মেকআপ করতে ভালবাসেন খুব! কিন্তু প্রতিনিয়ত মেকআপ করতে যেয়ে স্কিনের বেহাল দশা হয়েছে কি? ঘন ঘন মেকআপ করার ফলে আমাদের অনেকের স্কিনেই দেখা দেয় নানা রকম সমস্যার। একটা সময় পর যেয়ে দেখা যায় মেকআপ স্কিনে সুন্দর মত বসতে চাচ্ছে না। আবার কারো কারো স্কিন এতটাই ড্যামেজ হয়ে পড়ে যে, মেকআপ ছাড়া থাকলে দেখতে খুব বাজে লাগে। তাই স্কিনকে ড্যামেজ হওয়া থেকে রক্ষা করতে আগে থেকেই কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। মেকআপ করতে ভালবাসলেও কিছু নির্দিষ্ট সময় রয়েছে যখন আমাদের স্কিনকে রিল্যাক্স হওয়ার জন্যে সময় দিতে হয়। যেমন- ঘুমানোর সময়টা। এসময় কোনভাবেই মেকআপ করা উচিত নয়। এরকম আরও কিছু বিষয় বা সময় রয়েছে যা মেনে চলা খুবই প্রয়োজন। স্কিনকে সুস্থ রাখতে এবং ড্যামেজ ফ্রি রাখতে সবার এই সতর্কতাগুলো মেনে চলা প্রয়োজন। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক, কোন কোন সময়ে মেকআপ না করা আমাদের ত্বকের জন্য ভালো।
১. খুব বেশি ব্রণ বা অ্যাকটিভ একনে থাকলে
আমাদের অনেকের মুখেই সারাবছর ধরে অ্যাকটিভ একনে বা ব্রণের সমস্যা থাকতে দেখা যায়। সমাধান হিসেবে স্কিন কেয়ারের পরিবর্তে আমরা অনেকেই উল্টো স্কিনের ওপর আরও ভারী মেকআপ করতে যাই। এর ফলে আমাদের স্কিন যে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে তা আমরা বুঝতেও পারিনা। যাদের মুখের ত্বকে ব্রণের সমস্যা রয়েছে তাদের ঘন ঘন মেকআপ করা একদমই উচিত নয়। এমন অবস্থায় মুখে নানা ধরনের মেকআপ প্রসাধনী যেমন- ফাউন্ডেশন বা কনসিলার ব্যবহারে ব্রণের উপদ্রব আরও বেড়ে যাবে। এছাড়াও মেকআপের ক্ষেত্রে বিউটি ব্লেন্ডার বা মেকআপ ব্রাশটি ঠিক ভাবে পরিষ্কার করা না থাকলে তা ব্যবহার করার ফলে ব্রণের সমস্যা আরও বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত ব্রণের সমস্যা থাকলে এ সময় মেকআপ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
২. ওয়ার্ক আউট করতে গেলে
আমাদের মধ্যে অনেকেই কোথাও বের হতে গেলেই মেকআপ করা প্রেফার করে। একবার ভেবে দেখুনতো, ওয়ার্ক আউট করার সময় শরীর থেকে যে ঘাম বের হয় তা ফাউন্ডেশন, ব্লাশার, হাইলাইটারের সংস্পর্শে এসে আমাদের স্কিনের কি পরিমাণ ক্ষতি করতে পারে? মেকআপের এই প্রোডাক্টসগুলোর সাথে ঘাম মিশে আমাদের মুখের রোমকূপ বন্ধ করে দিতে পারে। এতে আমাদের ত্বকে গুটি গুটি বাম্পস, ব্রণ ইত্যাদির মত সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তাই জিমে যাওয়ার সময় বা শারীরিক যেকোন অ্যাকটিভিটিসের সময় মেকআপ এড়িয়ে চলা উচিত।
৩. পানিতে নামলে বা সাঁতার কাটার সময়
পানিতে নামার কিছুক্ষণের মাঝেই আমাদের মুখে ব্যবহৃত প্রসাধনী ধুয়ে যায়। বিশেষ করে যখন আমরা সুইমিং পুলে নামি। এ সময় কোনোভাবেই মেকআপ মুখে নিয়ে পানিতে নামা উচিত নয়। সুইমিং পুলের পানিতে ক্লোরিন মেশানো থাকে। আর এই ক্লোরিন আমাদের স্কিনের জন্যে মারাত্মক ক্ষতিকর। তার ওপর যদি মুখে মেকআপ অ্যাপ্লাই করা থাকে তাহলে দ্বিগুণ হারে স্কিনের প্রবলেম দেখা দিতে পারে। অনেকেরই আবার সুইমিং পুলে নামলেই মুখে জ্বালাপোড়া করে, মুখে গুটি গুটি র্যাশের মত দেখা দেয়। আবার অনেকের মুখ লাল হয়ে ফুলেও যায়। তাই মুখে মেকআপ ব্যবহার করে কোনভাবেই সুইমিং পুলে নামা উচিত নয়। এতে করে স্কিনের খুব বেশি ক্ষতি হতে পারে।
৪. স্কিনের যেকোন ধরনের ট্রিটমেন্ট চলাকালীন
মানুষ ভেদে এবং ত্বকের ধরন ভেদে আমাদের একেক জনের স্কিন একেক রকম হয়। আর আমাদের ত্বকেও দেখা দেয় বিভিন্ন সমস্যা। অনেকেই স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট এ ভরসা রাখে আবার অনেকেই ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন। কিন্তু যে সময়টা আমাদের স্কিনের কোন ধরনের ট্রিটমেন্ট চলতে থাকে তখন মেকআপ রিলেটেড প্রোডাক্ট ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে স্কিনে সাইড ইফেক্ট দেখা দিতে পারে। একটু অবহেলার জন্য স্কিনের পার্মানেন্ট ড্যামেজ হওয়ার আশংকা থাকে। এমনকি স্কিন ট্রিটমেন্ট শেষ হয়ে গেলেও কিছুদিনের বিরতি দিয়ে মেকআপ ব্যবহার করা ভাল।
৫. সপ্তাহে অন্তত একদিন যাবতীয় মেকআপ এড়িয়ে চলুন
ভালভাবে বেঁচে থাকতে এবং সুস্থ থাকতে আমাদের যেমন প্রতিনিয়ত শ্বাস নেওয়ার প্রয়োজন হয় তেমনি আমাদের স্কিনেরও শ্বাস নেওয়া খুবই দরকার। আমরা যখন আমাদের স্কিনে প্রতিনিয়ত প্রসাধনী ব্যবহার করি তখন স্কিন তার স্বাভাবিক অবস্থায় থাকেনা। তাই ত্বকের সুস্থতায় মাঝে মাঝে বিরতি দেয়াও প্রয়োজন। এতে আমাদের স্কিন আবার তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারবে। তাই সপ্তাহে অন্তত একদিন হলেও মুখে যাবতীয় মেকআপ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। মেকআপের পরিবর্তে সপ্তাহের কয়েকটি দিন স্কিন কেয়ারের জন্যে রাখুন।
সুন্দর মানেই খুব বেশি মেকআপ- এ ধারণাটি কিন্তু একেবারেই ঠিক নয়। তবে হ্যাঁ! সুন্দর করে মেকআপ করে নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে পারাটাও একটা আর্ট। সব কিছুই যেমন খুব বেশি ভালনা, তেমনি মেকআপ করার ক্ষেত্রেও এ বিষয়টি মনে রাখতে হবে। মেকআপের পাশাপাশি স্কিনের যত্নও কিন্তু নিতে হবে সমান ভাবে।মেকআপ করার পাশাপাশি নিয়মিত স্কিন কেয়ারের প্রয়োজন হয়। আর যখন আমরা এই স্কিন কেয়ারে অবহেলা করি তখনই স্কিনে দেখা দেয় নানা রকম সমস্যার। স্কিন কেয়ার করতে চাইলেও আমরা অনেকেই জানিনা কীভাবে, কখন মেকআপের পাশাপাশি স্কিন কেয়ার করতে হবে। আশা করছি, আজকের এই লিখাটিতে তুলে ধরা সাবধানতাগুলো ঠিকঠাক মেনে চলতে পারলে আপনিও কিছুটা উপকৃত হবেন।
স্কিন ও হেয়ার কেয়ারের জন্য অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে চাইলে আপনারা সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপ ভিজিট করতে পারেন, যার একটি যমুনা ফিউচার পার্ক ও অপরটি সীমান্ত স্কয়ারে অবস্থিত। আর অনলাইনে কিনতে চাইলে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, সুন্দর থাকবেন।