দিব্যি বসে ছিলেন, হঠাৎ আলমারির উপর থেকে জরুরি একটা বাক্স নামাতে উঠতে হলো। নামার সময় পা হড়কে টুল থেকে পড়ে চিৎপটাং! হাড়টা বুঝি ভেঙ্গেই গেলো এই দফা। অসহ্য ব্যাথায় শয্যাশায়ী হয়ে ভাবছেন, কালকে যে সারাদিন ঘোরার প্ল্যানটা ছিলো! সামান্য ডিম ভাজি করার কাজ নিয়ে রান্নাঘরে গেলেন, ক্ষণিকের অসাবধানতায় হাতটাই যে অতখানি পুড়ে যাবে, কে জানতো? পোড়া হাতে পানি দিতে দিতেই ভাবছেন, একটু বাদেই তো একটা রিপোর্টের কাজ শুরু করার কথা ছিলো!
[picture]
কতকিছুই তো হবার কথা ছিলো, তার সবটা কি আর হয়? আর দুর্ঘটনা কি বলেকয়ে আসে? যা ঘটেছে, ঘটে গেছে। ওসব ভেবে হাতে থাকা সময়টা নষ্ট করতে নেই। যন্ত্রণার সময়টুকুও অর্থবহ করা যায় খানিক স্থিরতা থাকলেই। ভেবেই দেখুন, শরীরে ব্যাথা তো হবেই, সে আপনি পুরোপুরি ঠেকাতে পারছেন না। সেই কথা ভেবে ভেবে মনের কষ্ট কেন বাড়াবেন অযথা?
সময়টা খারাপ তো যাচ্ছেই, তবে পুরো বৃথা যেতে না দেয়ার চেষ্টা কিন্তু করাই যায়। শুয়ে কিংবা বসেই করা যায় তেমন কাজের কি আর অভাব আছে! এই যেমন, টু-ডু লিস্টে ফেলে রাখা হাতের কাজগুলো টুকটাক গুছিয়ে নিন এই অবসরে।
কিছু বই অনেকদিন ধরে আলাদা করে রাখা ছিলো, কাজ আর অলসতার অজুহাতে পড়াই হচ্ছে না। সেগুলো আনিয়ে রাখুন হাতের নাগালে। এখন আপনার সময় আছে হাতে বই পড়ার। ভারী কাজ তো করা মানা, হাঁটাচলাও নিষেধের কাঁটাতারে বন্দী, তো বিশ্রামের অবসরে বই পড়াই শ্রেয়। সময়টা একেবারে একঘেয়ে তো হচ্ছে না।
হাত ভালো আছে? হাতের কাজ নিয়ে সময় পার করুন তবে। বিভিন্ন ডি.আই.ওয়াই অর্থাৎ ডু ইট ইউরসেলফ প্রজেক্টে মন দিন। হ্যান্ডিক্রাফটস তৈরি করুন নিজের খুশি মতো। জিনিসপাতি জোগাড় করে দিতে বা আনা-নেয়া করতে কারো সাহায্য লাগবে বৈকি। তৈরি করার কাজটা আপনিই করতে পারেন। তেমন কিছুই করুন যাতে শরীরে বিরূপ প্রভাব না পড়ে, বাড়তি কষ্ট না হয়। বিশ্রামের পুরো সময়টা দুর্বিষহ হবে না মোটেও। বরং পছন্দের কাজে ব্যস্ত থাকবেন তো ব্যথাও কম প্রভাব ফেলবে মনে, আর হয়তো শরীরেও।
আপনি ভীষণ ব্যস্ত মানুষ, কাজ নিয়েই দিন কাটে। মুভি দেখা, বন্ধুবান্ধবের সাথে দেখা করা, আড্ডা দেয়া এসব উপলক্ষ কমই হয়। তাহলে এই সময়টাকে কাজে লাগাচ্ছেন না কেন? একদিন ডাকুন তাদের। ছোটখাটো একটা ফ্যামিলি পার্টিও হয়ে যেতে পারে। বিছানায় থাকবেন তো কী হয়েছে, আড্ডা তো হবেই। হতে পারে একসাথে মুভি দেখাও। তাই আহত হয়ে শয্যা নেয়ার পর অবশ্যই মনে করুন বন্ধুদের, ফলমূল নিয়ে আপনাকে দেখতে আসা তাদের আবশ্যিক কাজ!
ব্যস্ততা হোক কিংবা অলসতা, ত্বকের যত্নে গড়িমসি আপনার বরাবরই। এই যে অনড় থাকার সময়টা পেলেন, এই ফাঁকে কিছু ত্বক চর্চাও তো হয়ে যেতেই পারে! এক্ষেত্রেও সাহায্যকারী কাউকে চাই আপনার। আবার কিছু হোম সার্ভিস আছে যারা ঘরে এসে পার্লারের সেবা দিয়ে থাকে, তাদের সেবাও নিয়ে দেখতে পারেন। অন্তত একটা ফেসিয়াল, ভালো একটা স্কাল্প ম্যাসাজ তো নেয়াই যায়। তাতে শরীর অনেক রিল্যাক্সড হবে। এমন অবস্থায় ভালোও লাগবে সেটা।
ছবি – হেলদিলিভিং ডট কম
লিখেছেন – মুমতাহীনা মাহবুব