঁটা লেবুর রসের মিশ্রণে তৈরি মাস্ক ‘সান ট্যান’ দূর করতে দারুণ উপকারী। রোদে পোড়াভাব দূর করে ত্বক উজ্জ্বল করতে লেবুর রস দারুণ কার্যকরী। (সংগৃহিত)
তৈলাক্ত ত্বকে এই ঋতুতে কিছুটা কালচে ভাব চলে আসতে পারে। তাহলে মুলতানি মাটি মধু, আর গোলাপজল মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ।
ব্রণ বা দাগের জন্য শশা, গোলাপজল ও কাঁচা হলুদের পেস্ট লাগাতে পারেন। মিশ্র ত্বকের জন্য ডিমের সাদা অংশ, মধু, লেবুর রস, দুধের সর লাগালে উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে।
এই গরমে সতেজ, সুস্থ ও সুন্দর থাকার জন্য সকালে বের হওয়ার সময় ব্যাগে একটি পানির বোতল, এক প্যাকেট স্যালাইন, সানস্ক্রিন ক্রিম, হাতপাখা, ওয়েট টিস্যু, ব্লটিং পেপার, ছাতা, সানগ্লাস সঙ্গে রাখা উচিত।
লিখেছেনঃ জুঁই শতাব্দী
ছবিঃ জুমওয়ালস.কম