কেমন আছেন সবাই? নিশ্চয় ভালো। দেখতে দেখতে শীত চলে এল আর সেই সঙ্গে বিয়ের মৌসুমও। আর শীতের সময় মেকআপ আর উৎসব দুটোর মজাই যেন সবচেয়ে বেশি জমে ওঠে। যেহেতু এখন বিয়ের মৌসুম চলছে, প্রায় প্রতি সপ্তাহেই কারো না কারো দাওয়াত লেগেই থাকে। আর গরমে মেকআপ নষ্ট হওয়ার ভয় থাকেনা বলে নির্বিঘ্নে মনের মত করে সাজা যায়। কীভাবে সাজলে ভাল দেখাবে? কি করবেন আর কি করবেন না; এই নিয়ে দোটানায় পরে যান অনেকেই। তাই শীতকালীন মেকাপের কিছু টিপস দিয়ে পাঠককে সাহায্য করার চেষ্টা করব আজকে।
বেইজের ক্ষেত্রেঃ মেকাপের শুরুতে স্ক্রাব করে নিতে পারেন এতে ত্বকের জমে থাকা মরা কোষ উঠে যাবে। আর মেকাপের আগে ত্বকের ধরন অনুযায়ী অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন। এরপর প্রাইমার দিয়ে বেইজ মেকআপ আরম্ভ করবেন। বেইজের ক্ষেত্রে দিনের বেলা লাইট টু মিডিয়াম আর রাতে মিডিয়াম টু হাই কাভারেজ দেয় এমন ফাউনডেশন ইউজ করতে পারেন।
কালার কারেক্টার ও কন্সিলারঃ অনেকের কাছেই শোনা যায় যে স্কিন টোনের সাথে ম্যাচ করে কন্সিলার দেওয়ার পরেও চোখের নিচের কালচে ভাবটা যেন রয়েই যায়। তাদের জন্য কন্সিলারের আগে ব্যবহার করা প্রয়োজন কারেক্টার। যাদের চোখের নিচে কালচে দাগ আছে তারা অরেঞ্জ কালার কারেক্টার ব্যবহার করবেন। আর পিম্পল এর লাল দাগ বা নাকের পাশে অনেকের লালচে দাগ থাকে সেটি মিন্ট গ্রিন কালার কারেক্টার দিয়ে ঠিক করা যায়। আর যাদের ত্বকের রঙ ফ্যাকাশে তাদের ত্বকের জন্য ইয়ালো কালার কারেক্টার উপযুক্ত। এই নিয়ে বিস্তারিত একটা আর্টিকেল লিখব ভবিষ্যতে। কালার কারেক্টার দেওয়ার পরে কন্সিলার ব্যবহার করুন।
ব্লেন্ড করুন ভালোভাবেঃ যেকোনো ত্বকেই মেকআপ সেট করর মূলমন্ত্র হল ত্বকের সাথে তা ভালভাবে মিশিয়ে দেওয়া, অর্থাৎ ব্লেন্ড করা।ফাউন্ডেশনের ক্ষেত্রে স্টিপলিং ব্রাশ বা বিউটি ব্লেন্ডার অথবা মেকআপ স্পঞ্জ একটু ভিজিয়ে চিপে নিয়ে আলতো করে চেপে চেপে ত্বকে ব্যবহার করবেন। সবশেষে সেটিং পাউডার দিয়ে বেইজ সেট করে নিন। আর চোখের সাজে ব্লেন্ডিং ব্রাশ ইউজ করুন।
ব্যবহার করুন হাইলাইটারঃ মেকাপের পরে চেহারায় একটা glowy ফিনিশ আনার জন্য হাইলাইটার ব্যবহার করুন চিক বোনে, ব্রাও বোনে, আর নাকের হাড়ের ঠিক মাঝ বরাবর। আর পুরো ফেসে ডিউই লুক আনার জন্য ফাউনডেশনের সাথে মিক্স করে নিতে পারেন লিকুইড হাইলাইটার বা লুমিনেটর।শীতকালে দিনের মেকআপে সফট কনটোরিং করুন আর রাতের বেলা কনটোরিং এর জন্য আরও একটু ডার্ক শেড দিতে পারেন। জমকাল ভাব আনার জন্য রাতের সাজে চাইলে ব্রঞ্জার ইউজ করতে পারেন। ব্লাশের জন্য সফট পিঙ্ক বা পিচ টোনের ব্লাশ ভালো লাগবে।
ঠোঁটের সাজেঃ এই বছর মেকাপের ট্রেন্ডে সারা বছর চুটিয়ে রাজত্ব করেছে ম্যাট লিপস্টিক। হাল্কা থেকে গাঢ়, সব রঙেই ছিল ম্যাট বা ভেলভেট ফিনিশিং লিপস্টিকের জয়জয়কার। শীতকালেও এর রেশ থেকে যাবে কিছুটা। তাই ম্যাট এর পাশাপাশি সেমি ম্যাট বা একটু ক্রিমি ধাঁচের লিপস্টিকেই ঠোঁট সাজাতে পারেন উৎসবে আমন্ত্রণে। তবে লিপস্টিক দেওয়ার আগে অবশ্যই লিপবাম দিয়ে নেবেন।
মেকাপের সময় অবশ্যই মনে রাখবেনঃ
- ত্বকের ধরন যেমনই হক, মেকআপ শুরুর আগে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে ভুলবেন না। শুষ্ক ত্বকে একটু ভারি ময়েশ্চারাইজার আর নরমাল ও অয়েলি ত্বকে হাল্কা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
- ডার্ক ব্রাউন, মেরুন, বেরি, প্লাম; এসব রঙ গুলো ঠোঁটের সাজেই বেশি মানানসই। ঠোঁটের এসব শেডের সাথে চোখে পার্ল, স্যাটিন বা শিমারি ফিনিশের আইশ্যাডো দিন।
- স্মোকি আইকে একটু ড্রামাটিক করার জন্য চোখের ওয়াটার লাইনে সাদা কাজল ব্যবহার করতে পারেন। আর নিচের পাতায় ডার্ক ব্রাউন আইশ্যাডো স্মাজ করে দিন। ঘন মাশকারার প্রলেপ দিন দু তিনবার।
- লাল, মেরুন, ম্যাজেন্টা এসব বোল্ড কালার চোখে ব্যবহার করতে যাবেন না যেন। আমাদের দেশের মেয়েদের স্কিন টোনের সাথে এসব কালার চোখের জন্য মানানসই নয়। আই মেকআপে বেছে নিন নেভি ব্লু, গ্রিন, পার্পল শেড।
- স্মোকি আইয়ের সাথে চড়া রঙা লিপস্টিক ইউজ করবেন না। চোখের সাজ ভারি হলে ঠোঁটে নিউট্রাল কালার যেমন লাইট পিঙ্ক সফট ব্রাউন লিপস্টিক দিন। আর গাঢ় রঙে ঠোঁট রাঙ্গাতে চাইলে চোখের জন্য ন্যাচ্রাল কালার আইশ্যাডো বেছে নিন। এতে সাজের ভারসাম্য বজায় থাকবে।
- লিপস্টিকের সাথে ম্যাচিং নেইল পলিশ ইউজ করতে পারেন। অথবা ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউর করতে পারেন।
কোথা থেকে পাবেন? আপনার সুবিধার্থে সাজগোজ পুরো প্রক্রিয়াটি সহজতর করে তুলেছে SAPPHIRE ( সাফায়ার) এর মাধ্যমে। পণ্যটি সম্পর্কে জানতে এবং কিনতে, দেয়া লিঙ্কগুলোতে ক্লিক করুন।
লিখেছেন- চৌধুরী তাহাসিন জামান
ছবি – ফটোগ্রাফারস.ক্যানভেরা.কম