ঘুরতে যাওয়ার কথা সবাই ভাবেন। কিন্তু সময় এবং পর্যাপ্ত বাজেটের অভাবে সেটা হয়তো হয়ে উঠে না। কাল ছুটির দিন, ঘুরে বেড়ানোর জন্য উত্তম দিন। তাই চলুন জেনে নেই, পর্যাপ্ত সময় এবং বাজেট নিয়ে ঢাকার আশেপাশে ঘুরার আরও ২ টি জায়গার কথা। জায়গা দুটি মৈনট ঘাট ও জল জঙ্গলের কাব্য। পরিবার নিয়ে ঘুরে আসার মত দুটি অসাধারণ দুটি জায়গা।
১ দিনে ঢাকার আশেপাশে ঘুরে আসার মতো ২টি মনোরম জায়গা
১. মৈনট ঘাট
ঢাকার খুব কাছেই পদ্মা নদীর পাড় নিয়ে ঢাকার নবাবগঞ্জের দোহার উপজেলায় মৈনট ঘাট অবস্থিত। এখানে আসলেই মুগ্ধ হবেন। কারণ পদ্মা নদীর উত্তাল জলরাশি আপনাকে সমুদ্রের মতো দেখাবে। নদীর পাড়টায় বালুর কারণে কিছুটা বিচের মতো দেখায়। খালি পায়ে হেঁটে আরও ভালো লাগবে আপনার। মৈনট ঘাট জায়গাটা আসলেই দারুণ মনে হবে। অভিজ্ঞতাটা কিছুটা সমুদ্র দেখার মতই।
খুব ভোরবেলা আসলে আরও বেশি আনন্দ করে দেখতে পারবেন ঘাটের আশেপাশের পরিবেশ। ভোরে জেলেরা এখানে মাছ ধরে এবং বাজার বসে। চাইলে স্পিডবোট বা ট্রলার নিয়ে ঘুরে দেখতে পারেন। এখানে সব থেকে মজা পাবেন বর্ষার সময়। এছাড়াও আশেপাশে উকিলবাড়ি, জজবাড়ি আছে। সেখানে ঘুরে আসতে পারেন।
যাতায়াত
– গুলিস্তানের গোলাপ শাহের মাজারের সামনে থেকে সরাসরি মৈনট ঘাটের উদ্দেশ্যে বাস ছাড়ে। ভাড়া ৯০-১০০। দেড় থেকে আড়াই ঘণ্টার মধ্যে পৌছায় যাবেন। ফেরার সময়ও বাসেই ফিরতে পারবেন।
– এখানে রাতে থাকার মতো আশেপাশে কোন ব্যবস্থা নেই। দিনে আসে দিনেই ফিরতে হবে।
– মৈনট ঘাটে দুটি ভালো ভাতের হোটেল আছে। একটি আতাহার চৌধুরীর হোটেল, আরেকটি জুলহাস ভূঁইয়ার।
– কার্তিকপুর বাজারে শিকদার ফাস্টফুড নামক একটা খাবারের দোকান আছে। এছাড়াও আরো কিছু ভাতের হোটেলও আছে।
২. জল জঙ্গলের কাব্য, পূবাইলে
অসাধারন সুন্দর জায়গা পূবাইলের জল জঙ্গলের কাব্য যা একটি প্রাকৃতিক রিসোর্ট এর নাম। রিসোর্টটি পূবাইলে এক সাবেক পাইলট তৈরি করেছেন। তবে রিসোর্টে আধুনিক কিছু নাই বললেই চলে। পাইলট ভদ্রলোক খুব বেশি পরিবর্তন করতে চায়নি গ্রামটিকে। প্রকৃতিকে খুব বেশি পরিবর্তন না করে বিশাল এক জায়গা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে রিসোর্ট।
বিশাল একটি বিল, পুকুর আর বন-জঙ্গল আছে এখানে। যে কেউ চাইলে একটা দিন এখানে কাটিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। খুবই অন্যরকম পরিবেশ নিয়ে তৈরি এই রিসোর্ট।
যাতায়াত
নরসিংদী, ভৈরব বা কালিগঞ্জ এর বাসে পূবাইল কলেজ গেট নেমে পড়ুন। বামে রাস্তায় ব্যাটারী চালিত রিক্সায় করে প্রায় তিন মাইল গেলেই পাইলট বাড়ি বা জল জঙ্গলের কাব্য। খরচটা একটু বেশী। তবে খাবার সেই খরচের ভেতরেই থাকবে। সারাদিনের জন্য জনপ্রতি ১৫০০ টাকা (সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার আর বিকেলে স্ন্যাক্স)। এক দিন এবং একরাতের জন্য ৩০০০ টাকা জন প্রতি। শিশু, কাজের লোক ও ড্রাইভারদের জন্য ৬০০ টাকা জন প্রতি।
নাস্তায় চিতই পিঠা, গুড়, লুচি, মাংশ, ভাজি, মুড়ি এবং চা। দুপুরের খাবার হিসেবে ১০/১২ রকম দেশী আইটেম। মোটা চালের ভাত, পোলাও, মুরগির ঝোল, ছোট মাছ আর টক দিয়ে কচুমুখির ঝোল, দেশী রুই মাছ, ডাল, সবজি এবং কয়েক রকমের সুস্বাদু ভর্তা। খাবারের আয়োজনের ত্রুটি রাখেন নি এখানকার কর্তৃপক্ষ।
ঢাকার আশেপাশে ঘুরে আসার মতো ২টি মনোরম জায়গা আশা করি আপনার এই ছুটির দিনটিকে রাঙিয়ে তুলবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
ছবি – সাজগোজ.কম; সংগৃহীতঃ ফ্লিকার ডট কম