সাধারণত গর্ভের ১৮ থেকে ২৪ সপ্তাহের মধ্যে মায়েরা গর্ভস্থ বাচ্চার নড়াচড়া বা মুভমেন্ট টের পেয়ে থাকেন। যারা প্রথমবার গর্ভধারণ করেছেন তাদের ক্ষেত্রে মুভমেন্ট বুঝতে কিছুটা সময় বেশী লেগে থাকে। এরপর মায়েরা বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে পর্যবেক্ষণ করেন এবং গর্ভের বাচ্চার নড়াচড়া পর্যবেক্ষণ করে মুভমেন্ট কমে গেলে চিন্তিত হয়ে পড়েন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে দিনের মধ্যে সব সময় কি মুভমেন্ট একই রকম থাকবে? – না। বাচ্চারা ঘুমের সময় কোন মুভমেন্ট করে না। এই স্লিপিং ফেজ সর্বোচ্চ ৯০ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। আরো অন্যান্য যেসব সাধারণ কারণে মায়েরা বাচ্চার নড়াচড়া স্বাভাবিকের চেয়ে কম পেতে পারেন সেগুলো হচ্ছে –
- প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল সামনে থাকলে।
- মায়ের কিছু ওষুধের কারণে, যেমন তীব্র ব্যথা বা ঘুমের ঔষুধের কারণে মুভমেন্ট কমে যেতে পারে।
- কোন কারণে বাচ্চার শ্বাসকষ্ট হলে কিংবা ফিটাল ডেথ হবার আগে মুভমেন্ট কমে যায়।
- আ্যামনিওটিক ফ্লুইড কমে গেলে।
- মায়েরা আ্যালকোহোল বা ধুমপানে অভ্যস্ত থাকলে।
- মায়ের মানসিক বা শারীরিক অবস্থার কোন পরিবর্তন হলে।
- বাচ্চার নিউরোমাস্কুলার ডিজিজ থাকলে।
তবে সব মায়েদের ক্ষেত্রে মুভমেন্ট পর্যবেক্ষণ জরুরি নয়। কোন মায়ের যদি এমন কোন ধরনের শারীরিক সমস্যা থাকে যা বাচ্চাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে তবে তাকে এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। এছাড়াও প্রেগনেন্সির শেষ দিকে এবং ডেলিভারির আনুমানিক সময়ের পরও (post dated pregnancy) কেউ যদি নরমাল ডেলিভারির জন্য অপেক্ষমাণ থাকেন, তাকে মুভমেন্ট পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয়। সাধারণত এ সময়ে গর্ভস্থ বাচ্চা দিনে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ বার মুভমেন্ট করে থাকে। এর চেয়ে কম মনে হলে মাকে বাঁ কাত হয়ে পরবর্তী ২ ঘন্টা মুভমেন্ট গুনতে হবে এবং যদি এটা ১০ এর কম হয় তবে সে চিকিৎসক এর শরণাপন্ন হবে (RCOG Green top guideline অনুযায়ী)। এরপর বাচ্চার সুস্থতা দেখার জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী USG, CTG কিংবা Biophysical profile করে চিকিৎসক পরবর্তী পদক্ষেপ নিবেন।
ছবি – প্রেগমেড ডট অর্গ
লিখেছেন – ডা: নুসরাত জাহান
অ্যাসোসিয়েট কনসালটেন্ট (অবস-গাইনী)
ইম্পেরিয়াল হসপিটাল, চট্টগ্রাম।