জামের পুষ্টিগুণ | গ্রীষ্মকালীন এই ফল ডায়েট চার্টে কেন রাখবেন?

জামের পুষ্টিগুণ | গ্রীষ্মকালীন এই ফল কেন খাবেন?

jaam

জাম এশিয়ার একটি পরিচিত মৌসুমি ফল। জাম গ্রীষ্মকালীন ফল হলেও এটি জুন, জুলাই বা আগস্ট মাসেও পাওয়া যায়। এটি ভিটামিন, খনিজ পদার্থসমৃদ্ধ এবং এতে অনেক ঔষধি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এর অনন্য রঙ (বেগুনি কালো) এবং মিষ্টি-টক স্বাদের জন্য অনেকের কাছেই এটি প্রিয়। কিন্তু পছন্দের ফল হলেও জামের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে কি আমরা জানি?

এতে ক্যালোরির পরিমাণ খুব কম, কিন্তু পুষ্টিতে ভরপুর। এই ফলের  বীজ, পাতা ও ছালের ঔষধি মূল্য রয়েছে এবং এটি বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাগুলোতে ব্যবহার করা হয়। এই ফল বেশ সহজলভ্য আমাদের দেশে, বিশেষ করে এই সিজনে। এবার চলুন জামের ৮টি স্বাস্থ্য উপকারিতা দেখে নেওয়া যাক।

Sale • Talcum Powder, Body Mist/Spray

    জামের পুষ্টিগুণ

    ১. রক্তে ​​শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে

    ডায়াবেটিস প্রতিরোধে এটি বেশ কার্যকরী। অনেকেই জানেন, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জাম খুবই উপকারী। কারণ, এতে থাকা অ্যান্টি-ডায়াবেটিক প্রোপার্টিজ-এর কারণে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, যা  স্টার্চ ও চিনিকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরে  শক্তির যোগান দেয়। আরেকটি গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে জামের বীজ ৩০%-এর বেশি পরিমাণে রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে পারে।

    ২. হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করে

    জাম ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাসিয়াম ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। ক্যালসিয়াম ও আয়রন হাড়ের শক্তি বৃদ্ধির জন্য খুবই দরকারি উপাদান। হাড় ক্ষয়ে যাওয়া রোগীদের ও বয়স্ক মানুষদের খাবার তালিকায় এই সুস্বাদু ফলটি রাখা উচিত।

    ৩. ইনফেকশন দূর করে

    এতে ম্যালিক অ্যাসিড (malic acid), গ্যালিক অ্যাসিড (galic acid), অক্সালিক অ্যাসিড (oxalic acid) এবং ট্যানিনস (tannins)- এর মতো যৌগ রয়েছে। এতে একইসাথে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটড়ি প্রোপার্টিজ আছে। জাম শরীর থেকে টক্সিন এলিমেন্টস ও ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে।

    8. জন্ডিস ও অ্যানিমিয়া নিরাময় করে

    জামের বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানগুলোর মধ্যে আয়রন একটি। যাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন কম, তাদের জন্য এটি দারুণ উপকারী। জামে থাকা আয়রন অ্যানিমিয়া ও জন্ডিস নিরাময় করে এবং রক্ত স্বল্পতাজনিত সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের জন্য জাম খুব ভালো কাজ করে।

    ৫. ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে

    বেশ কয়েকটি গবেষণায় জামের কেমো প্রোটেক্টিভ (camo protective) বৈশিষ্ট্য নিয়ে ইনভেস্টিগেট হয়েছে। জে. সি. জ্যাগেটিয়া ও তার কলিগদের একটি গবেষণা অনুযায়ী এই ফলের নির্যাসে প্রোটেক্টিভ বৈশিষ্ট্য আছে, যা প্রমাণ করে যে এই ফলের নির্যাস ক্যান্সার কোষকে প্রিভেন্ট করে। এটি ফ্রি রেডিক্যালসকে নিউট্রিলাইজ করতেও ভূমিকা রাখে।

    ৬. ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে

    জাম দেহের ইমিউন সিস্টেম (immune system)-কে আরো শক্তিশালী করে তোলে। এতে থাকা ভিটামিন-সি ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সাধারণ সিজনাল ফ্লু এর বিরুদ্ধে শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে বুস্ট আপ করে। সেই সাথে এটি মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে। এটি স্কিনের জন্যও দারুণ উপকারী।

    ৭. ডায়াবেটিক রোগীদের জটিলতা কমায়

    জামে আছে মিনিমাল গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (glycemic index) যা ডায়াবেটিস-এর জন্য ভালো। ডায়াবেটিস কন্ট্রোল করতে ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধের জন্য এটি বেশ উপকারী, বিভিন্ন গবেষণায় এই তথ্য পাওয়া গেছে। জামের পাতা, ছাল এবং বীজ ডায়াবেটিস-এর জন্য সবচেয়ে উপকারি অংশ। এর মধ্যে জামের বীজ অ্যান্টি-ডায়াবেটিক এলিমেন্ট হিসেবে প্রমাণিত।

    ৮. হার্টের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে

    জামে আছে অ্যালজিনিক অ্যাসিড (alginic acid) বা অ্যালজিট্রিন (algitrin), অ্যান্থোসিয়ানিন (anthocyanin) ও অ্যান্থোসায়ানাডিনস (anthocyanidin)-এর  মতো পুষ্টিসমূহ যা রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং এই যৌগগুলো শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসসমৃদ্ধ যা হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সুস্থ রাখতে অসামান্য অবদান রাখে। এছাড়াও এটি পটাসিয়াম-এর একটি সমৃদ্ধ ভাণ্ডার, যা উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে সাহায্য করে, যা হার্ট অ্যাটাক-এর ঝুঁকি কমায়।

    জামের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে যাদের জানা ছিলো না, তারা আজ বেশ কিছু তথ্য জানতে পারলেন। সবশেষে বলতে চাই, গ্রীষ্মকালীন অন্যান্য ফলগুলোর মতো জাম হয়তো এতোটা জনপ্রিয় নয়, কিন্তু এতে আছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান যা বিভিন্ন রোগ থেকে আমাদের শরীরকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। তাই আমাদের উচিত সহজলভ্য ও সুস্বাদু এই ফলটিকে অবহেলা না করে আমাদের খাদ্য তালিকায় যোগ করা।

     

    ছবি- সাটারস্টক

    140 I like it
    12 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort