শিশু মানেই সুন্দর। আর নবজাতক মানে আদরের আর যত্নের আরেক নাম। জন্মের পর বাচ্চার জন্য মায়ের দুধের বিকল্প নেই। মায়ের দুধই উত্তম খাদ্য। দুধ খাওয়ানোর জন্য কোন সময় নির্ধারণের দরকার হয় না। বাচ্চার ক্ষুধা লাগলে মা তা টের পায়। তখনই বাচ্চাকে খাওয়ানো যায়। কিন্তু শিশু যখন বড় হতে থাকে তখন মায়ের দুধের পাশাপাশি তার অন্য খাবারের প্রয়োজন হয়। শিশুর পূর্ণ ৬ মাস হবার পর শিশুর জন্য পরিপূরক খাবার দেওয়া উচিত। চলুন বিভিন্ন বয়স ভেদে শিশুর খাদ্য তালিকা কেমন হওয়া চাই তা জেনে নেওয়া যাক।
বিভিন্ন বয়স ভেদে শিশুর খাদ্য তালিকা
৬-৭ মাস বয়সের শিশুর খাদ্য
এ বয়সে শিশুর ওজন প্রায় ৬ কেজির মত হয় এবং তার জন্য ৭০০ কিলোক্যালোরি দরকার হয়। এই সময়ই পরিপূরক খাদ্য আরম্ভ করা উচিত। এর চেয়ে দেরি হয়ে গেলে শিশুরা খাবারের স্বাদ বুঝে যায় এবং খেতে চায় না।
দুধের সাথে কলা চটকে বা দুধের সাথে সুজি রান্না করে শিশুর প্রথম খাবার আরম্ভ করা যায়। চালের গুঁড়া, আটা ইত্যাদিও সিদ্ধ করে দুধের সাথে পাতলা করে খাওয়ানো যায়। মৌসুমি ফল যেমন পাকা কলা, পাকা পেঁপে, মিষ্টি ফলগুলো বাচ্চাকে দেওয়া যেতে পারে।
৭-৯ মাস বয়সের শিশুর খাদ্য
এ বয়সে শিশু কিছুটা পরিপক্ক হয় এবং ফল ও শস্য জাতীয় খাবার গ্রহণে সক্ষম হয়। এ সময় খাবারের ক্যালোরির চাহিদা বাড়ানো দরকার। খাদ্যে পানির পরিমাণ কমিয়ে কিছুটা ঘন থকথকে খাবার দেয়া যায়। এ সময় শিশু নিজের হাতে ধরে খেতে চেষ্টা করে। রঙ এর প্রতি আকর্ষণ বাড়ে, খাবারের প্রতিও আকর্ষণ বাড়ে। এ সময় সহজ পাচ্য খাবারের মধ্যে আলু সেদ্ধ, মৌসুমি সবজি সেদ্ধ, করে চটকিয়ে খাওয়ানো যায়। যেমন ফুলকপি, বরবটি, পেঁপে, এই ধরনের সবজিগুলো সেদ্ধ করলে নরম হয় যা শিশুর হজম হয়। শিশুর খাদ্যে সামান্য তেল যোগ করতে হয়। ফলে চর্বিতে দ্রব্য ভিটামিনগুলো সহজে শোষিত হয়।
৯-১২ মাস বয়সের শিশুর খাদ্য
এ সময় প্রায় বড়দের মত খাবার দেওয়া যায়। আগের তুলনায় আরো ঘন খাবার শিশু খেতে পারে। নরম খিচুড়ি, সিদ্ধ ডিম, ডাল, ভাত, দুধ-রুটি, দই, ক্ষীর, পুডিং ইত্যাদি খাবারগুলো শিশুকে খাওয়াতে হবে। এগুলো পুষ্টি পরিপূরকও বটে। স্যুপ শিশুর জন্য তৈরি করে ৪-৫ বার দেওয়া যায়।
১-২ বছর এর শিশুর খাদ্য তালিকা
ঘরের স্বাভাবিক খাবার বড়দের মত শিশুকে দেওয়া যেতে পারে। তবে নরম ও কম মশলা যুক্ত খাবার দেওয়াই ভালো। প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১০০ কিলোক্যলোরি দরকার যা পাতলা খাবার থেকে না দিয়ে ঘন খাবার থেকে দিতে হবে। সামান্য পরিমাণ তেল ও চিনি এই বয়সের শিশুর জন্য দরকার। এই সময় একবার ৫০-৭৫ গ্রাম খাবার ২-৩ ঘন্টা পরপর দিনে প্রায় ৫-৬ বার দিতে হবে।
শিশুর ক্যলোরি চাহিদার ১ টি চার্ট
বয়স (মাস) | ক্যালরি চাহিদা |
০-৩ | ১২০ |
৩-৬ | ১১৫ |
৬-৯ | ১১০ |
৯-১২ | ১০৫ |
গড় | ১১২ |
ছবি – সংগৃহীতঃ cdnparenting.com