মৌসুমি শাড়ি পরুয়াদের শাড়ি নিয়ে মাতামাতির মৌসুম আবার এলো বলে! বলছি পহেলা ফাল্গুন, পহেলা বৈশাখের কথা। বৈশাখ মাসের আরো বেশ অনেকটা দেরি থাকলেও ফাল্গুন মাস আসার কিন্তু খুব বেশি দিন বাকী নেই। সপ্তাহ দুয়েক দূরত্বে দাঁড়িয়ে আছে বসন্তের প্রথম দিন। তাই টুকিটাকি দরকারি কথা গুছিয়ে নেয়ার সময় হয়ে গেছে।
যারা নিয়মিতই শাড়ি পরে থাকেন, এসব উৎসব উপলক্ষে শাড়ি পরা নিয়ে তাদের উৎসাহ থাকলেও ঠিক ছটফটানি ভাব থাকে না। আর যারা শাড়ি পরার সুযোগ সবসময় করে উঠতে পারেন না, কোন বিশেষ দিনেই শাড়ি পরা হয় শুধু অথচ শাড়ির প্রতি আকর্ষণ প্রবল, তাদের মাঝে এই ছটফটানি ভাবটা থাকে ষোলআনা! শাড়ির উন্মাদনাটা অনেকের মাঝে সত্যি এমনই। মনে হতে থাকে, আহা আবার একটা উপলক্ষ এসেছে শাড়ি পরার!
[picture]
তো শাড়ি নিয়ে এমন বাড়াবাড়ি উৎসাহ যাদের, তাদের এখনই সবকিছু গুছিয়ে নেয়া উচিত। কেমন শাড়ি পরা হবে, কীভাবে পরা হবে শাড়িটা, সবকিছু ঠিক করে রাখুন যেনো উপলক্ষের দিনটায় নতুন করে কোন ঝামেলা পোহাতে না হয়।
নতুন শাড়ি পরবেন নাকি মায়ের আলমারিতে থাকা কোন শাড়ির দিকে নজর দেয়া আছে? মায়ের পুরনো শাড়ি হলে তবে তো শাড়ি ঠিক করা হয়েই গেছে, চিন্তা খানিকটা কমলো। এবারে ব্লাউজটা ঠিকঠাক মিলিয়ে নিতে হবে কেবল। এই কাজটা করতে হবে বেশ কিছুদিন আগেই। ব্লাউজ না মেলার বাহানায় যাতে বিশেষ দিনের আয়োজন সবটা মাটি না হয় আপনার।
শাড়ি কিনবেন বলে ভেবেছেন? কেমন শাড়ি চাচ্ছেন তবে? বাজার ঘুরে দেখুন কদিন আগে থেকেই। ট্রেন্ডি থাকার ব্যাপার-স্যাপার থাকলে তো জানতেই হবে কেমন শাড়ি, কেমন নকশা চলছে এখন বাজারে। আবার চলতি ধারার বাইরে থাকবেন এমনটা ইচ্ছা থাকলেও চলতি ধারাটা ঠিক কী, সেটা জানতেই হবে আপনাকে। তবেই না এড়াতে পারবেন সেটা!
বৈশাখের উৎসব মানে লাল-সাদা রঙ আর বসন্তবরণের রঙ হলুদ, কমলা বা বাসন্তী, এই চিন্তাধারা ছুটি নিয়েছে ম্যালা আগেই। রঙের নির্বাচন হয় যার যার পছন্দ মতন। এসব দিনে কালো শাড়িতেও নিজেকে সাজান অনেক মেয়ে। তবুও, উৎসবের রূপকে ধারণ করে তেমন কিছু রঙ আলাদা রয়েছেই। লাল, রাণী রঙ, হলুদ, কমলা, গোলাপি, বেগুনি, সবুজ, অফ হোয়াইট রঙগুলোতে এসব উৎসবের আমেজটা পুরো মিশে থাকে। তাই একেবারে ভিন্ন পথে না হেঁটে শাড়ির রঙ বাছতে পারেন এর মধ্য থেকেই।
শাড়ি হতে পারে খুবই সাধারন। একরঙের জমিনের সাথে আরেক রঙের পাড়। অথবা লেইস বসানো পাড়, হালকা কাজের জমিন-আঁচল। তাহলে ব্লাউজটা একটু জমকালো রাখতে পারেন সাথে। চুমকির কাজ অথবা কয়েকরঙা সুতোর মাঝে গ্লাসওয়ার্কের ব্লাউজ বেশ মানাবে আপনার হালকা কাজের শাড়ির সাথে। আর শাড়ি যখন অমন হালকা গোছের, তখন একটু জমকালো ব্লাউজে আপনাকে মোটেও জবরজং লাগবে না বরং বৈপরীত্যের কারনেই সৌন্দর্য ফুটবে।
শীতের শেষে যেহেতু বসন্ত, ঠান্ডা পুরোপুরি ছেড়ে যাবে না এই সময়ে। তাই মন চাইলে ভারী কাজের পছন্দের শাড়িটা পরেও ফেলতে পারেন। গরম নিয়ে অসুবিধায় পড়বেন না বলা যায়।
চাইলে নিজের শাড়িটা নিজেই নকশা করে বানিয়ে ফেলুন। নিজের পোশাক নিজের ইচ্ছে মতন তৈরি করার আনন্দটাও পাবেন, শাড়িও একেবারে মন মতন হলো।
সবকিছু আগেভাগেই সাজিয়ে গুছিয়ে ফেলুন তবে। বসন্তের পয়লা দিনের উৎসবে শাড়ি গায়ে জড়িয়ে মন খুশিতে ভরে যাক শাড়ি-পাগল সকল মেয়ের!
লিখেছেন – মুমতাহীনা মাহবুব
মডেল – সানজিদা তন্বী