কেমন আছেন সবাই? নিশ্চয়ই ভালো। আজকে রিভিউ দিবো ট্রপিক্যাল আইল লিভিং ব্র্যান্ডের জ্যামাইকান ব্ল্যাক ক্যাস্টর অয়েল–এর। প্রথমবার ব্যবহারের সময় সাধারণ তেল হিসেবেই ধরে নিয়েছিলাম। কিন্তু ব্যবহারের দুই সপ্তাহের মাথায় নিজের চুলের স্বাস্থ্য আর ত্বকের এত ভালো পরিবর্তন দেখে আমি নিজেই অবাক হয়ে গেছি। এখন আমি আমার চুল আর ত্বক এই দুইয়ের যত্ন উপাদান হিসেবে এই জ্যামাইকান ব্ল্যাক ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করে ফ্যান হয়ে গেছি। আপনারাও জেনে নিন এই ক্যাস্টর অয়েলের গুণাগুণ।
জ্যামাইকান ব্ল্যাক ক্যাস্টর অয়েল ও এর টেক্সচার
হালকা খয়েরি রঙা আর ঘন টেক্সচারের এই তেলের নিয়মিত ব্যবহার চুলের ওপর একটি প্রটেক্টিভ লেয়ার তৈরি করে, যাতে করে বাইরের ধুলাবালি আর দূষণে সৃষ্ট ক্ষতি থেকে চুল রক্ষা পায়। আমার চুল পড়া কমিয়ে চুলের স্বাস্থ্য ফিরিয়ে দিতে একদম ম্যাজিকের মত কাজ করেছে এই তেল। সন্ধ্যায় ম্যাসাজ করে সারা রাত রেখে পরের দিন শ্যাম্পু করে ফেলুন, চুলের সফট আর বাউন্সিভাব ফিরে আসবে অনায়াসেই। প্রায় ২ মাস ব্যবহারে আমার চুলের গ্রোথ বেড়েছে অনেকাংশে। সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহার করা যায়।
শুধু চুল নয়, বডি ওয়াশ আর স্ক্রাবের পরে আমার ত্বক কিছুটা রুক্ষ হয়ে যায়। কৌতূহলের বশে ১ চামচ অলিভ অয়েলের সাথে এক চামচ জ্যামাইকান ক্যাস্টর অয়েল মিক্স করে ইউজ করে দেখলাম ত্বকে। ফলাফল হিসেবে চুলের যত্নের পাশাপাশি ত্বকের যত্নেও এই অয়েল এখন আমি রেগ্যুলার ইউজ করি। ত্বক আগের থেকেও বেশি মসৃণ হয়েছে। যাদের ড্রাই স্কিন তারা লোশনের সাথে ইউজ করতে পারেন।
জ্যামাইকান ব্ল্যাক ক্যাস্টর অয়েল কিভাবে ব্যবহার করবেন
১) প্রতিদিন ব্যবহারের জন্য স্ক্যাল্পে মাসাজ করুন আলতো ভাবে, আস্তে আস্তে মাথার ত্বক তেলটা শুষে নিবে।
২) শুষ্ক চুলের ডিপ কণ্ডিশনিং এর জন্য ৩-৪ চামচ তেল স্ক্যাল্প আর পুরো চুলে দিয়ে নিন, ২ ঘণ্টা রেখে কোন মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৩) বাড়িতে বসে চুলের হট অয়েল ট্রিটমেন্ট করতে চান? ২ চামচ জ্যামাইকান ব্ল্যাক ক্যাস্টর অয়েলের সাথে ৩ চামচ নারিকেল তেল বা জলপাই তেল মিশিয়ে কুসুম গরম করে নিন। মাথায় ম্যাসাজ করে শাওয়ার ক্যাপ পরে থাকুন। ১০ মিনিটের জন্য হেয়ার ড্রাইয়ারের গরম ভাপ নিন শাওয়ার ক্যাপের ওপর দিয়েই। ঘণ্টা খানেক পরে শ্যাম্পু করে ফেলুন।
৪) শুধু চুলে নয়, এই তেল রুক্ষ ত্বকে ব্যবহার করা যায় ময়েশ্চারাইজার হিসাবে।
৫) সাধারণ বা তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীরা রেগ্যুলার বডি ম্যাসাজ অয়েল হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন।
এই ক্যাস্টর অয়েলের যেসব দিক আমার ভালো লেগেছে
১. ১০০ ভাগ খাঁটি ক্যাস্টর অয়েল, কোনরকম ক্ষতিকর কেমিক্যাল বা ফ্লেভার নেই।
২. চুলের গোড়া শক্ত করতে সাহায্য করেছে।
৩. চুল পড়া কমিয়ে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে…
৪. মাথার ত্বকে পুষ্টি জুগিয়ে চুলের রুক্ষতা কম করেছে, এমনকি খুশকি রোধ করেছে।
৫. স্ক্যাল্প কন্ডিশনার হিসেবে খুব ভালো কাজ করে।
৬. ক্যাস্টর অয়েল ঘন হওয়াতে আমার একটি বোতল অনেকদিন গেছে (প্রায় ৫-৬ মাস)।
এই ক্যাস্টর অয়েলের কোন কিছুই খারাপ লাগেনি, তবে তেলের গন্ধটা তুলনামূলকভাবে একটু কড়া মনে হয়েছে। হতে পারে তেলের উপাদানের জন্যই এমনটা হয়েছে, তবে চুলের উপকারের কথা ভাবলে এই সামান্য একটু গন্ধ কোন ব্যাপারই না। তবে ব্যবহারের আগে চুল পরিষ্কার থাকা চাই। সেটা যেকোনো তেলের ক্ষেত্রেই। কারণ চুলের গোড়ায় ধুলো ময়লা জমে থাকা অবস্থায় তেল দিলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
জ্যামাইকান ব্ল্যাক ক্যাস্টর অয়েল কোথায় পাবেন?
এদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে অর্ডার করলে পেতে পারেন। আর দেশে শপ.সাজগোজ.কম-এর যমুনা ফিউচার পার্ক ও সীমান্ত স্কয়ারে অবস্থিত ফিজিক্যাল শপে পাবেন। তাছাড়া তাদের অনলাইন ওয়েবসাইটেও অর্ডার করে দেশের যেকোনো প্রান্তে হোম ডেলিভারি পাবেন।
ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ