বিভিন্ন উপলক্ষে নারীদের আকর্ষণ থাকে নির্দিষ্ট একটি ড্রেসের দিকে। আগে নারীদের আকর্ষণ যেমন ছিল আনারকলি ড্রেসের দিকে, বর্তমানে আকর্ষণ ভিন্ন দিকে। আবার সবসময় একই রকম ড্রেস পরতেও অনেকের ভালো লাগেনা। তাই বেশিভাগ নারীরাই ড্রেসে বিচিত্র চায়। হাঁটুর কিছুটা নিচ পর্যন্ত ছড়ানো আনারকলি এখন অনেকে পরেন না। কিন্তু আজকালনারীদের ড্রেসের আকর্ষণের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে পায়ের পাতা পর্যন্ত ছড়ানো একটি ড্রেস যার নাম গাউন।
[picture]
এখন দেখা যায় প্রায় বেশিভাগ মেয়েরাই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, বিয়েতে,পার্টিতে কিংবা কথাও ঘুরতে গেলে গাউন পরে থাকে। পাশ্চাত্য আর দেশীয় বৈচিত্র্য দুটি একসাথে মিলে বিভিন্ন আকর্ষণীয় ডিজাইনে তৈরি হচ্ছে গাউন!
চলুন জেনে নেই এই গাউন নিয়ে নানা কথা
গাউন বিভিন্ন শপিংমলের প্রায় প্রতিটি দোকানেই সাজিয়ে রাখা হয়েছে। বোম্বে থেকে আমদানি করা নেট ও জর্জেটের তৈরি এই পোশাকটিকে অনেকে প্রিন্সেস ড্রেস হিসেবেও অভিহিত করছেন। বর্তমানে এই ড্রেসটিই বাঙালি নারীর পছন্দের তালিকায় রয়েছে।
যারা নতুন ধরনের,নতুন বিচিত্র পছন্দ করেন তারা এখননানা ধরনের নতুন সব পোশাক পাচ্ছেন। তার মধ্যে জাম্পস্যুট, ম্যাক্সি ড্রেস, গাউন শীর্ষে আছে। এ ধরনের পোশাকগুলো পশ্চিমা ফ্যাশনে অনেক আগে থেকে প্রচলিত থাকলেও এখন আমাদের দেশের ডিজাইনাররাও এ দেশের মানুষের পরার উপযোগী করে বানাচ্ছেন এ ধরনের পোশাক।
জনপ্রিয়তার কারণেই সেলোয়ার কামিজেও আনা হচ্ছে গাউনের ছোঁয়া,
ঘের দেয়া ড্রেসের ফ্লরটাচ ডিজাইনে এখন মানিয়ে নিচ্ছেন নারীরা। পাশ্চাত্য ঘরানার এসব পোশাকে এখন প্রাচ্যের সঙ্গে দেশীয় সংস্কৃতির মিশেলে আনা হচ্ছে ফিউশন। যেমন; আমরা দেখি যে,পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে বলরুম বা ইভনিং গাউনগুলোয় সাধারণত কোমর পর্যন্ত ফিটিং রেখে তার নিচ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় ঘের। নিচের ছবিটা তাই বলে দেয়—
বেশ লম্বা হবার পরেও এ ধরনের পোশাকে ফুটে উঠত স্টাইলিশ লুক। তবে পোশাকটা যেমনই হোক না কেন, তাতে উজ্জ্বল রঙের ব্যবহারে ফুলেল মোটিফ, বেবি কলার, বেলুন হাতার নকশাই আছে।
বাঙালি মেয়েদের গড়ন অনুযায়ী গাউন,
দেশে মেয়েদের গড়ন একটু ভারী হওয়ায় কাটিংয়ে পরিবর্তন আনছেন ডিজাইনাররা। যেমন গাউনে ঘেরটা এখন শুরু হচ্ছে বুকের নিচ থেকে। একটু মোটা বলে যারা এতদিন এই ধরনের পোশাক এড়িয়ে চলতেন, তাঁদের জন্যও গাউনে থাকছে বিশেষ নকশা। যেমন লং গাউনের মাঝখানে আলাদা কাপড় জোড়া দিয়ে তাতে দেওয়া হচ্ছে শরীরের সঙ্গে মানানসই আকার।
গাউনের দুই দিকটা একটু ফিটেড দেখানোর জন্য করা হচ্ছে গাঢ় রঙের কাপড়ের ব্যবহার। এ ছাড়া যেকোনো ধরনের গড়নেই মানিয়ে যাওয়ার জন্য থাকছে মারমেইড বা ফিশ শেপের গাউন। এ ধরনের নকশায় হাঁটু থেকে পা পর্যন্ত থাকছে নেটের ঝুল। গতানুগতিক নকশার বাইরে গাউনে নতুনত্ব আনতে সামনের দিকে ওড়নার স্টাইলে কুঁচি দিয়ে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে কাপড়। কোনো কোনো গাউনে আবার শাড়ির আঁচল স্টাইলে এক পাশেও থাকছে বাড়তি কাপড়।
একটু জমকালো পার্টিতে পরার জন্য কালো রঙের মখমল বা ভেলভেটের গাউন ড্রেসগুলোতে থাকছে চুমকির কাজ। বিশেষ করে এই পোশাকগুলোয় নিচের পিকো এমনভাবে করা হচ্ছে, যাতে করে পোশাক ছড়িয়ে থাকছে ফুলের মতো। এতে ড্রেস ফুলে থাকে আর দেখতেও চমৎকার হয়।
একটু ভেবে,নিজের গড়ন অনুযায়ী আর মানানসই রঙটি বেছে নিয়ে বানান বা কিনুন আপনার গাউনটি। কারণ গাউন একেক রকমের আর বিভিন্ন ডিজাইনের হয়। কোনটা আপনাকে মানাবে এবং ফিট করবে টা আপনাকে বুঝে নিতে হবে।
কোথায় পাবেন
ঢাকার বিভিন্ন শোরুম, শপিং মল, মার্কেটে পাবেন বৈচিত্র্যময় নকশার গাউন। দামটা শুরু ৩৫০০ টাকা থেকে প্রায় ৩০,০০০ পর্যন্ত। আবার ফেসবুকে পোশাক কেনাবেচার পেজগুলোতে নজর রাখলেও পেয়ে যাবেন নানা নকশার গাউন।
আবার নিজেরা কাপড় কিনে সুবিধা মতো বানিয়েও নিতে পারেন গাউন। এতে আপনার খরচ কম হবে আর মনের মতো করে টেইলারকে ডিজাইন দিয়ে বানিয়ে নিতে পারবেন।
লিখেছেন – সোহানা মোরশেদ
ছবি – ওয়ালপেপারসওয়াকম