সাধের গয়না, আলমারিতে তুলে রাখা আছে ঠিকই কিন্তু সময়ের সাথে সাথে হারিয়েছে ব্যবহারের উপযোগিতা। ভাবেন আবার যদি এই গয়নাটা পরতে পারতেন কখনো! প্রিয় জিনিষ বলে কথা, মায়া কাটানো মুশকিল। খানিক কৌশল খাটিয়ে পুরনো বা বাতিল গয়নার চেহারা পাল্টে নিচ্ছেন না কেনো তবে? নতুন রূপে ঠিকই আবার পরতে পারবেন সেই জিনিষগুলো। দরকার কেবল একটু বুদ্ধি, কিছুটা সময় আর আপনার ধৈর্যের।
পুরনো কাঠের চুড়িকে ঘরে থাকা নেইলপলিশ দিয়েই রাঙিয়ে নিন।চুড়িগুলো কাপড় দিয়ে মুছে পরিষ্কার করে ফেলুন আগে। তারপর নেইলপলিশের রঙে ইচ্ছে মতো রাঙাতে থাকুন। নেইলপলিশের ব্রাশটাই ব্যবহার করতে পারেন রঙের চওড়া স্ট্রোক বা প্রলেপ দেয়ার সময়। চুড়িতে সূক্ষ্ম নকশা করার ইচ্ছে থাকলে চিকন তুলি কাজে লাগান।
চুড়ির রঙের বিপরীত রঙ বাছুন নেইলপলিশে। অল্প দামের নেইলপলিশ কিনেও নিতে পারেন, তাতে পুরোপুরি মনের মতন রঙের নকশা করতে পারবেন চুড়িতে। সবুজ রঙের চুড়ি হলে নেইলপলিশে বেছে নিন গোলাপি, কমলা, লাল এসব রঙ। তেমনি গোলাপি রঙের চুড়িতে হলুদ, বেগুনি, সবুজ এমন রঙগুলো ভালো মানাবে। সহজ উপায়ে নকশা করতে চাইলে কিছু প্যাটার্ন বা ধরন ঠিক করে নিতে পারেন। যেমন, পুরো চুড়িতে পাশাপাশি একেকটা রঙ দিয়ে গেলেন। এমন দাগকাটা নকশা হতে পারে অনেক রঙের। আবার ছোপছোপ করেও নেইলপলিশটা লাগানো যায় চুড়িতে। যেমন খুশি তেমন একেকটা নেইলপলিশ এলোমেলো করে লাগিয়ে নিন পুরো চুড়িতে।স্বছ নেইলপলিশ দিয়ে কাজের শেষে পুরো চুড়িতে সমানভাবে রঙ করে নিন স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য।
মাটির বা কাঠের মালা, কানের দুলেও ঠিক এমন করেই নেইলপলিশের নকশা করা যায়। খুব সাদামাটা কোন গয়নার গায়ে মানানসই একটা রঙের নেইলপলিশে ছোট্ট নকশা এঁকে দিতে পারেন। একরঙা কোন পুতির মালায় অন্য রঙ যোগ করতেও কাজে লাগাতে পারেন পুরনো নেইলপলিশ। মলিন হয়ে আসা পুরনো গয়নাগুলো এমন নতুন চেহারায় খারাপ লাগবে না অবশ্যই।
রেশমি সুতোর গাছিতে পুরনো ধাতব চুড়ি মুড়িয়ে নিয়ে ভিন্ন মাত্রা আনা যায়। ইচ্ছে অনুযায়ী রঙের কয়েক গাছি রেশমি সুতো লাগবে কেবল। চুড়ি সম্পূর্ণ ভাবে একগাছি সুতোয় পেঁচিয়ে নিন, চাইলে কয়েক রঙের কয়েক গাছি সুতো মিলিয়ে নিতে পারেন আপনি। গিঁটটা দিন সাবধানে, খুব নিপুণ ভাবে যাতে বাড়তি অংশের সুতো দেখা না যায়। অব্যবহৃত পুরনো চুড়ি এবার নতুন করে পরা হবে নিশ্চয়ই!
পছন্দের ঝুমকো জোড়ার একটা হারিয়ে গেছে, বা নষ্ট হয়ে গেছে। পরা যাবে না আর। দুল থেকে তবে অন্য গয়নাই বানিয়ে ফেলুন! একটা দুলের ঝুমকোর অংশটা খুলে নিন। এবার গলার কোন মালা বা চেইনে সেটাকে লকেট বানিয়ে ফেলুন, আর কী লাগে! চাইলে সুতোর মাঝে ঢুকিয়েও হার বানাতে পারেন। সাদা, লাল, সবুজ এমন গাঢ় রঙের পাথরের ঝুমকো হলে কালো সুতোর হারে চমৎকার লাগবে কিন্তু। একই জিনিষ কাজে লাগাতে পারেন টিকলি হিসেবে। টিকলির উপযোগী চেইন কিনে এক মাথায় ছোট দুলের ঝুমকো জোড়া লাগিয়ে নিজের টিকলি তৈরি করে নিতে পারেন চাইলেই।
লিখেছেন – মুমতাহীনা মাহবুব
ছবি – ফ্লিকার.কম