এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে আমেরিকায় মৃত্যুহার বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে হৃদরোগ বা হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়া। আমাদের দেশেও এই হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। মূলত দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় মানসিক চাপ বৃদ্ধি পাওয়া এবং অধিক মাত্রায় অস্বাস্থ্যকর খাবার (junk-food) গ্রহণ হার্ট অ্যাটাক এর প্রধান কারণ।
[picture]
জীবনযাত্রার মান স্বাস্থ্যসম্মত করার মাধ্যমে এর প্রতিকার করা অনেকাংশে সম্ভব। তাছাড়া কিছু লক্ষণ আছে যা দেখে ধারণা করা সম্ভব এক মাসের মধ্যে হার্ট-অ্যাটাক হতে পারে, এই সব লক্ষণগুলোকে অবশ্যই সতর্কতার লাল চিহ্নিত তালিকায় দিতে হবে।
হার্ট অ্যাটাক এর ৬টি লক্ষণ
১. অধিকমাত্রায় অবসাদ
যখন হৃৎপিণ্ডের ধমনীগুলো সরু হয়ে যায় তখন হৃৎপিণ্ড স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম রক্ত পায়, তাই একে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক গুণ বেশি কাজ করতে হয়। আর এই কারণে শরীর অত্যাধিক ক্লান্ত হয়ে পরে।
২. শ্বাসপ্রশ্বাসে বাঁধা
যখন হৃৎপিণ্ড প্রয়োজনের তুলনায় কম রক্ত পায় তখন ফুসফুসও পরিমিত অক্সিজেন পায় না। এই দুই তন্ত্র একে অন্যের উপর ওতপ্রত ভাবে জড়িত। একে ছাড়া অন্যটি একেবাড়েই কাজ করতে পারে না। তাই শ্বাসপ্রশ্বাসে প্রচন্ড রকম বাঁধার সৃষ্টি হয়, এটি হার্ট অ্যাটাক হবার নিকটতম লক্ষন হতে পারে তাই অতি দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
৩. দুর্বলতা
যখন শরীর হঠাৎ করে অত্যাধিক দুর্বল হয়ে পড়ে, তখন এটার কারণ ধমনী অধিক মাত্রায় সরু হয়ে যাওয়ায় রক্ত-সঞ্চালন ঠিকমত হচ্ছে না। তাই মাংসপেশীতে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। হঠাৎ হওয়া এমন দুর্বলতাকে কখনই তুচ্ছজ্ঞান করা যাবে না, এমতাবস্থায় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
৪. মাথা ঘোরানো ও শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া
রক্ত-সঞ্চালন কমে গেলে মাথার স্নায়ুকেন্দ্রেও এর প্রবাহ ব্যহত হয়। মাথা আমাদের পুরো শরীরের নিয়ন্ত্রক তাই এটা খুবই মারাত্মক; এর ফলে মাথা ঘোরায় এবং শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। এটি কখনই অবহেলা করা ঠিক নয়।
৫. বুকে ব্যথা অথবা চাপ অনুভূত হওয়া
অন্যান্য উপসর্গের সাথে যদি বুকে কোন প্রকার অস্বস্তিদায়ক চাপ অথবা ব্যথা অনুভূত হয় এবং যদি এটা কম পরিমাণেও হয় তাতেও এটি সমস্যার কারণ হতে পারে। এই চাপ হার্ট অ্যাটাক হবার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত ক্রমান্বয়ে বাড়তে পারে।
৬. সর্দি উপসর্গ
ঠান্ডা-সর্দি অথবা ভাইরাস জনিত ফ্লু হতে পারে হার্ট অ্যাটাক সমস্যার পূর্ব লক্ষণ, বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে হৃদক্রিয়ায় সমস্যা জনিত রোগীরা এতে আক্রান্ত হবার কিছুদিন আগে ঠান্ডা-সর্দিতে আক্রান্ত হয়েছে।
হার্ট অ্যাটাক এর লক্ষনসমূহ থাকলে কী করতে হবে
যদি আপনি অথবা আপনার পরিচিত কেউ হয়ে থাকেন উপরোক্ত লক্ষণ সমূহের ভুক্তভোগী, তাহলে আর দেরি না করে অবিলম্বে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। হার্ট অ্যাটাক অথবা হৃদক্রিয়া বন্ধ হওয়া প্রতিরোধ করার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে পূর্ব লক্ষণসমূহ পর্যবেক্ষণের পর ডাক্তারের পরামর্শমত চলা। আর সতর্ক হবার সাথে সাথে জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করতে হবে। যেই সব কারণ এত ভয়াভহ পর্যায়ের দিকে নিয়ে যায়, সেইসব কারণ ত্যাগ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে।
তথ্যসূত্রঃ thespiritscience.net
ছবিঃ সংগৃহীত – স্লিমসেলিবৃটি.কম, ইমেজেসবাজার.কম, সাজগোজ.কম