ষোড়শ শতকে ভারতীয় উপমহাদেশে মুঘলদের আগমনের পরই এ অঞ্চলে শুরু হয় মেয়েদের নাক ফোঁড়ানোর রেওয়াজ। আমাদের দেশে প্রচলিত ধারণা হলো- নাকফুল কেবল বিবাহিত নারীর জন্যই। বিবাহিত নারীর চিহ্ন- এই কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে নাকফুলের ফ্যাশনটাই এখন সবার কাছে বড় হয়ে উঠেছে। কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া আধুনিক তরুণী থেকে শুরু করে সব বয়সী নারীর নাকে শোভা পাচ্ছে নাকফুল।
সামাজিক রীতিনীতি কিংবা ধর্মীয় বিধিনিষেধ নয়, নাকফুল এখন ফ্যাশনেরই একটি অংশ।অতি সাধারণ সাজ পোশাক পরলেও নাকফুল চমৎকার মানিয়ে যায়। নাকফুল নারী সৌন্দর্য্য অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়।
নাক ফুলের উপাদান হিসেবে সোনার পাশাপাশি রূপা ও সোনার প্রলেপ দেওয়া রূপা ব্যবহৃত হচ্ছে। এর সাথে যুক্ত হচ্ছে নানা রকমের সাদা পাথর, হীরা, মুক্তা, জিরকন, এমারেল্ড,গার্নেট ইত্যাদি।এক পাথর, একাধিক পাথর অথবা নানা রঙের পাথর মিশিয়ে তৈরী নানা আকারের নাকফুল সংগ্রহে রাখা যেতে পারে।
সাধারণত শাড়ির সাথেই নাকফুল বেশি মানায়। তবে আজকাল তরুনীরা সালোয়ার কামিজ, ফতুয়া, টপস ইত্যাদি সব পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যের সাথেই নাকফুল পরছে। এশিয় ফ্যাশেনের অনুসঙ্গ হলেও পাশ্চাত্য ফ্যাশনে ও এখন নাকফুল পরার প্রচলন দেখা যাচ্ছে।
নাকফুল পরার ক্ষেত্রে ব্যাক্তিগত পছন্দই প্রাধান্য পায়। যাদের নাক বেশি খাড়া নয়, তারা এক পাথরের ছোট নাকফুল বেছে নিতে পারেন। যাদের নাক খাড়া ও লম্বা তারা বড়, ছোট, একাধিক পাথরের নাকফুল পরতে পারেন। সব সময় ব্যবহারের জন্য এক পাথরের হীরার তৈরী ছোট নাকফুল সবচেয়ে উত্তম । অল্প বয়সীরা চাপা নথ ও ব্যবহার করতে পারে। অনুষ্ঠানে পোশাকের সাথে মিলিয়ে একটু জমকালো বড় নাকফুলও পরা যায়। জুয়েলারীর দোকান ছাড়াও বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস গুলো তাদের সংগ্রহে নানা ডিজাইনের নাকফুল রাখছে। নিজের পছন্দ অনুযায়ী কিনতে অথবা অর্ডার দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন। এরপর নাকে পরুন ঝকঝকে নাকফুল, আর আয়নায় দেখুন নিজের বদলে যাওয়া অনন্য রূপ।
সতর্কতা
* নাক ফোঁড়ানোর সময় অভিজ্ঞ ব্যাক্তি, নামকরা পার্লার অথবা ডাক্তারের শরণাপন্য হোন।
* যাদের এলার্জি অথবা চর্মরোগ আছে তারা অন্য ধাতুর তৈরী নাকফুল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
* নাক ফোঁড়ানোর পর প্রথম অবস্থায় সোনার নাকফুল পরুন।
* সংগ্রহ করা নাকফুল গুলো যত্নে রাখার জন্য সেগুলোকে তুলোয় অথবা টিস্যুতে মুড়িয়ে রাখুন।
* নাক ফোড়াঁনোর স্থলে ইনফেকশন হলে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
লিখেছেনঃ বৈশাখী