ইদানীং অধিকাংশ মানুষেরই একটাই অভিযোগ শুনি, চেহারার রং আর গা, হাত, পায়ের রং এক না! এমনকি ফুল সাইজ ছবি তুললে অনেকেই বিব্রত হয়ে যান কারণ মুখের তুলনায় বাহু, হাত, পা বেশ কালচে দেখাচ্ছে। কী করলে ফুল বডি ব্রাইট হবে? আপনার জন্মগত গায়ের রং কিন্তু পরিবর্তন করা কখনোই সম্ভব না। তবে হ্যা, রোদে জ্বলে যাওয়া রং, সঠিকভাবে যত্ন না নিতে না পারার কারণে মলিন হয়ে যাওয়া রঙের উজ্জ্বলতা বাড়ানো সম্ভব। মার্কেটে যেসব রং ফর্সাকারী বডি লোশন পাওয়া যায় এগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে তো প্রশ্ন আমার বরাবরই ছিল। একগাদা টাকা খরচ করে আসলে আমরা কী কিনছি? হার্মফুল কেমিক্যালে ভর্তি ম্যাজিকাল প্রোডাক্ট, যা আমাদের ভবিষ্যতের লং রানে গিয়ে স্কিনের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর হবে, স্কিন ক্যান্সারসহ প্রিম্যাচিউর স্কিন এইজিং এর ঝুঁকি ও বহুগুণে বাড়িয়ে তোলে।
[picture]
তাহলে কী করা যায়? বাসায় বসেই সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে যদি বডি ব্রাইটেনিং সিরাম বানিয়ে ফেলা যায় তাহলে কেমন হবে বলুন তো? আজকে আমি আপনাদের সাথে এমনই দুটো অর্গানিক বডি ব্রাইটেনিং সিরাম বানানোর পদ্ধতি শেয়ার করব। চলুন তাহলে শুরু করা যাক –
রোজ অ্যান্ড অয়েল মিক্সড সিরাম
- ৩টা গোলাপের পাপড়ি
- ২ চা চামচ তিলের তেল
- ২ টেবিল চামচ নারকেল তেল
- ১টা ভিটামিন ই ক্যাপসুল
৩টা গোলাপের পাপড়ি ছিঁড়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এতে সামান্য পানি দিয়ে ব্লেন্ডারে পেস্ট করে নিন অথবা শিলপাটায় বেটে নিন। এবার এতে ২ চা চামচ তিলের তেল, ২ টেবিল চামচ খাঁটি নারকেল তেল, ১টা ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিক্স করে নিন। এবার মিশ্রণটি একটি পরিষ্কার শুকনো জারে সংরক্ষণ করে রাখুন। ভিটামিন ই ক্যাপসুল প্রোডাক্টের শেলফ লাইফ বাড়িয়ে দেয়। এই বডি ব্রাইটেনিং সিরাম টা স্বাভাবিক রুম টেম্পারেচারে ৩ দিন পর্যন্ত ভালো থাকবে। আর ফ্রিজে রাখলে ৭-৮ দিন। গোলাপে আছে ভিটামিন সি আর অ্যান্টি অক্সিডেন্টস যা স্কিনকে উজ্জ্বল করে তোলে, রোদে পোড়াভাব দূর করে, মলিনতা কমায় আর অকালবার্ধক্য থেকে রক্ষা করে। তিলের তেল হচ্ছে খুব ভালো ন্যাচারাল সানস্ক্রিন হিসেবে কাজ করে। আর নারকেল তেল আপনার ফুল বডিকে ডিপলি ময়েশ্চারাইজ করে তোলে, ন্যাচারাল সান প্রোটেক্টর হিসেবে কাজ করে।
স্যান্ডালউড অ্যান্ড অয়েল মিক্সড সিরাম
- ১ টেবিল চামচ চন্দন গুঁড়ো
- ২ চা চামচ সুইট আমন্ড অয়েল
- ২ টেবিল চামচ নারকেল তেল
- ১টা ভিটামিন ই ক্যাপসুল
১ টেবিল চামচ চন্দনের গুঁড়ো, ২ চা চামচ সুইট আমন্ড অয়েল, ২ টেবিল চামচ নারকেল তেল আর ১টা ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভালোভাবে মিক্স করে নিন। এবার মিশ্রণটি একটি পরিষ্কার শুকনো জারে সংরক্ষণ করে রাখুন। ভিটামিন ই ক্যাপসুল প্রোডাক্টের শেলফ লাইফ বাড়িয়ে দেয়। এই বডি ব্রাইটেনিং সিরাম-টা স্বাভাবিক রুম টেম্পারেচারে ৩ দিন পর্যন্ত ভালো থাকবে। আর ফ্রিজে রাখলে ৭-৮ দিন। চন্দনের গুঁড়ো স্কিনকে ব্রাইটেন করে, রোদে পোড়া ভাব কমায়। সুইট আমন্ড অয়েল ত্বকের কালচে ভাব দূর করবে। নারকেল তেল স্কিনকে ভেতর থেকে পুষ্টি জুগিয়ে স্কিনকে নরম, কোমল আর উজ্জ্বল করে তুলবে।
তাহলে আর দেরি না করে এখনই বাসায় বসে বানিয়ে ফেলুন এই অর্গানিক বডি ব্রাইটেনিং সিরাম। নিয়মিত যদি গোসলের পর আর রাতে ঘুমানোর আগে এই সিরাম ব্যবহার করেন, তাহলে মাস দুয়েকের মধ্যেই ত্বকের হারানো উজ্জ্বলতা ফিরে পাবেন। স্কিনে ভিজ্যুয়াল চেইঞ্জ দেখতে পাবেন for sure!
Stay Beautiful, Stay Gorgeous.
লিখেছেন – ফারহানা প্রীতি