দাঁত মাজার কাজে টুথব্রাশ তো সবাই ব্যবহার করি। অনেক সময় নতুন ব্রাশ পড়ে থাকে , যা আর ব্যবহার করা হয় না। সেগুলো ফেলে না দিয়ে কীভাবে হাত-নখ ও চুলের সাজ গোজের কাজে লাগান যায়, তাই নিয়ে আজকের লেখা।
১. প্রতিদিন সকালে চুল পরিপাটি করে বেঁধে বের হলেও বাতাসে ছোট চুল গুলো বের হয়ে চুলকে অগোছালো করে ফেলে। টুথব্রাশে হেয়ার স্প্রে করুন, পুরো চুলে আলতো করে চিরুনির মতো বুলিয়ে নিন। সারাদিনের জন্য আপনার চুল একই জায়গায় সেট হয়ে থাকবে।
২. লম্বা সময় আইব্রাও এর শেপ আর পজিশন ঠিক রাখতে চুলের মতই সামান্য হেয়ার স্প্রে নিয়ে ভ্রু জোড়া আঁচড়ে নিন। আইব্রাও জেল যাদের নেই, তাদের জন্য এটি খুব সহায়ক।
৩. হাতের কালো দাগ দূর করতে এক কাপ পানি, আধা কাপ লেবুর রস, আর ১ টেবিল চামচ বেকিং সোডা দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। এই মিশ্রণে টুথব্রাশ ডুবিয়ে যে অংশে কালো দাগ আছে সেই স্থানে হালকা ভাবে ঘষে নিন। নিয়মিত করলে হাতের দাগ দূর হবে।
৪. ঠোঁট ফেটে গেলে ঠোঁটের মরা চামড়া হাত দিয়ে না খুঁটে ব্রাশের সাহায্য নিন। প্রথমে ফাটা ঠোঁটে লিপবাম বা পেট্রোলিয়াম জেলি লাগান, এর ওপর সার্কুলার মোশনে ব্রাশ ঘুরিয়ে ঠোঁটের মরা চামড়া তুলে ফেলুন। ঠোঁটকে মসৃণ রাখতে এর জুড়ি নেই।
৫. আপনার নিয়মিত ব্যবহারের হেয়ার ড্রাইয়ারটা ভালোভাবে কাজ করছেনা? খেয়াল করলে দেখবেন এর পেছনের অংশতে অসাবধানতাবশত কিছু চুল লেগে যায়। টুথব্রাশের সাহায্যে চুল গুলো পরিষ্কার করে নিন, দেখবেন ড্রাইয়ার আবার আগের মতো কাজ করছে।
৬. বাড়িতে বসে চুল ফুলিয়ে হেয়ার স্টাইল করতে চাচ্ছেন অথচ হাতের কাছে bumpits নেই? যেই অংশের চুল ফুলিয়ে ভলিউম আনতে চান সেই চুলগুলোর ভেতরের দিকে এনে ব্রাশের সাহায্যে উল্টোদিকে ব্রাশ করে সামনের চুল দিয়ে ঢেকে দিন। টুথব্রাশ ব্যবহারের সুবিধা হল, উল্টোদিকে আঁচড়ানো হলেও চুলের জট ছাড়ানো খুব সহজ হয়।
৭. আপনার ম্যানিকিওর সেটে নেইলব্রাশ নেই? পুরনো টুথব্রাশ ব্যবহার করে নখের কোণে জমে থাকা শক্ত ময়লা পরিষ্কার করতে পারবেন অনায়াসেই।
৮. ম্যানকিওর করার সময় কিউটিকল পরিষ্কারে টুথব্রাশ দারুন কার্যকর। প্রথমে নখে কিউটিকল অয়েল লাগিয়ে নিন। এরপর সার্কুলার মোশনে টুথব্রাশ দিয়ে কিউটিকল পরিষ্কার করুন। সপ্তাহে মাত্র একবার করলেই আপনি পাবেন দাগ-ছোপ বিহীন উজ্জ্বল নখ।
৯. নেইল আর্ট এর কাজেও টুথব্রাশ ব্যবহার করতে পারেন। উজ্জ্বল রঙের ৩-৪ টি নেইলপলিশ আর সাদা নেইল পলিশের প্রয়োজন হবে এর জন্য। প্রথমে পুরো নখে সাদা নেইল পলিশ লাগিয়ে নিন। একটি কাগজের প্লেটে (one time use disposable) রঙ্গিন নেইল পলিশ গুলো অল্প পরিমাণে আলাদা ভাবে ঢেলে নিন। টুথব্রাশের মাথায় অল্প করে নেইল পলিশ লাগিয়ে অনেকটা পেরেক ঠোকার মতো করে সাদা নেইল পলিশের ওপর হালকা ডট এফেক্ট তৈরি করুন। নেইল পলিশ রিমুভার দিয়ে ব্রাশ পরিষ্কার করে একইভাবে বাকি রঙগুলো দিয়ে ডট দিয়ে দিয়ে নেইল আর্ট করুন। দেখবেন নখের ওই ছোট্ট অংশটুকুই হয়ে উঠেছে এক রঙ্গিন ক্যানভাস। সব শেষে টপ কোট লাগিয়ে নিন, অনেকদিন পর্যন্ত থাকবে।
১০. চুলের সাধারণ বেনিতে একটু মেসি লুক আনতে চাইলে সেটি করতে পারেন স্রেফ একটি টুথব্রাশ দিয়েই। বেনি করা চুলের মাঝে ব্রাশ দিয়ে আঁচড়াতে থাকুন উপরের দিকে। মেসি বান করার ক্ষেত্রেও সাধারণ খোঁপার ওপর একই পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। হেয়ার স্প্রে করে নিলে লুকটা হবে দীর্ঘস্থায়ী।
১১. বাড়িতে বসে চুল হাইলাইট করেন অনেকেই। হেয়ার চকিংও বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু লিকুইড হেয়ার কালার বা লিকুইড চকিং দিয়ে চুল রঙ করা বেশ ঝক্কি ঝামেলার ব্যাপার। ব্রাশে কালার/চক লাগিয়ে চুলে লাগিয়ে নিন সহজেই। একইভাবে বাড়িতে বসে চুলে স্টিক হাইলাইট করতে চাইলেও টুথব্রাশ ব্যবহার করতে পারেন।
১২. ঘন করে মাস্কারার প্রলেপ দিতে যেয়ে প্রায়ই অনেকগুলো আইল্যাশ একসাথে লেগে যায়। একটা টুথব্রাশ নিন, (নতুন হলে ভালো হয় কারণ পুরনো টুথব্রাশে ইনফেকশন হবার সম্ভাবনা থাকে) আইল্যাশ এর গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত খুব সাবধানে কয়েকবার আঁচড়ে নিন। ব্রাশের ব্রিসল গুলো অতিরিক্ত মাস্কারা সরিয়ে দেবে আর আপনি পাবেন গর্জিয়াস আইল্যাশ।
লিখেছেনঃ চৌধুরী তাহাসিন জামান
ছবিঃ কসমোপলিটান.কম, গ্রিনকিক.সিএ