যখনই আমাদের মাথায় স্কিন কেয়ারের কথা আসে, তখন একই সাথে চলে আসে না জানি কত নামিদামী ব্রান্ডের ক্রিমের নাম। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন আপনার রান্নাঘর বা ফ্রিজের এককোণে কত কিছুই না অবহেলায় অযত্নে পড়ে আছে যা কিনা হতে পারে আপনার ত্বকের একান্ত বন্ধু। এমনই এক অসাধারণ উপাদান হচ্ছে টকদই। এই পরম উপকারী খাবারটি শুধু খাবার হিসেবেই নয়, বরং বহুকাল আগে থেকেই উপমহাদেশের বিভিন্ন এলাকায় রূপচর্চার একটি জরুরী উপাদান হিসেবে এর ব্যবহার হয়ে আসছে। এটি যেমন সরাসরি ত্বকে লাগানো যায়, তেমনি অন্যান্য উপাদানের সাথে মিশিয়েও ব্যবহার করা যায়। চলুন তাহলে জেনে নেই ত্বকের যত্নে টকদই এর কার্যকরী কিছু মাস্ক সম্পর্কে।
ত্বকের যত্নে টকদই এর মাস্ক
বহুকাল আগে থেকেই উপমহাদেশের বিভিন্ন এলাকায় রূপচর্চার একটি জরুরী উপাদান হিসেবে টকদই ব্যবহৃত হচ্ছে। চলুন জেনে নেই টকদই এর কার্যকরী মাস্কগুলো সম্পর্কে।
১) শুধুই টকদই
যারা রূপচর্চার পেছনে খুব বেশি সময় ব্যয় করতে চান না, অথচ সুস্থ ও সুন্দর ত্বক চান তারা নিশ্চিন্তে নির্ভর করতে পারেন টকদই এর উপর। এটি ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করে এবং সেই সাথে ত্বকের গভীর থেকে ময়লা পরিষ্কার করে। শুধু তাই নয়, এটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজও করে। প্রত্যেকদিন মুখে ও গলায় টকদই লাগান এবং অপেক্ষা করুন ২০ থেকে ২৫ মিনিট। এরপর একটি ভেজা কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে ভালো করে মুখ ও গলা মুছে নিন। যদি আপনার বাইরে যাবার তাড়া থাকে তবে ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে পারেন কারণ টকদই দেয়ার পর আপনার মুখ থেকে বেশ কিছুক্ষণ এর গন্ধ বের হবে। তবে দ্রুত ফল পেতে হলে টকদই দেবার পর এক থেকে দেড় ঘণ্টা রোদে বের না হলেই ভালো। যেহেতু রূপচর্চার এই পদ্ধতিটি অনেক সহজ, আপনি শরীরের অন্যান্য খোলা অংশ যেমন হাত, পায়ের পাতা, ঘাড় ও পিঠের খোলা অংশে এটি ব্যবহার করতে পারেন।
২) টকদই, চন্দন ও গোলাপজল
ত্বক ফর্সাকারী উপাদান হিসেবে চন্দনের কথা আমরা বহু আগে থেকেই শুনে আসছি। রাজা মহারাজার সময় থেকেই এর কদর নারীমহলে চলে আসছে। এই চন্দন ও টকদই এর মিশ্রণ আমাদের মুখের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। দুই চা চামচ চন্দন গুঁড়ার সাথে পরিমাণমতো টকদই মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করতে হবে। এই প্যাক মুখে ও গলায় লাগিয়ে কমপক্ষে ২৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। তারপর ভালো মতো ধুয়ে ফেলতে হবে। এই প্যাকটি মুলত শুষ্ক ও মিশ্র ত্বকের জন্য। যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা এই প্যাকে সাথে সামান্য গোলাপজল মিশিয়ে নেবেন যা আপনাকে দিনভর ফ্রেশ রাখবে।
৩) টকদই, ওটস ও মধু
টকদই এর সাথে ওটস এবং মধু মিশিয়েও চমৎকার প্যাক তৈরি করা যায়। সমপরিমাণ ওটস, মধু এবং টকদই নিয়ে একসাথে একটি পেস্ট তৈরি করুন। আপনার মুখে ও গলায় লাগিয়ে অপেক্ষা করুন ২০ মিনিট। তারপর ভালো করে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি সপ্তাহে দুইদিন ব্যবহার করুন।
৪) টকদই ও টমেটো
যদি আপনার ত্বকে রোদেপোড়া ভাব থাকে, তবে এই প্যাকটি আপনার জন্য ম্যাজিকের মত কাজ করবে। সমপরিমাণ টমেটোর রস ও টকদই মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে নিয়মিত লাগান। কিছুদিন পর আপনি নিজেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন। চাইলে অ্যালোভেরা জেলও মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে দ্রুত রোদেপোড়া ভাব কমে আসবে।
জেনে নিলেন ত্বকের যত্নে টকদই কতোটা উপকারী। এই প্যাকগুলো ব্যবহার করলে আপনি নিজের ত্বকের সঠিক যত্ন নিতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন, আপনার স্কিনে যদি অ্যালার্জির সমস্যা হয়, তাহলে সেই নির্দিষ্ট উপকরণটি ব্যবহার করা বাদ দিতে হবে। নিয়মিত নিজের যত্ন নিন ভালো থাকুন সুস্থ ও সুন্দর থাকুন।
ছবি- সংগৃহীত:আরচিভ১.ইত্তেফাক.কম, সাটারস্টক