পার্টিতে যাওয়ার জন্য পোশাকের সাথে মিলিয়ে মেকআপ করেছেন। কিছুক্ষণ পর দেখা গেলো মেকআপ ফেটে গিয়ে একদম কেকি লাগছে! সবকিছু ঠিকঠাক মতো অ্যাপ্লাই করার পরেও কীভাবে এমন হলো কিছুতেই বুঝতে পারছেন না? ভেবে দেখুন তো, ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই এর আগে প্রাইমার ইউজ করেছিলেন কিনা? মেকআপের সবচেয়ে অ্যাসেনশিয়াল এই প্রোডাক্টটি ইউজ না করার কারণে মেকআপ বেইজ যে ভালোভাবে বসে না সেটা আমরা অনেকেই জানি না। স্কিনকে স্মুথ করতে এবং ফ্ললেস বেইজ মেকআপ করার জন্য স্কিনকে প্রিপেয়ার করার কাজটি করে প্রাইমার। মেকআপ শুরুর আগে প্রাইমার কেন ইউজ করা জরুরি সেটা নিয়ে যদি আপনার বিস্তারিত না জানা থাকে তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্যই।
প্রাইমার কী?
প্রাইমার অন্যান্য মেকআপ প্রোডাক্টের মতোই একটি কসমেটিক প্রোডাক্ট। ক্রিমি বা জেল টেক্সচারের এই প্রোডাক্টটি ইউজ করতে হয় মেকআপের শুরুতেই। মুখের ত্বক ও মেকআপের মধ্যে একটি এক্সট্রা লেয়ার তৈরি করে ফেইস প্রাইমার। এটি স্কিন টোন ইভেন করতে হেল্প করে বলে স্কিনের সারফেসটাও একদম স্মুথ লাগে। প্রাইমারের আরও অনেক বেনিফিটস আছে। আর দেরি না করে সেগুলো তবে জেনে নেওয়া যাক।
প্রাইমারের ধরন
১) ম্যাট প্রাইমার
যাদের অয়েলি স্কিন তাদের জন্য ম্যাট প্রাইমার খুবই অ্যাসেনশিয়াল একটি প্রোডাক্ট। পোরস মিনিমাইজ করা, ফাইন লাইনস স্মুথ করা, লং টাইমের জন্য ফাউন্ডেশন স্টে করা- সব কাজই করে ম্যাট প্রাইমার। সিলিকন বেইজড প্রাইমার ন্যাচারালি একটু ট্যাকি হয় যার কারণে ফাউন্ডেশন ও কনসিলার ছড়িয়ে যায় না। ট্যাকিনেস ও ম্যাটিফায়িং প্রোপার্টিজ থাকার কারণে অয়েলি স্কিনেও মেকআপ মেল্ট বা ক্রিজ হয়ে যায় না।
২) হাইড্রেটিং প্রাইমার
এ ধরনের প্রাইমারগুলো সাধারণত অয়েল বেইজড হয়। যাদের ড্রাই স্কিন তাদের জন্য এটা খুবই অ্যাসেনশিয়াল একটি প্রোডাক্ট। এ ধরনের অয়েল বেইজড প্রাইমারে হায়ালুরনিক অ্যাসিড ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এর মতো উপাদানগুলো থাকায় স্কিন ময়েশ্চারাইজড ও নারিশড থাকে। এতে স্কিনে কোনো ড্রাই প্যাচেস থাকে না। এটি ব্যবহারে স্কিন একদম স্মুথ হয়, যার কারণে বেইজ মেকআপ অ্যাপ্লাইয়ে কোনো প্রবলেম হয় না।
৩) ইল্যুমিনেটিং প্রাইমার
সিলিকন প্রাইমারের মতো ইল্যুমিনেটিং প্রাইমারের কাজও একই ধরনের। শুধু পার্থক্যটা হচ্ছে এটি স্কিনে শাইনি একটা লুক ক্রিয়েট করে। এ ধরনের প্রাইমারের উপর যখন ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করা হয়, তখন স্কিন আরও বেশি ডিউয়ি ও গ্লোয়ি দেখায়।
৪) কালার কারেক্টিং প্রাইমার
এ ধরনের প্রাইমারগুলো স্কিনের কালার কন্ট্রোল করতে, চোখের নিচের কালো দাগ বা স্কিনের রেডনেস ব্লার করতে হেল্প করে। স্কিনের আন ইভেন টোনকে ইভেন করে।
৫) আইশ্যাডো প্রাইমার
যদি আপনার আই লিড অয়েলি হয়, তাহলে এ ধরনের প্রাইমার আই লিডকে ম্যাট করতে, আইশ্যাডো লং লাস্টিং করতে, এমনকি আইশ্যাডোর একচুয়াল কালার আনতেও হেল্প করবে।
মেকআপ শুরুর আগে প্রাইমার ইউজ করার বেনিফিটস
১) স্কিন হাইড্রেটেড রাখতে
মেকআপ শুরুর আগে হাইড্রেটিং প্রাইমার ইউজের কথা শুনে হয়তো ভাবছেন, এত এত ময়েশ্চারাইজার থাকতে স্কিন হাইড্রেটেড রাখার জন্য প্রাইমারের আবার কী দরকার? আমরা যখন মেকআপ করি, তখন স্কিনের জন্য শুধু ময়েশ্চারাইজার এনাফ নয়। প্রাইমার ইউজ করলে মেকআপের জন্য স্কিন প্রোপারলি হাইড্রেটেড হয়। বিশেষ করে যাদের স্কিন অনেক বেশি ড্রাই, তারা মেকআপ করলে স্কিন আরও রাফ হয়ে ফেটে যায়। মেকআপ দেখতে তখন একদম ‘কেকি’ লাগে। এই প্রবলেম সলভ করতে হেল্প করে প্রাইমার। ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করার আগে প্রাইমার ইউজ করা হয় বলে স্কিন হাইড্রেটেড থাকে।
২) স্কিন টোন ইভেন করতে
স্কিনের রিংকেলস, ডার্ক সার্কেলস, একনে স্পটসহ স্কিনে যদি কোনো স্পট থাকে সেগুলোকে ব্লার করে দেয় কালার কারেক্টিং প্রাইমার। এটি স্কিন টোনকে ইভেন করতে হেল্প করে যার কারণে মেকআপ অ্যাপ্লিকেশন ইজি হয়। স্কিনের পোরস যদি ভিজিবল হয় সেটি ঢাকতেও এটি কাজ করে।
৩) ফ্ললেস ও ন্যাচারাল গ্লোয়িং লুক পেতে
ফাউন্ডেশন ছাড়াই স্কিনে ন্যাচারাল ও পারফেক্ট লুক আসবে এমন অনেকেই চান। এমন চাইলে ইল্যুমিনেটিং প্রাইমার খুব সহজ একটি সল্যুশন হতে পারে। পারফেক্ট, ফ্ললেস, হেলদি গ্লোয়িং ও ন্যাচারাল লুক পেতে প্রাইমারের জুড়ি নেই!
৪) স্কিনকে অয়েল ফ্রি ও ম্যাট রাখতে
প্রাইমারের রিমার্কেবল একটি বেনিফিট হচ্ছে এটি স্কিনের অয়েল কন্ট্রোল করে। অয়েলি স্কিনে সিবাম বেশি প্রোডিউস হয়। যার কারণে স্কিনও চিটচিটে হয়ে যায় দ্রুত। ম্যাটিফায়িং প্রাইমার ইউজ করলে টি-জোনসহ পুরো ফেইসে অয়েলিভাব কম থাকে। প্রাইমারে থাকা ম্যাটিফায়িং এলিমেন্টগুলো স্কিনে ম্যাট ও ফ্রেশ লুক দেয়। তাই অয়েলি স্কিনে মেকআপ অ্যাপ্লাইয়ের আগে প্রাইমার ইউজ করা কিন্তু মাস্ট!
৫) মেকআপ লং লাস্টিং রাখতে
প্রাইমার ইউজ করলে ফাউন্ডেশন খুব ইভেনলি ও স্মুথলি স্কিনে বসে। এছাড়া প্রাইমার অয়েল কন্ট্রোল করে বলে মেকআপ ফেটে যায় না। যার কারণে মেকআপ লং লাস্টিং হয়।
আশা করি বুঝতে পেরেছেন, ফাউন্ডেশন ইউজ করার আগে স্মুথ ও ফ্ললেস বেইজ পাওয়ার জন্য প্রাইমার কী কারণে মাস্ট হ্যাভ একটি প্রোডাক্ট! যে কোনো অথেনটিক মেকআপ প্রোডাক্টস কেনার জন্য আমার ভরসার জায়গা সাজগোজ। সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি। এই আউটলেটগুলো থেকে অথবা অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন আপনার পছন্দের যে কোনো মেকআপ, হেয়ার ও স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট।
ছবিঃ সাজগোজ