ঠোঁটের শুষ্কভাব কিছুতেই কমছে না? সঠিকভাবে কেয়ার না করলে খুব সহজেই লিপস ড্রাই, ডার্ক, চ্যাপড হয়ে যেতে পারে। শুষ্ক ও কালচে ঠোঁট সৌন্দর্য আর আত্মবিশ্বাস দু’টোই কমিয়ে দেয়। সুন্দর, গোলাপি ঠোঁট চেহারার সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ, তাই না? সুন্দর ঠোঁটের মিষ্টি হাসি নজর কাড়ে সবারই। চলুন আজকের ফিচারে জেনে নেই কেন লিপস ডার্ক আর ড্রাই হয়ে যায়, আর সঠিক নিয়মে কীভাবে যত্ন নেওয়া যায় সে সম্পর্কে।
লিপসের স্কিন কেন ডিফারেন্ট?
আমাদের ঠোঁট তুলনামূলক বেশি পাতলা। নরমালি স্কিনের আউটার লেয়ারে stratum corneum থাকে, কিন্তু লিপসে এটি থাকে না। এখানে কোনো সোয়েট গ্ল্যান্ড নেই, ফেইসের অন্যান্য অংশের তুলনায় সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ডও কম পরিমাণে থাকে। তাই এটি হাইড্রেটেড ও ময়েশ্চারাইজড রাখতে হয়। খেয়াল করলে দেখবেন, সাউথ এশিয়া কন্টিনেন্টের মানুষদের লিপস তুলনামূলক ডার্ক, ঠিক যেমন আমাদের স্কিনটোন একটু ব্রাউনিশ। প্রথমেই জানা জরুরি যে কোন অভ্যাসগুলো আমাদের জন্য ক্ষতিকর। চলুন জেনে নেই তাহলে যে শুষ্ক ও কালচে ঠোঁট এর জন্য কোন কোন ফ্যাক্টরগুলো রিলেটেড।
কী কী কারণে এই সমস্যাগুলো হয়?
১. অনেকেরই অভ্যাস আছে জিহ্বা দিয়ে বার বার ঠোঁট ভেজানো। এতে ঠোঁট খুব ফ্রিকোয়েন্টলি ড্রাই হয়ে যায়।
২. সান এক্সপোজার এবং রেগুলার বেসিসে এস পি এফ যুক্ত লিপ কেয়ার প্রোডাক্ট না ব্যবহার করার কারণে লিপ পিগমেন্টেশন দেখা দেয়। জেনেটিক্যালিও অনেকের ঠোঁট একটু ডার্ক হয়ে থাকে৷
৩. বার বার লিপস রাব করা, চ্যাপড লিপস থেকে স্কিন পিল করা – এগুলো অনেকেই করে থাকেন। এগুলোও লিপসের স্কিন ড্যামেজের কারণ হতে পারে।
৪. হার্শ ফিজিক্যাল এক্সফোলিয়েটর ঘন ঘন ব্যবহার করার অভ্যাস থাকলে সেটাও কিন্তু লিপস স্কিনের ক্ষতি করে।
৫. নন ব্র্যান্ডের লিপ টিন্ট, রেপ্লিকা লিপস্টিক, লিপ গ্লস এগুলোতে ক্ষতিকর কেমিক্যাল থাকে যা স্কিন ড্যামেজ করে দিতে পারে। দীর্ঘদিন ব্যবহারে লিপস কালচেও হয়ে যেতে পারে।
৬. স্মোকিং, অ্যালকোহল এগুলোও লিপস পিগমেন্টেশনের কারণ।
৭. ঠোঁটের এরিয়ায় একজিমা, অ্যালার্জির সমস্যা ঠোঁট কালচে ও শুষ্ক করে দিতে পারে।
৮. শরীরে যদি ভিটামিন বি১২ এর ঘাটতি থাকে, তাহলে লিপস পিগমেন্টেশন হতে পারে। আবার ভিটামিন ই, সি এর অভাবে ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যায়।
লিপস কেয়ার
রেগুলার লাইফের কিছু অভ্যাস ও সঠিক উপায়ে যত্ন ধীরে ধীরে ঠোঁটের কালচেভাব ও শুষ্কতা দূর করতে পারে। সফট প্লাম্পি লিপস কে না চায়, বলুন তো? শীত কিংবা গ্রীষ্মে যেকোনো সময়েই সুন্দর ঠোঁট পাওয়ার জন্য এই টিপসগুলো মেনে চলা জরুরি। চলুন দেখে নেই এখনই।
১. ডে টাইমে অন্তত এস পি এফ ১৫ যুক্ত লিপ কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করা উচিত। এখন মার্কেটে অনেক ধরনের এস পি এস যুক্ত লিপবাম, লিপ জেল, লিপ টিন্ট ইত্যাদি রয়েছে৷ টিন্ট ছাড়াও আছে, আপনার পছন্দমতো প্রোডাক্ট আজই যুক্ত করে নিন সেলফ কেয়ার রুটিনে।
২. রেপ্লিকা লিপস্টিক অ্যাপ্লাই করা আজই ব্যবহার বন্ধ করে দিন। যদি এমন হয় যে কোনো লিপস্টিক, লিপ টিন্ট বা অন্য কোনো প্রোডাক্ট ব্যবহারের কারণে ঠোঁটে কালচেভাব দেখা দিচ্ছে বা ইচিনেস হচ্ছে, তাহলে সেগুলো অ্যাভোয়েড করুন।
৩. চ্যাপড লিপসের সল্যুশনে ময়েশ্চারাইজিং লিপবাম ইউজ করুন উইন্টারে। অথবা ঠোঁটে প্রথমে ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করে তারপর ভ্যাসলিন বা লিপবাম দিয়ে সিল করুন। বেশি শুষ্ক মনে হলে রাতের বেলা লিপ স্লিপিং মাস্ক অথবা লিপ অয়েল ইউজ করুন। যাদের এক্সট্রিম ড্রাই লিপস, তারা আরগান অয়েলও ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
৪. উইকলি একদিন লিপস স্ক্রাবিং করুন, এতে লিপসের ডেড সেলস রিমুভ হয়ে যাবে।
৫. স্মোকিং অবশ্যই অ্যাভোয়েড করতে হবে। অতিরিক্ত গরম খাবার, অতিরিক্ত ক্যাফেইন- এগুলো এড়িয়ে চলুন। ফুডচার্টে অরেঞ্জ, টমেটো, দুধ, বাদাম এগুলো ইনক্লুড করুন। এগুলো সফট প্লাম্পি লিপস পেতে ভেতর থেকে পুষ্টি যোগাবে। বেশি করে পানি পান করুন, এতে আপনার স্কিনও হাইড্রেট থাকবে।
ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না
অ্যালার্জি অথবা একজিমা থাকলে বিশেষজ্ঞ এর পরামর্শ নিতে হবে। একজিমা প্রন স্কিন অনেক বেশি ড্রাই হয়ে যাওয়ার টেনডেন্সি থাকে। তাই প্রোপার ট্রিটমেন্ট নেওয়া উচিত।
যেহেতু আমাদের লিপস এরিয়া অনেক বেশি ডেলিকেট, তাই প্রয়োজন একটু এক্সট্রা কেয়ার। শুষ্ক ও কালচে ঠোঁট এর সল্যুশনে কী কী করা উচিত, সেটা জেনে নিয়েছি আজ। আশা করি, আজকের আর্টিকেলটি হেল্পফুল ছিলো। অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
ছবি- সাটারস্টক, সাজগোজ