মলিন ও নিষ্প্রাণ ত্বক? ৫টি সহজ ধাপেই হোক উইন্টার স্কিনকেয়ার

মলিন ও নিষ্প্রাণ ত্বক? ৫টি সহজ ধাপেই হোক উইন্টার স্কিনকেয়ার

Untitled design (59)

ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে স্কিন কেয়ার রুটিনেও চাই সামঞ্জস্যতা। শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে স্কিন হয়ে ওঠে শুষ্ক ও রুক্ষ। শীতের শুষ্ক আবহাওয়া ত্বককে করে তোলে মলিন ও নিষ্প্রাণ। তাই এই সময় ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে স্কিন কেয়ারে প্রয়োজন বাড়তি মনোযোগ। শীতে ত্বক যেন থাকে কোমল, উজ্জ্বল ও সুরক্ষিত; তাই মাত্র ৫টি ধাপেই সেট করে নিন আপনার স্কিন কেয়ার রুটিন।

মলিন ও নিষ্প্রাণ ত্বককে বলুন বাই বাই

১) ক্লেনজার পরিবর্তন

শীতে যে কোনও ত্বকের জন্যই ক্লেনজার হতে হবে মাইল্ড ও জেন্টল ধরনের। ড্রাই স্কিনের ক্ষেত্রে ক্রিম টেক্সচারের ক্লেনজার উপযুক্ত, যা স্কিনকে বেশি শুষ্ক অনুভূত করায় না এবং স্কিন ফ্লেকি হতে দেয় না। গ্লিসারিন, হায়ালুরনিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ ফেইসওয়াশ স্কিনকে ক্লিন করার পাশাপাশি স্কিনকে হাইড্রেশন দেয়। এমন ফেইসওয়াশ বেছে নিতে হবে যেটি স্কিনের ন্যাচারাল অয়েল সরিয়ে ফেলবে না। যাদের অয়েলি স্কিন তারা জেল বেইজড ফেইস ওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন। তবে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বেইজড ফেইসওয়াশ ব্যবহার করলে প্রতিদিন ব্যবহার না করে অল্টারনেট ডে তে ব্যবহার করুন যেন স্কিন শুষ্ক হয়ে না যায়।

২) হাইড্রেটিং সিরাম ইনক্লুড করা

হাইড্রেটিং সিরাম (যেমন হায়ালুরোনিক অ্যাসিড সিরাম) শীতের একটি মাস্ট হ্যাভ স্কিন কেয়ার আইটেম। এটি স্কিনের আর্দ্রতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং স্কিনকে প্লাম্পি করে। শীতকালে ড্রাই স্কিন আরও বেশি আর্দ্রতা হারায়, এ কারণে ড্রাই স্কিনের ক্ষেত্রে সিরামাইড ও পেপটাইড যুক্ত হাইড্রেটিং সিরাম ব্যবহার করা উচিত। পেপটাইড স্কিনের কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় আর সিরামাইড স্কিনের ব্যারিয়ার রিপেয়ার করে স্কিনকে শীতের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে।

শীতে এক্সফলিয়েটিং সিরাম যেমন স্যালিসাইলিক অ্যাসিড, গ্লাইকোলিক অ্যাসিড সপ্তাহে এক বা দুইদিন ব্যবহার করুন। মাঝের দিনগুলোতে সিরামাইডযুক্ত সিরাম ব্যবহার করতে পারেন, এতে স্কিনের ময়েশ্চার বজায় থাকবে।

৩) ময়েশ্চারাইজার কিন্তু মাস্ট

শীতে ত্বক যেহেতু বেশি শুষ্ক হয়ে পড়ে, তাই গরমের দিনের তুলনায় শীতে অবশ্যই একটি ভারি ময়েশ্চারাইজার প্রয়োজন। ড্রাই স্কিনের জন্য শীতে শিয়া বাটার, কোকোয়া বাটার বা গ্লিসারিন সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। স্কিন টাইপ অয়েলি হলে সিরামাইড বা হায়ালুরোনিক অ্যাসিড যুক্ত ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন, তবে অবশ্যই সেটি যেন হয় নন-কমেডোজেনিক। চাইলে রাতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পর ফেসিয়াল অয়েলও ব্যবহার করতে পারেন।

৪) সানস্ক্রিনের ব্যবহার

শীতে কিন্তু কোনোভাবে সানস্ক্রিন স্কিপ করা যাবে না। অবশ্যই নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। জেল সানস্ক্রিনের বদলে এসময় বেছে নিন লোশন বা ক্রিম জাতীয় সানস্ক্রিন। সানস্ক্রিন ব্যবহারের পূর্বে ব্যবহার করতে পারেন ভিটামিন সি সিরাম। কারণ ভিটামিন সি UV radiation এর কারণে সৃষ্ট ফ্রি রেডিকেলকে নিউট্রালাইজ করে আর সানস্ক্রিন ত্বককে UV ray এর ক্ষতি থেকে বাঁচায়। ভিটামিন সি ও সানস্ক্রিন এর কম্বিনেশন আপনার ত্বককে হাইপারপিগমেন্টেশন, রিংকেলস, প্রিম্যাচিউর এজিং থেকে রক্ষা করে।

৫) ঠোঁটের যত্ন

শীতে ঠোঁটের জন্য চাই বিশেষ যত্ন। আমরা অনেকেই ঠোঁটের যত্ন বলতে শুধু পেট্রোলিয়াম জেলি অ্যাপ্লাই করা বুঝি। কিন্তু পেট্রোলিয়াম জেলি নিজে থেকে ময়েশ্চার দেয় না বরং ময়েশ্চার ধরে রাখতে হেল্প করে। ঠোঁট যদি আগে থেকেই অনেক শুষ্ক বা ফাটা থাকে সেক্ষেত্রে পেট্রোলিয়াম জেলি কিন্তু একে খুব একটা আর্দ্রতা দেবে না। এক্ষেত্রে আগে কোনও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে তারপর পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করা উচিত।

এছাড়া শীতে ঠোঁটের যত্নে এমন লিপ বাম ব্যবহার করতে পারেন যাতে শিয়া বাটার, কোকোয়া বাটার, আরগান অয়েল রয়েছে। ঠোঁটের ডেড স্কিনসেল দূর করতে লিপ স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন। খেয়াল রাখতে হবে ঠোঁটের সান প্রোটেকশনের দিকেও। রোদ থেকে ঠোঁটের ত্বককে সুরক্ষা দিতে মিনিমাম spf 15 যুক্ত লিপ কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন।

শীতের তীব্রতা যতই বাড়ুক না কেন, সঠিক স্কিন কেয়ার রুটিন মেনে চললে ত্বককে শুষ্কতা ও মলিনতা থেকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব। মলিন ও নিষ্প্রাণ ত্বক নিয়ে আর চিন্তা নেই! এই ৫টি ধাপের মাধ্যমে আপনার স্কিন কেয়ার রুটিনকে শীতের জন্য বদলে নিন এবং উপভোগ করুন কোমল ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক।

ছবি- সাটারস্টক, সাজগোজ

লেখা- জান্নাতুল কাওসার

0 I like it
0 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort