উজ্জ্বল মসৃণ হাত,পা বা ত্বকের জন্য ওয়্যাক্সিং (waxing)-এর সমতুল্য আর কিছুই নেই। আর সেই ওয়্যাক্স যদি নিজের হাতে বানান তাহলেতো সোনায় সোহাগা হয়ে গেল। নিরাপদ হলো আবার নিশ্চিন্তে ব্যবহারও করতে পারলেন। বর্তমান যুগের মেয়েরাতো কল্পনাই করতে পারে না, লোমযুক্ত হাতে তারা চুড়ি, ব্রেসলেট পরবে বা প্রিয়জনের উপহার দেয়া পায়েলটির সৌন্দর্য লোমের কারণে নষ্ট হবে, এ যেন কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তাই তারা ব্যবহার করেন বিভিন্ন ধরনের ওয়্যাক্স। বাজারে বিভিন্ন ব্রান্ড-এর ওয়্যাক্সিং ক্রিম, স্ট্রিপ বা ওয়্যাক্স আছে, যা সব সময় আপনার কোমল ত্বকের নিরাপত্তা দিতে পারে না। যেহেতু এটি সরাসরি আপনার স্কিন-কে স্পর্শ করবে তাই মানসম্মত হওয়া খুবই জরুরী। বাজার থেকে কেনা ওয়্যাক্স ব্যবহার করলে ত্বকে অনেক সময় কালো ছোপ বা ফুসকুড়ি দেখতে পাওয়া যায়। তাই ঘরে বসেই নিজের সৌন্দর্য চর্চার উপাদান নিজেই বানিয়ে নিন। ওয়্যাক্স গোড়া থেকে লোম তুলে আনতে সক্ষম তাই ২-৮ সপ্তাহের মধ্যে আর এদের দেখা মেলে না। অবশ্য অনেকের ১ সপ্তাহের মধ্যে আবার লোম উঠতে শুরু করে। এটা তাদের হরমোনজনিত কারণেই হয়। আসুন কয়েকটি সহজ ধাপের মাধ্যমে জেনে নেই ওয়্যাক্স বানানোর এবং তা ব্যবহারের পদ্ধতি।
ওয়্যাক্সিং করার উপকরণ
- ১ কাপ চিনি
- ১/৪ কাপ মধু
- হাফ কাপ লেমন জুস
ব্যবহার প্রণালী
১) ওয়্যাক্স বানানোর পদ্ধতি
১. চিনি গলিয়ে নিন
একটি ভারী মাঝারি সাইজ-এর সস প্যান-এ চিনি নিন। মধ্যম আঁচে প্যান-টি বসান, চিনি নাড়বেন না, শুধু ২/১বার হালকা হাতে প্যানের চারপাশ থেকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা চিনিগুলো গুছিয়ে দিবেন। ক্যারামেল হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
২. এবার মধু আর লেবুর পালা
মধু আর লেবু একটি কাঠের চামচ দিয়ে ঐ চিনির মধ্যে দিন। কিন্তু খুব সাবধান কারণ এই ক্যারামেল করা চিনি খুবই গরম আর ফোমি (foamy) থাকবে। ঘন ঘন নাড়তে থাকুন যতক্ষণ পর্যন্ত না প্যান কেক-এর মত ব্যাটার তৈরী হয়। যদি মিশ্রণ বেশি ঘন হয়ে যায় তাহলে ১ টেবিল চামচ পানি মিশিয়ে নিন। তৈরী হয়ে গেল আপনার জন্য নিরাপদ ওয়্যাক্স।
৩. ওয়্যাক্স সংরক্ষণ
যদি আপনি এটা পরে ব্যবহার করতে চান তাহলে ঠাণ্ডা করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন।
২) আপনার বানানো ওয়্যাক্স-এর ব্যবহার পদ্ধতি
১. লোমের দৈর্ঘ্য মেপে দেখুন। লোমের দৈর্ঘ্য যেন ১/৮ ইঞ্চি এবং ১/৪ ইঞ্চির মধ্যে হয়। বেশি ছোট হলে লোমের গোড়া থেকে উঠানো কষ্টকর হবে।
২. পরিষ্কার সুতি কাপড় নিন। পরিষ্কার সুতি অথবা লিনেন কাপড় নিন। ১হাত লম্বা সাইজ করে নিন। এভাবে কয়েকটি কাপড় কেটে সাইজ করে রাখুন।
৩. পাউডার লাগান ওয়্যাক্সিং-এর জায়গায় হাত, পা বা যে স্থানের লোম উঠাতে চান সেখানে বেবি পাউডার অথবা কর্নস্টার্চ ছিটিয়ে দিন। এর ফলে শরীরের সব তেল আর ঘাম শোষণ করে নেবে পাউডার।
৪. নিজের হাতে বানানো ওয়্যাক্স লাগান। একটি স্পাচুলা বা কাঠের চামচের সাহায্যে লোমের ওপর ওয়্যাক্স লাগান। যেদিকে লোমের গ্রোথ সেদিকে ওয়্যাক্স লাগাতে হবে।
৫. সুতি কাপড় ওয়াক্স-এর ওপর চেপে ধরুন। একটি কাপড়ের টুকরো নিন। ওয়াক্স লাগানো স্থানের উপর ভালোভাবে চেপে চেপে কাপড়টি বসান। এবার কাপড়টির একপাশ ধরে যেদিকে লোমের গ্রোথ তার বিপরীত দিকে টান দিন। এই প্রক্রিয়াটি খুব দ্রুত করতে হবে। ওয়াক্স ঠাণ্ডা হয়ে গেলে লোম উঠতে চাইবে না।
দেখলেনতো কত সহজ উপায়ে ওয়াক্স বানিয়ে ফেললেন আবার ওয়াক্সিং-ও করে ফেললেন। ব্যবহার করার পর যতটুকু থেকে যাবে সেটা ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। কিন্তু এমন পাত্রে রাখুন যেটা পরের বার ব্যবহার করার সময় আবার একটু গরম করে নেয়া যাবে। সবার জন্য শুভ কামনা রইল।
ছবি- সাটারস্টক