আহ, এত সুন্দর চুল! কি ঝলমলে! একথা শুনতে কার না ভাল লাগে।কিন্তু এই সুন্দুর চুলে যদি খুশকি থাকে, নিমিষেই আপনার আনন্দ মাটিতে পরিনত হবে। সাধারনত আমাদের মাথার ত্বকের শুষ্কতার কারণেই চুলে খুশকি হয়। এছাড়া মাথার ত্বকে একজিমা বা ফাংগাস আক্রমণের ফলেও খুশকি হতে পারে। আমাদের শহুরে জীবনে অতি মাত্রার ধুলাবালি আর ময়লা থেকেও আমাদের মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে ওঠে আর তা থেকেই খুশকি জন্ম নিতে পারে। বাজারে অনেক ধরণের Anti -dandruff শ্যাম্পু রয়েছে। সব শ্যাম্পু যে কার্যকরী তা নয়। বিজ্ঞাপনে খুশকিকে যত দ্রুত তাড়ানো যায়, আসলে কিন্তু খুশকি আমাদের মাথা থেকে তত তাড়াতাড়ি যায় না। আর আসলেই যায় কিনা সেটাও ভেবে দেখার বিষয়। তাই আসুন না, নিজে ঘরোয়া পদ্ধতিতে খুশকিকে দূর করি। জেনে নিই ঘরোয়া সেই পন্থাগুলো-
এস্পিরিন
এস্পিরিনে রয়েছে একই উপাদান (সালসায়লিক এসিড)যা Anti -dandruff শ্যাম্পুতে ব্যবহার করা হয়। তাই দুটো এস্পিরিন গুঁড়া করে প্রতিবার মাথা শ্যাম্পু করার সময় শ্যাম্পুর সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করবেন। এস্পিরিন মিশানো শ্যাম্পু মাথায় ১-২ মিনিট রাখতে হবে এবং এরপর ধুয়ে ফেলে পুনরায় এস্পিরিন ছাড়া শ্যাম্পু করতে হবে।
[picture]
টি ট্রি অয়েল
গবেষণায় দেখা গেছে যে, শ্যাম্পুর সাথে ৫% টি ট্রি অয়েল এর ব্যবহার খুশকি দূর করতে খুবই কার্যকর ।এজন্য আপনার নরমাল শ্যাম্পুর সাথে কয়েক ফোটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে নিয়মিত মাথা শ্যাম্পু করবেন।
বেকিং সোডা
খুশকি দূর করার মুল মন্ত্র আপনার কিচেনেই রয়েছে। ভিজা হাতে বেকিং সোডা নিয়ে মাথার ত্বকে ঘষে ঘষে লাগাতে হবে। এরপর শ্যাম্পু করবেন না। মাথা ধুয়ে ফেলবেন। বেকিং সোডা মাথার ত্বকের ফাঙ্গাসকে বাড়তে দেবে না, তবে আপনার চুল কিছুদিনের জন্য রুক্ষ হয়ে যেতে পারে। তবে,চিন্তার কিছু নেই। কয়েক সপ্তাহের ভিতরেই আপনার মাথার ত্বকের প্রাকৃতিক অয়েল আপনার চুলকে স্বাভাবিক করে তুলবে ।কিন্তু,ইতিমধ্যে খুশকি আর থাকবে না ।
আপেল সিডার ভিনেগার
আপেল সিডার ভিনেগার এর এসিডিটি আপনার মাথার ত্বকের ph লেভেল কে পরিবর্তন করে এটিকে শক্ত করে তোলে ।ফলে ফাঙ্গাস জন্মাতে পারে না । এজন্য কোয়াটার কাপ আপেল আপেল সিডার ভিনেগার, কোয়াটার কাপ পানির সাথে মিশিয়ে স্প্রে বোতলের সাহায্যে মাথার ত্বকে স্প্রে করে মাথাকে টাওয়েল দিয়ে পেঁচিয়ে রাখতে হবে ১৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা । এরপর, সাধারনভাবে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে এবং সপ্তাহে ২ বার এই পন্থা অবলম্বন করতে হবে ।
মাউথ ওয়াশ
খুশকিতে আসলে যখন খুব খারাপ অবস্থা তখন, মাথা শ্যাম্পু করার পর এলকোহল বেইজড মাউথ ওয়াশ দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলতে হবে ।এরপর চুলে conditioner ব্যবহার করতে হবে। মাউথ ওয়াশ এর অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদান ফাঙ্গাস জন্মানোকে রোধ করবে ।
নারকেল তেল
খুশকি দূর করার জন্য নারকেল তেলের ব্যবহার অপরিহার্য। মাথা শ্যাম্পু করার আগে নারকেল তেল দিয়ে মাথা ভালোভাবে মাসাজ করে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে। এরপর নরমালি শ্যাম্পু করতে হবে।
লেবু
দুই টেবিল চামচ লেবুর রস মাথায় মাসাজ করে পানিয়ে দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এরপর আবার এক চামচ লেবুর রস এক কাপ পানির সাথে মিশিয়ে, পানি দিয়ে মাথা আবার ধুয়ে ফেলতে হবে। এটা যতদিন খুশকি না যায়, ততদিন নিয়মিত করতে হবে ।
রসুন
রসুন ছেঁচে হাত দিয়ে মাথার ত্বকে মাসাজ করতে হবে শ্যাম্পু করার আগে। রসুনের গন্ধ দূর করার জন্য মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। রসুন খুশকির জন্মদায়ক ব্যাকটেরিয়ার জন্ম রোধ করে ।
অলিভ ওয়েল
১০ ফোটা অলিভ ওয়েল মাথার ত্বকে মাসাজ করে শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে সারা রাত মাথা পেঁচিয়ে রাখতে হবে এবং সকাল বেলা শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে।
উপরে বর্ণিত পন্থাগুলো খুবই সহজ এবং কার্যকরী। এখানে যেসব উপাদান ব্যবহার ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলোর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও নেই। তাই আপনি নিশ্চিন্তে এর যেকোনো একটি উপায় অবলম্বন করে দেখবেন। তবে যেটাই করবেন নিয়মিত করবেন। আপনার চুল হয়ে উঠবে খুশকিমুক্ত আর ঝলমলে।
ছবি – আরডি ডট কম
লিখেছেন – রোকসানা আকতার