ভিটামিন সি ফেসিয়াল | ঘরেই হবে ৫টি ধাপে পার্লারের মত ত্বকের যত্ন!

ভিটামিন সি ফেসিয়াল | ঘরেই হবে ৫টি ধাপে পার্লারের মত ত্বকের যত্ন!

facial

ফেসিয়াল আমার নরমালি বাসায় বসেই করা হয়। তবে, বেশ কয়েকবার বান্ধবীর সাথে পার্লারে গিয়েছিলাম তার ফেসিয়ালের সুবাদে। আর তখনই দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা পার্লারগুলোর উপর আমার ভরসা চলে গিয়েছে! তাদের ব্যবহৃত প্রোডাক্ট-এর মধ্যে অধিকাংশ ছিল লোকাল নকল প্রোডাক্টস!! আর আমরা কিন্তু চটজলদি প্রায় সময়ই বাসার পাশের পার্লারটিতে চলে যাই। কিন্তু  তাদের প্রোডাক্ট সম্পর্কে খুব একটা ধারণা রাখি না। ফেসিয়াল তো কত ধরনেরই আছে। এরমধ্যে ভিটামিন সি ফেসিয়াল স্কিনের জন্য বেশ ভালো কাজ করে।

আজকে আমরা জেনে নিবো কিভাবে বাসায় বসেই স্টেপ বাই স্টেপ ভিটামিন সি ফেসিয়াল করা যায়। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে জানিয়ে দেই।

ভিটামিন সি ফেসিয়াল সম্পর্কিত কিছু কথা

প্রথমে আমরা একটু জেনে নেই যে ভিটামিন সি স্কিনের জন্য কেন উপকারী? কেন আমরা ভিটামিন সি ফেসিয়াল করবো এবং কারা এই ফেসিয়ালটা করতে পারবেন?

SHOP AT SHAJGOJ

    ১) ভিটামিন সি আমাদের স্কিনের জন্য খুবই উপকারী। এটি আমাদের স্কিনের কোলাজেনকে বুস্ট করে স্কিনকে টাইট ও সফট করে তোলে। এটি স্কিনের ফাইন লাইন এবং রিংকেল দূর করতে খুবই কার্যকরী।

    ২) এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সূর্যের ইউভি থেকে তৈরী স্কিন ড্যামেজ সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। এটি হাইপারপিগমেন্টেশন এবং ডার্ক স্পট লাইট করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি স্কিন ব্রাইটেনিং-এ বেশ ভালো কাজ করে।

    ৩) ভিটামিন সি ফেসিয়াল এমন সকল ইনগ্রেডিয়েন্টস-এ তৈরি, যাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। আর ভিটামিন সি থাকা মানেই উপরে উল্লিখিত উপকারিতাগুলো আপনারা পেয়ে যাচ্ছেন।

    ৪) এবার আসি কারা কারা এই ভিটামিন সি ফেসিয়াল করতে পারবে।  যাদের বয়স ২০+, তারা এই ফেসিয়ালটি অনায়াসেই করতে পারবেন। আর ভিটামিন সি যেহেতু অ্যান্টি-এজিং এর জন্য বেশ কাজের তাই বয়স যখন ২৫+, তখন থেকে রেগ্যুলার বেসিস-এ এটা করা ভালো। এতে স্কিন দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়াও রোধ হবে। আর যাদের স্কিনে বয়সের ছাপ পড়েই গেছে তারা তো এটা অবশ্যই করতে পারবেন।

    ৫) অনেকে কিছু প্রশ্ন করে থাকে, যেমন- “আমার অয়েলি স্কিন”। আবার অনেকে বলে থাকেন, “আমার ড্রাই স্কিন তো আমি এই ফেসিয়াল করতে পারব কি না?”… সেক্ষেত্রে বলি, এই ফেসিয়ালটা যে কোনো স্কিন টাইপেই করতে পারবেন।

    SHOP AT SHAJGOJ

      যেভাবে ভিটামিন সি ফেসিয়াল করবেন

      ফেসিয়াল নরমালি ৫টি  ধাপে করা হয়ে থাকে। চলুন দেখে নেই স্টেপগুলো-

      ১. ক্লিঞ্জিং

      ক্লিঞ্জিং শুরু করার আগে প্রথমেই আপনার চুলগুলো বেঁধে নিয়ে একটা হেড ব্যান্ড লাগিয়ে নিন । এবার আপনার মুখে যদি কোনো মেকআপ, সানস্ক্রিন, ময়েশ্চারাইজার দেয়া থাকে, তা রিমুভ করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে মেকআপ রিমুভার ব্যবহার করে নিয়ে ফেইসটি ফেইস ওয়াশ দিয়ে ধুয়ে নিতে পারেন।

      ক্লিঞ্জিং এর জন্য যে সকল উপকরণ লাগবে-

      • টকদই
      • অরেঞ্জ জুস
      • কাঁচা দুধ

      পদ্ধতি-

      একটি বাটিতে ১ টেবিল চামচ টকদই, ১ চা চামচ অরেঞ্জ জুস, ১ চা চামচ কাঁচা দুধ নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে আপনার ক্লিন ফেইস এবং গলায় এটি ভালোভাবে অ্যান্টিক্লক মোশনে ম্যাসাজ করুন ৩-৫ মিনিট। এরপর নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলে মুখটা মুছে নিন।

      ২. স্ক্রাবিং

      উপকরণ-

      • চিনি
      • অরেঞ্জ জুস
      • মধু
      • কমলার খোসার গুঁড়া

      পদ্ধতি-

      একটি বাটিতে ১ টেবিল চামচ চিনি, ১ টেবিল চামচ অরেঞ্জ জুস,১ চা চামচ কমলার খোসার গুঁড়া, হাফ চা চামচ মধু মিলিয়ে নিন। এটিই আপনার হোমমেইড স্ক্রাব। এই স্ক্রাব-টা নিয়ে ফেইস এবং গলায় অ্যান্টিক্লক ওয়াইজ আস্তে আস্তে স্ক্রাবিং করুন ৩ মিনিট ধরে। স্ক্রাবিং করা হয়ে গেলে নরমাল পানি দিয়ে মুখ-গলা ধুয়ে নিয়ে মুছে ফেলুন।

      SHOP AT SHAJGOJ

        ৩. স্টিমিং

        একটি হাড়িতে পানি ফুটিয়ে নিন। এবার ঐ ফুটন্ত পানিতে চাইলে তাজা কমলার খোসা দিতে পারেন। এখন কিন্তু মার্কেটে ফেসিয়াল স্টিমিং টুলও কিনতে পাওয়া যায়। চোখ বন্ধ করে একটি তোয়ালে মাথার উপরে দিয়ে মাথা ঢেকে পানির বাষ্পটাকে স্কিনে ভালোভাবে প্রবেশ করতে দিন। এভাবে ৫ মিনিট করুন। এতে করে ত্বকের রোমকূপগুলো খুলে যাবে। এবার মুখ সরিয়ে নিন এবং খুব সাবধানতার সাথে ব্ল্যাক হেডস এবং হোয়াইট হেডস রিমুভার স্টিক দিয়ে ওগুলো আস্তে আস্তে পুশ করে বের করে নিন। তবে ব্রণগুলো খোঁটাখুঁটি করতে যাবেন না যেন!

        ৪. ফেইস মাস্ক

        ফেইস মাস্ক বানাতে যে সকল উপকরণ লাগবে-

        • বেসন বা মুলতানি মাটি
        • অরেঞ্জ জুস
        • স্ট্রবেরী বা তরমুজ, যেটা হাতের কাছে পাবেন
        • টকদই

        (যাদের স্কিন ড্রাই, তারা এর সাথে কয়েক ড্রপ আমন্ড অয়েল যোগ করবেন। আর স্কিন সেনসিটিভ হলে ১-২ ফোঁটা টি ট্রি অয়েল যোগ করতে পারেন।)

        পদ্ধতি-

        প্রথমে একটি পাকা স্ট্রবেরী ধুয়ে নিয়ে, এটাকে একটা কাঁটা চামচের সাহায্যে খুব ভালোভাবে ম্যাশড করে নিন। স্ট্রবেরী না থাকলে তরমুজের টুকরো নিয়ে চটকে নিবেন। এবার, একটা বাটিতে ২ টেবিল চামচ বেসন বা মুলতানি মাটি, ১ চা চামচ অরেঞ্জ জুস, এক চা চামচ ম্যাশড ফ্রুট, ১ চা চামচ টকদই নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে একটা স্মুদ পেস্ট তৈরি করুন। এই মাস্কটি মুখ এবং গলায় লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর নরমাল পানি দিয়ে একটু ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন এবং টাওয়েল দিয়ে মুখটা প্যাট ড্রাই করুন।

        ৫. টোনার এবং ময়েশ্চারাইজার

        এই ধাপটি হলো ফেসিয়ালের লাস্ট স্টেপ। এই স্টেপ-টা কিন্তু কোনোভাবেই বাদ দেয়া যাবে না। টাওয়েল দিয়ে মুখটা প্যাট ড্রাই করা হয়ে গেলে একটি কটন প্যাডে আপনার পছন্দসই একটা টোনার নিয়ে পুরো মুখ এবং গলা মুছে নিন। টোনার-টা শুকিয়ে গেলে আপনার স্কিন টাইপ অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। চাইলে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার বা সিরামও ব্যবহার করতে পারবেন।

        ব্যস!!! এই তো হয়ে গেল ভিটামিন সি ফেসিয়াল। আশা করছি এখন আর পার্লারে গিয়ে অনেক টাকা খরচ করে এই ফেসিয়ালটি করতে হবে না। ঘরে বসেই সম্পূর্ণ ন্যাচারাল ইনগ্রেডিয়েন্টস দ্বারা সহজেই ভিটামিন সি ফেসিয়াল করে নিতে পারবেন।

        ছবি- সাজগোজ, krishahairandbeauty.com

        211 I like it
        35 I don't like it
        পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

        escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort